Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Russia

Russia-Ukraine Conflict: আত্মনির্ভর কূটনীতি না কি পুতিন-প্রীতি? পশ্চিমী দুনিয়ায় মতে, সমস্যা বাড়বে ভারতের

পর পর তিন বার কোন যুক্তিতে ভারত ভোটদানে বিরত থেকে রাশিয়ায় সুবিধা করে দিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের অনেকেই।

পুতিন এবং মোদী।

পুতিন এবং মোদী। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২২ ১৯:০৭
Share: Save:

প্রথমে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ। তারপর ১৯৩ দেশের সাধারণ সভা। ইউক্রেনে রুশ সেনার হামলার নিন্দা করে রাষ্ট্রপুঞ্জের দুই কক্ষে আনা প্রস্তাব ঘিরে তিন দফার ভোটাভুটিতে বিরত থেকেছে ভারত। নরেন্দ্র মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তকে মস্কো স্বাগত জানালেও ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে আমেরিকা-সহ পশ্চিমের দেশগুলি থেকে। ওই দেশগুলির মানবাধিকার সংগঠন, সংবাদমাধ্যমগুলির একাংশ ইতিমধ্যেই নয়াদিল্লির এমন অবস্থানকে কটাক্ষ করেছে। তাদের মতে, মোদী সরকার ‘আত্মনির্ভর কূটনীতির’ মোড়ক দিতে চাইলেও ভোটদান থেকে ভারতের এই ‘বিরত থাকা’ আদতে ‘রাশিয়ার পক্ষ নেওয়া’।

রাষ্ট্রপুঞ্জে মোদী সরকারের এমন অবস্থানের ‘কারণ’ হিসেবে উঠে আসছে রাশিয়া-ভারত মৈত্রীর দীর্ঘ ইতিহাসের প্রসঙ্গও। ১৯৭১-এর বাংলদেশ যুদ্ধের সময় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর সঙ্গে মস্কোর সামরিক সহায়তা চুক্তি থেকে মোদীর আট বছরের প্রধানমন্ত্রিত্বে প্রায় ২০ বার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রশ্নও উঠে আসছে আলোচনায়। তুলনামূলক আলোচনায় চলে আসছে পুতিন এবং মোদীর ‘উগ্র জাতীয়তাবাদ’ ভিত্তিক রাষ্ট্রপরিচালনা নীতির মিলও।

অবশ্য আন্তর্জাতিক কোনও মঞ্চে এক বারের জন্যও পুতিন সরকারের ইউক্রেন নীতিতে সমর্থন জানায়নি নয়াদিল্লি। বরং রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ এবং সাধারণ সভায় ভোটদানে বিরত থাকার আগে এবং পরে ধারাবাহিক ভাবে রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনে আক্রমণ বন্ধ করা এবং অস্ত্র সংবরণ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। সামরিক সঙ্ঘাতের পথ পরিহার করে কূটনীতির পথে হেঁটে বিবাদ মেটানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি পুতিন।

সেই পরিস্থিতিতে পর পর তিন বার কোন যুক্তিতে ভারত ভোটদানে বিরত থেকে রাশিয়ায় সুবিধা করে দিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। তাঁদের মতে। মোদী সরকারের এই অবস্থান আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়াকে ফের নয়াদিল্লি সম্পর্কে ‘সন্দিগ্ধ’ করে তুলতে পারে। ফের এক বার আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধের কবলে পড়তে পারে সমরাস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম আমদানির প্রক্রিয়া।

অটলবিহারী বাজপেয়ীয় জমানায় পরমাণু পরীক্ষার জেরে নানা আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধের কবলে পড়েছিল ভারত। পরবর্তী পর্যায়ে আমেরিকার সঙ্গে ১-২-৩ পরমাণু চুক্তির জেরে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ), পরমাণু প্রযুক্তি ও জ্বালানি সরবরাহকারী রাষ্ট্রগোষ্ঠী (এনএসজি)-সহ অনেকগুলি নিষেধাজ্ঞার ‘নাগপাশ’ থেকে মুক্তি মিলেছিল। মোদী জমানায় আমেরিকার হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে রাশিয়া থেকে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র কেনা হয়েছে। ইউক্রেন নিয়ে নয়াদিল্লির ভূমিকার জেরে নতুন করে বিধিনিষেধ বলবৎ হলে সামগ্রিক ভাবে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এরই পাশাপাশি, ‘ধাক্কা’ আসতে পারে আন্তর্জাতিক কূটনীতির মঞ্চ থেকেও। গত কয়েক বছরে ‘সীমান্ত পারের সন্ত্রাস’ এবং ‘চিনা আগ্রাসন’ প্রশ্নে ধারাবাহিক ভাবে পশ্চিনী দুনিয়ার সমর্থন পেয়েছে নয়াদিল্লি। কিন্তু ইউক্রেন প্রশ্নে কার্যত ইমরান খান এবং শি চিনফিংয়ের সঙ্গে একই সারিতে অবস্থান মোদীর। ফলে ভবিষ্যতে ইসলামাবাদ এবং বেজিংয়ের সঙ্গে সঙ্ঘাতের ক্ষেত্রে ভারত কতটা সমর্থন পাবে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy