Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
South Korea Martial Law

সামরিক আইন জারি করেও প্রত্যাহার! বিক্ষোভের মুখে পড়ে পিছু হটতে বাধ্য হল দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার

মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় এক ‘ঐতিহাসিক’ সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন দক্ষিণ কোরিয়া প্রেসিডেন্ট। সারা দেশে সামরিক আইন বা জরুরি অবস্থা জারির মতো সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

South Korean president lifts martial law after few hours of imposed

(বাঁ দিকে) সামরিক আইন প্রত্যাহারের দাবিতে উত্তাল দক্ষিণ কোরিয়া এবং সে দেশের প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। ছবি: রয়টর্স।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:৩২
Share: Save:

দেশ জুড়ে বিক্ষোভ আর চাপের মুখে পড়ে সামরিক আইনের (মার্শাল ’ল) বিষয়ে পিছু হটল দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। কার্যকর করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রত্যাহার করা হল সামরিক আইন। মঙ্গলবার সামরিক আইন চালু করার কথা ঘোষণা করেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। তার পরই শুরু হয় বিক্ষোভ। রাতভর নাটকীয় রাজনৈতিক অস্থিরতার সাক্ষী থাকল পূর্ব এশিয়ার এই দেশ। বিক্ষোভ, প্রতিবাদের মুখে পড়ে পিছু হটতে বাধ্য হয় ইওলের সরকার।

মঙ্গলবার বিকেলে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় এক ‘ঐতিহাসিক’ সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন দক্ষিণ কোরিয়া প্রেসিডেন্ট। সারা দেশে সামরিক আইন বা জরুরি অবস্থা জারির মতো সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কেন এমন সিদ্ধান্ত নিতে হল তাঁকে, তার ব্যাখ্যাও করেছিলেন ইওল। তিনি জানান, উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উনের মদতে ক্ষমতা দখলের ছক কষছে বিরোধীরা। তাঁর ব্যাখ্যা, দেশকে কমিউনিস্ট আগ্রাসন থেকে সুরক্ষা দিতে এবং রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি নির্মূল করতে দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করছেন। এই আইন বাস্তবায়িত করতে দায়িত্ব দেওয়া হয় সে দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল পার্ক আন-সু-কে। সামরিক আইন জারির মধ্যে দিয়ে দেশে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চেয়েছিলেন ইওল।

প্রেসিডেন্টের ভাষণের পরই দক্ষিণ কোরিয়ার দিকে দিকে শুরু হয় বিক্ষোভ। বিরোধীরা তো বটেই, শাসকদলের অনেকেই সামরিক আইনের বিরুদ্ধে পথে নামেন। সে দেশের পার্লামেন্টের বিরোধী সদস্যেরা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভবনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। হাজার হাজার মানুষের জমায়েতে অশান্ত হয়ে ওঠে অ্যাসেম্বলি ভবন চত্বর। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের খণ্ডযুদ্ধ। বিক্ষোভকারীদের রুখতে নামানো হয় সেনাও। ট্যাঙ্কর, সাঁজোয়া যান দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় ভবন। জমায়েত থেকে আইন প্রত্যাহার এবং প্রেসিডেন্টের গ্রেফতারির দাবিতে স্লোগান ওঠে।

মঙ্গলবার বিকেলেই সামরিক আইন জারির বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন বিরোধী সদস্যেরা। সেখানে শুধু বিরোধীরা নয়, শাসকদলের অনেক সদস্যই প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। সামরিক আইন প্রত্যাহারের পক্ষে ভোট দেন ৩০০ সদস্যের মধ্যে ১৯০ জন। সেই তালিকায় ইওলের দলের অনেকে ছিলেন। দক্ষিণ কোরিয়ার আইন অনুযায়ী, যদি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকে আইনের বিপক্ষে, তবে তা প্রত্যাহার করতে হবে। এ হেন পরিস্থিতিতে তড়িঘড়ি মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেই বৈঠকেই সামরিক আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আগামী অর্থবর্ষের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে প্রেসিডেন্ট ইওলের দল পিপলস পাওয়ার পার্টি এবং প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্য়াটিক পার্টির মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। সেই আবহে ইওলের সামরিক আইন জারি দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করে। সামরিক আইন অনুযায়ী, দেশে কোনও রকম রাজনৈতিক এবং সংসদীয় কাজকর্ম করা যাবে না। যে কাউকে প্রয়োজনে পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করা যাবে। ভিন্নমতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ‘ভুয়ো খবর’ ছড়ানো থেকে বিরত থাকার নিদানও ছিল সামরিক আইনে। ১৯৮০ সালের পর এই প্রথম দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করা হয়েছিল। তবে বিরোধিতার ঢেউয়ে জারি করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রত্যাহার করে নিতে হল ইওল সরকারকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Yoon Suk Yeol South Korea Martial Law
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy