ফ্ল্যাটের বাইরের দেওয়ালে এক্সটিরিয়ার টাইলসের ব্যবহারও শব্দের অবাধ আসার ক্ষেত্রে কিছুটা বাধার সৃষ্টি করে।
কলকাতা শহরের প্রবল কোলাহলের ফাঁকে বাড়ি ফিরে কিছুটা নিরিবিলি, স্তব্ধতা চাই। নিজের ফ্ল্যাট বা বাড়ি কিংবা কমপ্লেক্সের ভিতরের ফ্ল্যাট, সবজায়গাতেই শহরবাসীর প্রাথমিক পছন্দ এখন এটাই। অন্দরসজ্জাও এই স্তব্ধতার কথা মাথায় রেখেই করতে হয়। যাঁরা শহর থেকে কিছুটা দূরে, কিছুটা নিস্তব্ধ এলাকায় থাকেন তাঁদের সে ভাবে কোনও অসুবিধে নেই। সমস্যা শুধু শহরের কোলাহলময় অঞ্চলগুলোর জন্য।
আজকালকার ফ্ল্যাটগুলোর দেওয়াল বেশ পুরু হয়। অনেক ক্ষেত্রেই প্রায় দশ ইঞ্চির কাছাকাছি। পুরু দেওয়াল ভেদ করে তাপমাত্রা এবং শব্দ দুই-ই আসতে বাধা পায়। ছাদের ভাঁজে থার্মোকল রাখা কিংবা ফলস সিলিং করা যেতে পারে। তাপমাত্রায় সঙ্গে সঙ্গে শব্দও কম আসে কিছুটা। ফ্ল্যাটের বাইরের দেওয়ালে এক্সটিরিয়ার টাইলসের ব্যবহারও শব্দের অবাধ আসার ক্ষেত্রে কিছুটা বাধার সৃষ্টি করে।
এছাড়াও অন্দরসজ্জার কিছু বিষয়ের উপর নজর দিলে শব্দ কম আসবে ঘরে। রাস্তার ধারের ফ্ল্যাটগুলোতে শব্দ আসার পরিমাণ বেশি হয়। সারাক্ষণ গাড়ির আওয়াজ বা মানুষের কোলাহল লেগেই থাকে। রাস্তার ধারের দিকে ব্যালকনি ছেড়ে রেখে, তারপর ঘর হলেসে ঘরে শব্দ কিছুটা কম হয়। কিন্তু যে ফ্ল্যাটগুলোতে ব্যালকনি ছাড়া থাকেনা,সে ফ্ল্যাটে শব্দ সমস্যা থাকেই।
জানালায় ভারী পর্দা লাগিয়ে নিলে বাইরের শব্দ কিছুটা হলেও কম আসে।
রাস্তার দিকের দেওয়াল জুড়ে ওয়ার্ডরোব বানানো যেতে পারে। দেওয়ালে শব্দনিরোধক ব্যবস্থা খরচসাপেক্ষ এবং বেশ কিছুটা জায়গাও নিয়ে নেয়। তাই সেসব না করেও অন্য উপায়েও শব্দ আটকানো যেতে পারে। রাস্তার দিকের দেওয়ালে জানালার অংশটুকু বাদ দিয়ে দেওয়াল জোড়া ক্যাবিনেট বানিয়ে নিলে শব্দ কিছুটা কমে। বাইরে থেকে শব্দের ভিতরে আসার মাঝে কয়েকটা স্তরের বাধা থেকে যায় এতে। এছাড়াও জানালায় ভারী পর্দা লাগিয়ে নেওয়া দরকার। ভারী পর্দা বিশেষভাবে দরকার হয় রাস্তার দিকের ঘরগুলোর জন্যে। দুই বা তিন লেয়ারের পর্দা হলেই ভাল হয়। পর্দা সাধারণত জানালার মাপের হলেও রাস্তার দিকের জানালার পর্দা আরও কিছুটা বড় মাপের করলে ভাল হয়।
আগেকার দিনে বড় বড় ঘর,উঁচু সিলিং,ভারী আসবাবপত্র,মোটা দেওয়াল বাইরের শব্দের প্রবেশ কমিয়ে দিত অনেকটাই। আজকাল সব কিছুই স্লিক হয়েছে। আসবাবপত্র হালকা হয়েছে। শব্দের প্রবেশও তাই বেড়েছে।
জানালার স্লাইডিংয়ের ফ্রেমে আর দেওয়ালের ফাঁকগুলোয় সিলিকন লাগিয়ে নিতে পারেন। ওগুলোয় কখনও কখনও অল্প ফাঁক থেকে যায়। ফলে শব্দ সেই ফাঁক দিয়ে প্রবেশ করে ঘরে। মাঝেমধ্যেই সিলিকন-ভরাট জায়গাটা পরখ করে নিন,দরকারে আবার তা বন্ধ করে দিন।
বারান্দায় ভর্তি গাছ রাখুন,যাতে শব্দ ঘরে কম প্রবেশ করতে পারে।
সুন্দর একটা অন্দরসজ্জার পরে ঘরে যদি বাইরের শব্দের অবাধ প্রবেশ ঘটে, তবে মনঃসংযোগ নষ্ট হয় বইকি। এমনকি, সুন্দর অন্দরমহলের সুমধুর স্বাদটুকুও নেওয়া যায় না। বারান্দা থাকলে বারান্দা ভর্তি গাছ রাখুন। গাছের পাতায় শব্দ আটকে যাবে। আসল কথা হল ঘরের আর বাইরের রাস্তার মধ্যে নানাস্তর তৈরি করে রাখা। যাতে, শব্দ ঘরে কম প্রবেশ করতে পারে।
আলোর ক্ষেত্রেও তাই। দিনের বেলা প্রকৃতির আলো ঘরে এসে পড়ুক। রাতের দিকে আলো জ্বলে উঠবে ঘরের মধ্যে। আলো যেন পরিমিত হয়। একটু বেশি আলো ঘরের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy