এ ভাবেই বাঙ্কারে কেটেছে ৬০ দিন। ছবি: সংগৃহীত।
যখন তখন বোমাবর্ষণ, ঘন ঘন সাইরেনের শব্দ, উড়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্রের প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দে কানে তালা লেগে যাওয়ার পরিস্থিতি। সেই সঙ্গে জল, খাবার এমনকি, অক্সিজেনেরও অভাব। এ ভাবেই গত দু’মাস কাটিয়েছেন তাঁরা। উদ্ধারের পর তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন, রুশ হামলা এড়াতে মারিয়ুপোলের বাঙ্কারে আশ্রয় নেওয়া কয়েকশো ইউক্রেনীয় নাগরিকেরা।
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দু’মাস ধরে তাঁরা আটকে ছিলেন ইউক্রেনের বন্দর-শহর মারিয়ুপোলের অদূরের আঝবস্তল ইস্পাত কারখানায়। রুশ বোমাবর্ষণ এড়াতে আশ্রয় নিয়েছিলেন কয়েক বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত কারখানার নীচের বাঙ্কারগুলিতে। চলতি সপ্তাহেই রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের দল তাঁদের উদ্ধার করে।
মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকেই দক্ষিণ ইউক্রেনের মারিয়ুপোলে রুশ বাহিনীর আক্রমণের তীব্রতা বেড়েছিল। সে সময়ই বাবা-মায়ে আর শিশুসন্তানকে নিয়ে আঝবস্তল ইস্পাত কারখানায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলেন ২৪ বছরের অ্যানা জেইৎসেভ। উদ্ধারের পর জানিয়েছেন, দু’মাসে ২০ পাউন্ড ওজন কমে গিয়েছে তাঁর। কিছুটা খাদ্যাভাব আর বেশ কিছুটা উদ্বেগের কারণে।
অ্যানা জানিয়েছেন, কারখানার নীচে টানেলের ধারের ছোট ছোট খুপরি ঘরগুলিতে তাঁদের মতো বহু পরিবার আটকে ছিল। চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। আর সেই সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা। তারই মধ্যে কোনও মতে বেঁচে থাকা।
রুশ আক্রমণের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউক্রেন ফৌজের পাঠানো খাদ্য সরবারাহও অনিয়মিত হয়ে পড়ে। অ্যানা বলেছেন, ‘‘খাবারের ভাগ নিয়ে প্রায়শই নিজেদের মধ্যে বিবাদ হত নিজেদের মধ্যেই। বাঙ্কারে জলের সরবরাহ ছিল না। বৃষ্টির জল আর তুষারপাতই ছিল ভরসা।’’ প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় জমে যাওয়া বরফ গলিয়ে জলের সংস্থান করতেন তাঁরা। তাঁর কথায়, ‘‘জীবনের উপর বিশ্বাসটাই ক্রমশ চলে যাচ্ছিল। ভেবেছিলাম আর কোনও দিন খোলা আকাশের নীচে দাঁড়াতে পারব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy