প্রতীকী ছবি।
দেশের নীতি নির্ধারকদের দাবি যদি মেনে নিতে হয়, তাহলে বলতেই হবে যে, ভবিষ্যতের ভারত বৈদ্যুতিক গাড়িতে চড়বে। ফলে বায়ুদূষণ অনেক কমবে। একই সঙ্গে কমবে শব্দ দূষণ এবং বিদেশ থেকে আমদানি করা তেলের পরিমাণও৷ আর সব কিছু যদি কেন্দ্রীয় সরকারের পেশ করা পরিকল্পনা অনুযায়ী চলে, তবে ভারত হবে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির অন্যতম প্রধান কেন্দ্র, ঠিক যেমন এখন চিনে বহু শিল্প সামগ্রী তৈরি হয়। কিন্তু সেই ভবিষ্যৎ ঠিক কতটা দূরে, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। তবে, ইলেকট্রিক গাড়ির কিছু সুবিধা অবশ্যই রয়েছে। যেমন-
রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কম: একটা পেট্রল বা ডিজেল ইঞ্জিন স্বাভাবিকভাবেই সময়ের সঙ্গে ক্ষয় হয়। একটা পেট্রল বা ডিজেল ইঞ্জিনে প্রায় ২০০০টি চলমান অংশ থাকে। সেখানে, ইলেকট্রিক গাড়িতে চলমান অংশের সংখ্যা মাত্র ২০টি। তাই গাড়ি খারাপ হওয়ার সম্ভাবনাও কম।
তেলের খরচ নেই: পেট্রল-ডিজেলের দাম দিন দিন বেড়েই চলেছে। সে দিকে নজর দিলে, বিদ্যুৎচালিত গাড়িতে খরচ অনেক কম। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, একটি সমশক্তিসম্পন্ন পেট্রল গাড়ির তুলনায় প্রায় ৮০% কম খরচ একটি বিদ্যুৎচালিত গাড়িতে।
আয়করে ছাড়: কোনও সংস্থার নামে যদি ইলেকট্রিক গাড়ি নথিভুক্ত থাকে, তবে আয়করে বড়সড় ছাড় মিলতে পারে।
সহজেই চার্জ: বাড়ির ১৬ অ্যাম্পায়ারের প্লাগে লাগিয়েই চার্জ করা যায়।
পরিবেশ রক্ষায় অবদান: ইলেকট্রিক গাড়ি থেকে কোনওরকম ধোঁয়া বার হয় না। ফলে পরিবেশ দূষণের কোনও সম্ভাবনা নেই।
আবার উল্টো দিকে বেশ কিছু সমস্যাও রয়েছে। ভারতের বাজারে এই মুহূর্তে বৈদ্যুতিক গাড়ি কেনার ক্ষমতাই বেশিরভাগের নেই। সরকার বা গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি আশাও করছে না যে, আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে এই ছবির বড় কোনও পরিবর্তন হবে। বিশ্বের অন্যতম দূষিত দেশে পরিচ্ছন্ন গাড়ির ব্যবহার বাড়াতে সরকারের চার বছর আগে নেওয়া উদ্যোগ এখনও সে ভাবে ফলপ্রসূ হয়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়াতে ১৪০ কোটি ডলার ভর্তুকি দেওয়া হবে। এই ভর্তুকি মূলত দেওয়া হবে পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং প্রচারের জন্য।
আছে, অন্য সমস্যাও। যদি কোনও গ্রাহক কেনার ক্ষমতাও রাখেন, তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় গাড়ি চার্জ দেওয়া। ২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী, সারা দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ দেওয়ার স্টেশন আছে মাত্র ৬৫০টি। সরকারি তথ্য বলছে, বৈদ্যুতিক গাড়ির সবচেয়ে বড় বাজার চিনে এই ধরনের চার্জিং স্টেশন রয়েছে চার লক্ষ ৫৬ হাজার। দেশে চার্জিং স্টেশনের অপ্রতুলতাও এই ধরনের গাড়ি কেনার বড় বাধা।