প্রতীকী ছবি।
দ্য গাম্বিয়ার পরে এ বার ইন্দোনেশিয়া। আফ্রিকার পরে কিডনির অসুখে সম্প্রতি বহু শিশুমৃত্যুর খবর এসেছে এশিয়ার এই দেশ থেকেও।
কিছু দিন আগেই জ্বর বা কাশির সিরাপ খেয়ে দ্য গাম্বিয়ায় অন্তত ৭০টি শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) তরফে জানানো হয়েছিল, ভারতের নয়াদিল্লির একটি সংস্থার বানানো চারটি কাফ সিরাপ থেকে দ্য গাম্বিয়ায় শিশুদের পর পর মৃত্যুর ঘটনার যোগ পাওয়া গিয়েছে। গুরুতর এই অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে ভারত সরকার। তার পরে আজই ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে জানায়, গত জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত কিডনির অসুখে (ডাক্তারি পরিভাষায় অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরি বা একেআই) দেশে মোট ৭৪টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বেসরকারি মতে অবশ্য সংখ্যাটা ৯৯।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, শিশুমৃত্যুর এই হার বেড়েছে গত অগস্ট থেকে। কিডনির অসুখে কম-বেশি শিশুমৃত্যুর ঘটনা ইন্দোনেশিয়ায় নতুন নয়। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানাচ্ছে, এ বছর সেই সংখ্যাটা এক লাফে অনেকটা বেড়েছে। আগে যেখানে মাসে এক থেকে দু’টি শিশুর একেআই-এর চিকিৎসা করতে হত, সেখানে এখন শুধু রাজধানী জাকার্তাতেই এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা বেড়েছে ৬৫ শতাংশ। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিক সিতি নাদিয়া তারমিজ়ি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত একেআই-তে ভুগছে এমন ১৮৯টি শিশুর সন্ধান মিলেছে দেশে। যার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৭৪টি শিশুর। এদের অধিকাংশেরই বয়স পাঁচ বছরের নীচে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে দেখে গত সপ্তাহে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
মূলত প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়েই এই শিশুদেরও মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এই ঘটনার সঙ্গে দ্য গাম্বিয়ায় ব্যবহৃত ওষুধগুলির সম্পর্ক নেই বলেই দাবি করা হয়েছে। কারণ যে চারটি সিরাপ থেকে ওই দেশে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে, সেই একই সিরাপ ইন্দোনেশিয়ায় পাওয়া যায় না বলে জানিয়েছে সে দেশের ওষুধ ও খাদ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে যে উপকরণ দিয়ে দ্য গাম্বিয়ার ওষুধগুলি তৈরি, শিশুদের সিরাপে সেগুলি ব্যবহারের উপরে অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। সেই সঙ্গে সাবধানতা হিসেবে সাময়িক ভাবে দেশের সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীকে অসুস্থ শিশুদের কাফ সিরাপ বা যে কোনও তরল ওষুধ দিতে বারণ করা হয়েছে। প্রেসক্রিপশন ছাড়া সিরাপের কেনা-বেচাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে সাময়িক ভাবে। গত কাল স্বাস্থ্য মন্ত্রক সব হাসপাতালকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, মৃত শিশুদের ব্যবহৃত ওষুধগুলি যেন সংগ্রহ করা হয়। যাতে সেগুলির টক্সিকোলজি পরীক্ষা করা যায়।
ইন্দোনেশিয়ার কিছু শিশু চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞ, স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কী কারণে বা কোন ওষুধ খেয়ে কিডনির অসুখে এতগুলি শিশু মারা গেল, তা খতিয়ে দেখছে কমিটি। হু-র যে সকল আধিকারিক দ্য গাম্বিয়ার ঘটনা তদন্ত করছেন, তাঁদের সঙ্গেও ইন্দোনেশিয়ার সরকারের তরফে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy