Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Pakistan Economic Crisis

আটা ৮০০ টাকা কেজি, একটি রুটি ২৫ টাকা! আবার পাকিস্তানের ‘গলার কাঁটা’ হয়ে গিয়েছে মূল্যবৃদ্ধি

সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, যেখানে কয়েক দিন আগে পর্যন্ত করাচিতে এক কেজি আটা ২৩০ পাকিস্তানি টাকায় পাওয়া যেত, এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮০০ পাকিস্তানি টাকা।

খাবারের জন্য হুড়োহুড়ি পড়েছে পাকিস্তানের মানুষের মধ্যে।

খাবারের জন্য হুড়োহুড়ি পড়েছে পাকিস্তানের মানুষের মধ্যে। —ফাইল চিত্র ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৪ ১৫:৩৬
Share: Save:

মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আবার জেরবার পাকিস্তান। ভারতের প্রতিবেশী দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থার আবারও অবনতি শুরু হয়েছে। আকাশ ছুঁয়েছে জিনিসপত্রের দাম। সব থেকে বেশি প্রভাব পড়েছে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, আটা-রুটির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের।

সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, যেখানে কয়েক দিন আগে পর্যন্ত করাচিতে এক কেজি আটা ২৩০ পাকিস্তানি টাকায় পাওয়া যেত, এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮০০ পাকিস্তানি টাকা। ভারতীয় মুদ্রায় ২৩৮ টাকা। শুধু তা-ই নয়, সেই শহরে এক একটি রুটি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায় (পাকিস্তানি মুদ্রায়)।

পাক সংবাদমাধ্যম ‘ডন’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে ‘লড়াই করছে’ পাকিস্তান। সে দেশে গত কয়েক মাসে মূল্যবৃদ্ধির হার ৩৮ শতাংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ। খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৪৮ শতাংশ। পাকিস্তান পরিসংখ্যান ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী, গত এক বছরে সে দেশে খাদ্য, বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে রান্নার গ্যাস— হু হু করে বৃদ্ধি পেয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, এক বছরে পাকিস্তানের শহরাঞ্চলগুলিতে টম্যাটোর দাম ১৮৮ শতাংশ, পেঁয়াজের দাম ৮৪ শতাংশ, সব্জির দাম ৫৫ শতাংশ, মশলার দাম ৪৯ শতাংশ, চিনির দাম ৩৭ শতাংশ এবং আলুর দাম ৩৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৩১৯ শতাংশ। বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৭৩ শতাংশ। শহরাঞ্চলের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বহু গুণ।

কিন্তু কেন এই অবস্থা হল পাক অর্থনীতির? কেনই বা মূল্যবৃদ্ধি ‘গলার কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তানের? বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের উপর বিপুল ঋণের বোঝাই মূলত এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডার (আইএমএফ)-ও পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে বেশ কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছে। আইএমএফের শর্তের কারণে পাকিস্তান সরকার ভর্তুকি দেওয়া বন্ধ করেছে। যার ফলে খাদ্যসামগ্রী থেকে মৌলিক চাহিদা, সব কিছুই ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে সে দেশে।

তবে এই পরিস্থিতি নতুন নয়। গত দু’বছর ধরে মূল্যবৃদ্ধির জন্য বারে বারে নাজেহাল অবস্থা হয়েছে পাক নাগরিকদের। খাবার নিয়ে সে দেশের মানুষকে প্রকাশ্য রাস্তায় মারপিটও করতে দেখা গিয়েছে একাধিক বার।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি নিজেদের দেশের দুরবস্থার কথা বলতে গিয়ে ভারতের উদাহরণ টেনে এনেছেন পাকিস্তানের এক শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক। পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়িয়ে সম্প্রতি সুদীর্ঘ ভাষণ দেন জমিয়তে উলেমা-ই-ফজ়ল (জেইউআই-এফ)-এর প্রধান মওলানা ফজ়লুর রহমান। কট্টরপন্থী বলেই পরিচিত এই নেতা পাকিস্তানের শাহবাজ় শরিফের সরকারকে আক্রমণ করে বলেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের তুলনা করে দেখুন। আজ ওরা (ভারত) সুপার পাওয়ার (বড় শক্তি) হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। আর আমরা দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচতে ভিক্ষা করছি।” মনে করা হচ্ছে, অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং মূল্যবৃদ্ধি নিয়েই পাক সরকারকে আক্রমণ করেছেন ফজ়লুর।

অন্য বিষয়গুলি:

Pakistan Price rise Economic Crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE