পাক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহার বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন বলে জল্পনা ছড়িয়েছে। পাক পঞ্জাবের শহর ভওয়ালপুরের অদূরে সোমবার ভোরে পর পর কয়েকটি বিস্ফোরণ হয়। হামলার শিকার হয় মাসুদের গাড়িও। তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে কয়েকটি সংবাদভিত্তিক সমাজমাধ্যম জানিয়েছে। তবে পাক সেনা বা সরকার এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।
প্রকাশিত কয়েকটি খবরে জানানো হয়েছে, সোমবারে ভোরে ভওয়ালপুরের মসজিদ থেকে ফেরার পথে অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীদের নিশানা হন মাসুদ। তাঁর কনভয় লক্ষ্য করে পর পর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ঘটনাচক্রে, গত কয়েক মাসে পাকিস্তানে একাধিক ভারত বিরোধী কাশ্মীরি এবং খলিস্তানপন্থী জঙ্গি নেতা খুন হয়েছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-এর দিকে নিশানা করা হয়েছে। নভেম্বরে করাচিতে খুন হয়েছিলেন জইশের প্রথম সারির নেতা মৌলানা রহিমউল্লা।
আরও পড়ুন:
নব্বইয়ের দশকে কাশ্মীর উপত্যকায় অনুপ্রবেশ করে ভারতীয় সেনার হাতে ধরা পড়েছিলেন মাসুদ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় কন্দহর বিমান ছিনতাইকাণ্ডে জঙ্গিদের শর্ত মেনে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। শুধু কন্দহর বিমান ছিনতাইকাণ্ড নয়, ২০০১-এর সংসদ হামলা এবং ২০১৬-য় পঞ্জাবের পঠানকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার ঘাঁটিতে ফিদায়েঁ হানা, ২০১৯-এ পুলওয়ামা হামলার ঘটনাতেও অন্যতম অভিযুক্ত মাসুদ এবং তাঁর ভাই রউফ।
আরও পড়ুন:
২০০১ সাল থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ‘নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের তালিকা’য় রয়েছে জইশ। লস্কর-ই-তইবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ মহম্মদ সঈদের মতোই ২০১৯ থেকে মাসুদের মাথায় উপরেও রয়েছে ‘জঙ্গি’ তকমা। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা জারি থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তান সরকারের সাহায্য, মাদকের ব্যবসা আর হাওয়ালা কারবারের পাশাপাশি, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং স্থানীয় ট্রাস্টের নামে ধারাবাহিক ভাবে জেহাদের উদ্দেশ্যে টাকা তোলে জইশ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ‘চেন’ চালায় তারা। পাক সরকারের মদতে সেখানে জেহাদি হওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। চালায় বেনামি হাসপাতালও। তার মৃত্যু ভারতের পক্ষে ‘বড় স্বস্তি’ বলেই মনে করা হচ্ছে।