‘বাবার মারুতি এইট হান্ড্রেডে চেপে পুজোর সময় পার্কসার্কাস ময়দানে ঠাকুর দেখতে যাওয়া।’
জন্ম আমার কলকাতাতেই। বড় হয়ে ওঠাও। সেন্ট টমাস চার্চ স্কুলের ছাত্রী।ছোট থেকে কলকাতাকে সেভাবে চেনা হয়ে ওঠেনি। স্কুল থেকে বাড়ি আর বাড়ি থেকে স্কুল, এবং পুজোর সময় বাবা-মায়ের সঙ্গে পার্ক সার্কাসের ঠাকুর দেখা, এই ছিল আমার পরিধি।আদতে আমি খুব মুখচোরা ছিলাম। কথা বলতে পছন্দ করতাম না তা নয়, কথা বলতে পারতাম না।
সত্যি বলতে কি, কলকাতাকে চেনা বা জানা দ্বৈপায়নের চোখ দিয়ে। কানপুরের প্রবাসী বাঙালি দ্বৈপায়ন। কিন্তু কলকাতা চষে বেড়িয়েছে। হাঁটতে প্রচণ্ড ভালবাসে। তাই সেটে আলাপ হলেও হাঁটতে হাঁটতেই প্রপোজ, তারপর প্রেম। আমাদের হাঁটা শুরু হত গড়ের মাঠ থেকে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত, সে ভাবেই চিনলাম পার্ক স্ট্রিট। নয়তো আগে যেটা হত, বাবার সঙ্গে গিয়ে ফ্লুরিজের কেক খেয়ে চলে আসতাম।
কলেজ স্ট্রিটে আগেও গিয়েছি, কিন্তু কফি হাউসে বসে কফি খাওয়া, বইপাড়ায় ঘুরে বেড়নো, এ সবের আলাদা স্বাদ ছিল যখন দ্বৈপায়নের সঙ্গে বেড়াতাম। দ্বৈপায়নের প্রেমে পড়ার সঙ্গে জড়িয়ে আছে কলকাতার প্রেমে পড়ারও রহস্য।
‘নর্থের অচেনা অলিগলি থেকে শুরু করে কুমোরটুলি, শোভাবাজার, আহিরিটোলা, বহু বার হেঁটেছি এক সঙ্গে’
রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা আগেও খেয়েছি। কিন্তু ওর সঙ্গে দাঁড়িয়ে খাওয়ার মধ্যে রয়েছে অন্য রকম মজা। নর্থ কলকাতার ছোটখাটো রেস্তরাঁগুলি ছিল আমাদের প্রেম করার ঠিকানা। নর্থের অচেনা অলিগলি থেকে শুরু করে কুমোরটুলি, শোভাবাজার, আহিরিটোলা, বহু বার হেঁটেছি এক সঙ্গে। লঞ্চে চেপে বাগবাজারে নেমে গঙ্গার ঘাটে বসে আড্ডাও মেরেছি। আবার ভিক্টোরিয়ায় বসে প্রেমও করেছি।
দ্বৈপায়ন না থাকলে হয়তো কলকাতাকে চিনতেই পারতাম না। ওর হাত ধরেই কলকাতাকে চেনা। আমি আমার শহরকে ভালবাসি। ভবিষ্যতে যদি অন্য শহরে যেতে হয়, তবে আমি যাব না। কলকাতাতেই আমি ভাল আছি, ভাল থাকব।
কলকাতায় আরও একটা জিনিস দারুণ মজার লাগে। পথেঘাটে ঝগড়া বাধলেই একে অন্যের দিকে তেড়ে এসে বলে, মেরে ফাঁটিয়ে দেব, কিন্তু কেউ কাউকে মারে না। এটা বেশ ভাল লাগে। ঝালমুড়ি, আলুকাবলি, ফুচকা তো আছেই, তার সঙ্গে অ্যাকাডেমির সামনে দাঁড়িয়ে আড্ডা মারতে মারতে চা, ডেভিলখাওয়া...এ সবও খুব ভাল লাগে।
কলকাতার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক স্মৃতি, যার অন্যতম ছোটবেলায় বাবার মারুতি এইট হান্ড্রেডে চেপে পুজোর সময় পার্কসার্কাস ময়দানে ঠাকুর দেখতে যাওয়া। মজার ব্যাপার এই যে সেখানে গিয়ে আমি হজমিগুলি কিনতাম!
ছেলে মেরাকের সঙ্গে পায়েল
সাড়ে ন’মাস হয়ে গেল আমার ছেলে মেরাক হয়েছে। বেশ কয়েক মাস বাড়িতে থাকতে হয়েছে ওর জন্য। এখন টুকটাক বেরনো হয় মেরাককে নিয়ে।
আসলে, কলকাতা আমার কাছে মস্ত বড় এক রঙিন ক্যানভাস... প্রতিদিন তাতে তুলি বোলাই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy