Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Sheikh Rehana

দলের নেতৃত্বে না থেকেও ৫০ বছর ধরে দিদি হাসিনার ‘রাজনৈতিক সঙ্গী’ রেহানা! অন্যথা হল না এ বারেও

দুই বোনের একসঙ্গে পথ চলা শুরু হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট। সে দিন ভোরে অভ্যুত্থানকারী সেনাদের গুলিতে খুন হয়েছিলেন তাঁদের পিতা মুজিব-সহ পরিবারের বাকি সকলেই।

হাসিনা এবং রেহানা।

হাসিনা এবং রেহানা। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৪ ২০:২১
Share: Save:

দেশজোড়া জনবিক্ষোভের মধ্যে সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ বায়ুসেনার কপ্টারে ঢাকা ছাড়ার সময় নিঃসঙ্গ ছিলেন না শেখ হাসিনা। সৌজন্যে তাঁর বোন রেহানা। গত পাঁচ দশক ধরে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে, আড়ালে থেকে যিনি দিদির সহযোগীর ভূমিকা পালন করেছেন। হাসিনা অনুপস্থিতিতে সামলেছেন পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া আওয়ামী লীগের হাল।

আশির দশকের গোড়ায় সেনাশাসক হুসেন মহম্মদ এরশাদের জমানায় দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসীন হয়েছিলেন হাসিনা। তখন থেকেই রেহানা তাঁর সঙ্গী। হাসিনা তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে গ্রেফতার হয়ে জেলে গিয়েছিলেন মাত্র এক বারই— ২০০৭ সালে, বাংলাদেশে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। তোলাবাজির মামলায় ওই বছরের ১৬ জুলাই ভোরে তাঁকে তার ধানমন্ডির বাড়ি ‘সুধা সদন’ থেকে গ্রেফতার করে সরাসরি আদালতে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ ও আধাসেনা। হাসিনা তাঁর অনুপস্থিতিতে দলের নেতৃত্বের ভার দিয়েছিলেন রেহানাকে।

বস্তুত, দুই বোনের একসঙ্গে পথ চলা শুরু হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট। সে দিন ভোরে ঢাকার ৩২ নম্বর ধানমন্ডির সরকারি বাসভবনে অভ্যুত্থানকারী সেনাদের গুলিতে নৃংশস ভাবে খুন হয়েছিলেন তাঁদের পিতা মুজিব-সহ পরিবারের অন্য সব পরিজনেরা। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেল, দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামালও নিহত হয়েছিলেন ঘাতকের বুলেটে। জার্মানিতে থাকায় বেঁচে গিয়েছিলেন মুজিবের দুই কন্যা, হাসিনা এবং রেহানা।

পরবর্তী সময় ইন্দিরা গান্ধীর সৌজন্যে দিল্লিতে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছিলেন দুই বোন। ১৯৮১ সালে বিদ্রোহী সেনাদের গুলিতে সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের মৃত্যু এবং জেনারেল এরশাদের ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশে ফিরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন হাসিনা। কিন্তু দিদির পাশে থাকলেও দৈনন্দিন রাজনৈতিক কার্যকলাপ থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন তাঁর বোন। তত দিনে ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়ে গিয়েছেন তিনি। বিয়ে করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শফিক আহমেদ সিদ্দিকের সঙ্গে।

নিয়মিত ভাবে বাংলাদেশ আসা-যাওয়া করলেও তিন সন্তানের জননী রেহানার স্থায়ী ঠিকানা এখনও লন্ডন। তাঁর কন্যা টিউলিপ উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের হ্যামস্টেড-কিলবার্ন পার্লামেন্ট আসনে ২০১৫ সাল থেকে টানা চার বার লেবার পার্টির প্রার্থী হিসাবে জিতেছেন। মুজিবের নাতনি টিউলিপ প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হিসাবে প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন। ব্রিটেনে হাসিনা রাজনতিক আশ্রয় পাবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে। ব্রিটিশ নাগরিক রেহানার সে সমস্যা নেই। কিন্তু লন্ডনে পাড়ি না দিয়ে ভারতেই দিদির পাশে রয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE