মা হওয়ার সময় এটা খেতে হবে, সেটা খেতে হবে, আয়রন, ফোলিক অ্যাসিডের পরিমাণ যেন ঠিক থাকে। চিকিত্সকরা এই কথাগুলো বলেই থাকেন। শুধু মায়ের নয়, বাবারও যে এই সময় পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন সেই কথা অনেক সময়ই চিকিত্সকরা বলেন না। গবেষকরা জানাচ্ছেন, বাবা হওয়ার সময় পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি সন্তানের ৫ বছর বয়সে সঠিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই গবেষণার জন্য আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন ইউনিভার্সিটি কলেজের স্কুল অব পাবলিক হেলথ, সাইকোথেরাপি অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্সের গবেষক সিলিয়া মেহিয়া প্রথম দফায় ২১৩ জোড়া বাবা-শিশুকে বেছে নেন। এই সময় শিশুদের বয়স ছিল ৫ বছর। দ্বিতীয় দফায় ১৪৮ জোড়া বাবা-শিশুকে বেছে নেন। এই সময় শিশুদের বয়স ছিল ৯ বছর। গর্ভাবস্থায় বাবার ভিটামিন ডি-র পরিমাণের সঙ্গে সন্তানের বৃদ্ধির সম্পর্ক খুঁজতে একটি মডেল সেট করেন মেহিয়ার নেতৃত্বাধীন দল। বাবার বয়স, ভিটামিন ডি ও এনার্জি ইনটেক, উচ্চতা, ওজন এবং মায়ের বয়স, ভিটামিন ডি ও এনার্জি ইনটেক, উচ্চতা, ওজনের সঙ্গে সন্তানের লিঙ্গ, বয়স ও ভিটামিন ডি ইনটেকের তুলনামূলক পরীক্ষা করা হয়।

মডেল অনুযায়ী গবেষণার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, গর্ভাবস্থার প্রথম ট্রিমেস্টারের সময় বাবা পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি গ্রহণ করছেন কিনা তার উপর সন্তানের ৫ বছর বয়সের বৃদ্ধি ও বিকাশ নির্ভর করে। ৯ বছর বয়স হয়ে গেলেই আর সন্তানের বৃদ্ধি বাবার শরীরের ভিটামিন ডি-র পরিমাণের উপর নির্ভরশীল থাকে না। আশ্চর্যজনক ভাবে, শিশুর বৃদ্ধি মাতৃগর্ভে হলেও মায়ের ভিটামিন ডি ইনটেক, গর্ভস্থ এবং জন্মের পর শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের উপর কোনও প্রভাবই ফেলে না। আবার সূর্যের আলোয় আমাদের ত্বকে ভিটামিন ডি উত্পাদন হয়। তাই ৫ বছর বয়সের কোনও বাচ্চা কতটা সময় বাড়ির বাইরে রোদে বা খেলাধুলো করে কাটাচ্ছে তার উপরও নির্ভর করে ভিটামিন ডি পরিমাণ।
মেহিয়া বলেন, ‘‘বাবা কতটা পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছে, কতটা সুস্থ, তার উপর নির্ভর করে বীর্যের স্বাস্থ্য ও মান। সেই কারণেই সন্তানের বৃদ্ধির জন্য বাবার পর্যাপ্ত পুষ্টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’ গর্ভাবস্থায় তাই বাবাদের দুগ্ধজাত খাবার, ফলের রস, সয় মিল্ক, সিরিয়াল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিত্সকরা।
আরও পড়ুন: প্রেগন্যান্সিতে অ্যান্টিবায়োটিক বাড়িয়ে দেয় গর্ভপাতের ঝুঁকি
পর্তুগালের পোর্তোর ইউরোপিয়ান কংগ্রেস অন ওবেসিটিতে এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে।