Rolls-Royce Car

বয়স পেরলো ১১৫, এখনও সমান দাপট রোলস আর রয়েজের সেই গাড়ির

রোলস-রয়েজের প্রথম গাড়িতে ছিল ঘোড়ার গাড়ির আদল।

Advertisement

জয়দীপ সুর

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৭:০৯
Share:

সালটা ১৯০৪। ম্যানচেস্টারের, দ্য মিডল্যান্ড হোটেলে আচমকাই দেখা দুই তরুণের। হেনরি রয়েজ তৈরি করেছিলেন একটি অসাধারণ গাড়ি। হেনরির সেই গাড়ি চালিয়ে মন ভরে গেল চার্লস রোলসের। সেই গাড়ি বিক্রির দায়িত্ব নিলেন চার্লস। বদলে গেল অটোমোবাইলের ইতিহাস। পথ চলা শুরু হল বিখ্যাত গাড়ি প্রস্তুতকারি সংস্থা রোলস-রয়েজের।

Advertisement

আজকের দিনের রোলস-রয়েজ কোম্পানির গাড়ি দেখলে বোধ হয় চমকেই যেতেন চার্লস এবং হেনরি। ১০ হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন দিয়ে শুরু করা রোলস-রয়েজ এখন পৌঁছে গিয়েছে ৫৫৫ হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিনে। পাল্টে গিয়েছে যন্ত্রপাতি, প্রযুক্তি এবং গাড়ি তৈরির পদ্ধতিও। কিন্তু তবু যেন নিজের শিকর ছেড়ে যায়নি রোলস-রয়েজ।

রোলস-রয়েজের প্রথম গাড়িতে ছিল ঘোড়ার গাড়ির আদল। তার কারণ, যিনি এই গাড়ি তৈরি করেছিলেন তিনি ঘোড়ার গাড়ি তৈরি করতেন। হাতে তৈরি গাড়িগুলির এই আদল জনপ্রিয় হয়ে উঠল ধীরে ধীরে। ১৯৬০ সালে এই ডিজাইন বন্ধ হলেও, ২০১৭ সালে তা ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় ‘সোয়েপটেল’-এর মাধ্যমে। রোলস-রয়েজের এক অনন্য সৃষ্টি ‘সোয়েপটেল’। এই গাড়ির মধ্যেই ছিল শ্যাম্পেন কুলার, যা আলাদা ভাবে তৈরি করা হয়েছিল ডম পেরিগনন’৭৩-এর একটি বোতল রাখার জন্য।

Advertisement

হেনরি রয়েজ ছিলেন শিল্পী। যাঁর হাতে অনন্য রূপ পেত গাড়ি। আর চার্লস রোলস ছিলেন এমন এক জহুরী, যিনি এক বার দেখেই বুঝে নিতে পারতেন কোন জিনিসের কেমন কদর হতে পারে। ১০ হর্সপাওয়ারের দু’টি সিলিন্ডার যুক্ত ফ্রেঞ্চ ডেকভিল-কে উন্নত রূপ দিয়ে রয়েজ তৈরি করেছিলেন তাঁর প্রথম গাড়ি। সেই গাড়ি চড়ে ছিলেন রোলস। বুঝে গিয়েছিলেন, এমন এক গাড়ি এসে গিয়েছে যা সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলতে চলেছে। তিনি রাজি হয়ে গিয়েছিলেন হেনরির সমস্ত গাড়ি বিক্রি করার দায়িত্ব নিতে। প্রথম দুই বছরে মাত্র ১০টি গাড়ি তৈরি করেছিলেন তাঁরা। ২০১৮ সালে সারা বিশ্বে ৫০টি দেশে ৪,১০৭টি গাড়ি ডেলিভার করেছে রোলস-রয়েজ কোম্পানি।

আরও পড়ুন: সিডানের বাজারে ফেরত আসছে হন্ডা সিভিকের টেনথ্ ভার্সন

রোলস-রয়েজের এক অনন্য সৃষ্টি ব্ল্যাক ব্যাজ ভ্যারাইটি। কিছু গ্রাহকের অর্ডার অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছিল এই গাড়ি। নজর রাখা হয়েছিল স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে। বিলাস বহুল এই গাড়ি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল বিভিন্ন দেশে। ব্ল্যাক ব্যাজ শুধু গাড়ি নয়, এ যেন এক স্টাইল স্টেটমেন্ট। তিন রকম মডেলে পাওয়া যায় ব্ল্যাক ব্যাজ— রেথ, ঘোস্ট এবং ডন। এই ব্ল্যাক ব্যাজ মডেলগুলি আসল মডেলের এক অনন্য ভ্যারাইটি। ব্ল্যাক ব্যাজের গাড়িগুলির রং কালো এবং অন্য মডেলের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। এই গাড়িগুলির টর্কও অনেক বেশি অন্য মডেলের থেকে। দামও বেশি। ব্ল্যাক ব্যাজ ডনের অনরোড দাম নয় কোটির ওপরে। ব্ল্যাক ব্যাজ ঘোস্টের অনরোড দাম প্রায় আট কোটি টাকা। ব্ল্যাক ব্যাজ রেথের এক্স-শোরুম দাম প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা।

আরও পড়ুন: নতুন মডেলে মন কাড়বে ডুকাতি

রোলস-রয়েজের চিফ এগজিকিউটিভ টরস্টন মুলার-ওতভস জানান, “আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে সব সময় মনে রেখে কাজ করি। ১১৫ বছর ধরে সেটাই করে চলেছি। কিন্তু আমরা এটাও জানি যে আমাদের প্রতিষ্ঠাতারা ছিলেন দূরদর্শী এবং নতুন জিনিস তৈরি করতে ভালবাসতেন। সেই স্পিরিটটাকেই আমরা বয়ে নিয়ে চলেছি। ঐতিহ্য ও নতুনের মিশ্রণই রোলস-রয়েজের শক্তি। তারই উদযাপন করছি আমরা এত বছর ধরে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement