হাউস্টনে হাউডি মোদী অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র
নিশানায় প্রায় ২০ লক্ষ অনাবাসী ভারতীয়ের ভোট। হোয়াইট হাউসের ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাই ‘মোদী-ম্যাজিকে’ ভরসা রেখেই প্রকাশ করলেন তাঁর প্রথম প্রচার ভিডিয়ো। নতুন ভিডিয়ো না বলে, পুরোনো কিছু ভিডিয়োর কোলাজ বলাই ভাল। মোট ১০৭ সেকেন্ডের। যার একটা বড় অংশ জুড়ে রইল ট্রাম্পকে দেওয়া নরেন্দ্র মোদীর দরাজ সার্টিফিকেট আর ট্রাম্পের জবানিতে ‘ভারতপ্রেম’। যত বিতর্কই থাক, আমেরিকায় ভোটের ঠিক মুখে ফের শিরোনামে ‘হাউডি মোদী’ আর ‘নমস্তে ট্রাম্প।’
গত ফেব্রুয়ারিতে ভারতে এসেছিলেন ট্রাম্প। করোনা-ত্রাসের আবহেই। সে বার যে আড়ম্বরে অতিথিকে বরণ করা হয়েছিল, তা নিয়ে তখনই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছিল— নির্ঘাত ভোটের প্রচারে আমদাবাদের ‘নমস্তে ট্রাম্প’ টানবেন দুঁদে রিপাবলিকান নেতা।
বাস্তবে হলও তাই। এ বার বাবার হয়ে প্রচারের দায়িত্ব খোদ জুনিয়র ট্রাম্প। সম্প্রতি তিনিই ‘ফোর মোর ইয়ারস’ নামের ওই প্রচার-ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যা দেখে ফেলেছেন প্রায় এক লক্ষ মানুষ। বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন মুলুকে মোদীর ব্যাপক জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট। প্রচার ভিডিয়োর শুরুতেই মোদীর হিউস্টনের সভার ভিডিয়ো ক্লিপিংস রাখা হয়েছে। যেখানে প্রায় ৫০ হাজার ভারতীয় বংশোদ্ভূত দর্শকের সামনে মোদীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘মিস্টার ট্রাম্পের সম্পর্কে নতুন করে কী আর বলব! প্রতিটি কথোপকথনের মধ্যেই যাঁর নাম উঠে আসেন, তিনি এই মার্কিন প্রেসিডেন্টই।’’
‘হাউডি মোদী’-র পাশাপাশি ভিডিয়ো-কোলাজের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে আমদাবাদের ‘নমস্তে ট্রাম্প’-ও। যেখানে আবার ট্রাম্পকে নিজের পরিবারের অংশ বলে পরিচয় করাতে দেখা গিয়েছিল মোদীকে। সৌজন্য ফিরিয়ে দিয়ে ট্রাম্পও দরাজ শংসাপত্র দিয়েছিলেন— ‘‘ভারত আমেরিকার সবচেয়ে বিশ্বস্ত এবং ভাল বন্ধু। দু’দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক খুবই মধুর।’’ ট্রাম্পের এ বারের প্রচারে যে বার বার ভারত এবং মোদীর প্রসঙ্গ উঠে আসবে, সে ইঙ্গিত অবশ্য আগেই উঠে এসেছিল। রিপাবলিকান শিবিরের পাশাপাশি হোয়াইট হাউসকেও সম্প্রতি ট্রাম্পের হয়ে আলাদা করে ভারতীয়-তাস খেলতে দেখা যায়। দুই নেতা কত বার মুখোমুখি সাক্ষাৎ করেছেন, ফোনে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন— ক্যালেন্ডার ধরে-ধরে হিসেব দিয়েছে ট্রাম্পের ওভাল অফিস। কিন্তু কেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের কাছে জনপ্রিয়তায় কিছুটা হলেও পিছিয়ে থাকা ট্রাম্প এ বার নিজের প্রচারে সব হাতিয়ারেই শান দিতে চাইছেন। আর মোদী যে আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয়দের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়, ২০১৫-য় ম্যাডিসন স্কোয়ার ও গত বছর সিলিকন ভ্যালির অনুষ্ঠানে তার প্রমাণ মিলেছিল।
এ বারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে (অন্তত প্রচারে) ভারত যে একটা বড় ‘ফ্যাক্টর’, তার প্রমাণ মিলেছে রিপাবলিকান প্রচারেও। বাইডেন বার বার বলেছেন, তিনি ক্ষমতায় এলে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। ডেমোক্র্যাট ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিস তো আবার নিজের প্রচারে দক্ষিণ ভারতে কাটানো তাঁর শৈশবের কথাও তুলে এনেছেন সুকৌশলে। গত কাল গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে আমেরিকা-সহ গোটা বিশ্বের হিন্দু ধর্মালম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাইডেন-কমলা। পাশাপাশি, অনাবাসী ভারতীয়দের ভোট টানতে অভিবাসন অস্ত্রেও শান দিচ্ছেন বাইডেনরা। তাঁদের দাবি, ট্রাম্পের অভিবাসন ও ভিসা নীতির জন্যই আমেরিকায় কাজের সুযোগ কমছে ভারতীয়দের। তাই মোদীকে সামনে রেখে ভোট বাক্স ভরানোর ছক কষছেন ট্রাম্প।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy