গত কয়েক দিন ধরে গাজ়া ভূখণ্ডে আকাশ হামলা তীব্র থেকে তীব্রতর করেছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। মুখে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকার বেছে বেছে হামাস ঘাঁটিগুলিকে নিশানা করার কথা বলেলও বাস্তব চিত্রটা কিন্তু সম্পূর্ণ উল্টো। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া তুমুল বোমাবর্ষণে আসলে নিহত হয়েছে প্যালেস্টাইনের অসংখ্য শিশু। নিহতদের তালিকায় এর পরেই রয়েছেন মহিলা ও বয়স্করা। ইজ়রায়েলি হামলায় মাত্র চার দিনেই গাজ়া ভূখণ্ডে নিহতের সংখ্যা ৬০০ পেরিয়েছে। এর মধ্যেই নতুন করে হুঙ্কার দিয়েছেন ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজ়রায়েল কাৎজ়। হামাসকে নিশানা করে তিনি সরাসরিই হুঁশিয়ারি দিয়ে আজ বলেছেন, তাদের হাতে বন্দি থাকা ইজ়রায়েলি নাগরিকদের মুক্তি না দিলে এ বার গাজ়া ভূখণ্ড ও তার আশপাশের এলাকা অধিগ্রহণ করতে শুরু করবে তাঁদের সামরিক বাহিনী ইজ়রায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)।
গত ১৯ জানুয়ারি প্রথম দফায় সংঘর্ষবিরতি শুরু হয়েছিল ইজ়রায়েল এবং হামাসের মধ্যে। বেশ কয়েক সপ্তাহ হল সেই সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। তার পর থেকে দ্বিতীয় দফার চুক্তি নিয়ে নীরব নেতানিয়াহু সরকার। অথচ তারা ইজ়রায়েলি পণবন্দিদের মুক্তির বিষয়ে হামাসের উপরে চাপ বজায় রেখেছে। উল্টো দিকে, সংঘর্ষবিরতি চুক্তি ছাড়া বন্দি মুক্তি নিয়ে এগোতে নারাজ হামাস। এই পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার থেকে গাজ়া ভূখণ্ডের নানা প্রান্তে তীব্র আকাশ হামলা শুরু করেছে আইডিএফ। সেই হামলাকে সমর্থন করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। কাটজ় জানিয়েছেন, আইডিএফ-কে তিনি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, হামাস ইজ়রায়েলি বন্দিদের মুক্তি দিতে শুরু না করলে গাজ়ার আশপাশের এলাকা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে সেই এলাকা যেন দ্রুত অধিগ্রহণ করতে শুরু করে তারা। কাটজ়ের হুঁশিয়ারি, ‘‘হামাসকে শুধু এটুকুই বলার যে, তারা যত বন্দিদের মুক্তি দিতে দেরি করবে, তত দ্রুত গাজ়ায় তারা জমি হারাবে।’’ এমনকি যুদ্ধ থামলেও গাজ়ায় তাদের বাহিনী উপস্থিত থাকবে বলে আগাম জানিয়ে রেখেছেন কাটজ়।
এত হুঁশিয়ারির মধ্যেও গাজ়ায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি জানাচ্ছে, গাজ়া ভূখণ্ডের একমাত্র ক্যানসার চিকিৎসার হাসপাতালটিতেও বোমাবর্ষণ করেছে ইজ়রায়েল। রমজ়ান মাস চলাকালীন খাদ্যের সঙ্কটও তীব্র হচ্ছে সেখানে। রাষ্ট্রপুঞ্জের কর্মীরা আজ জানিয়েছেন, ত্রাণ সরবরাহের জন্য আর মাত্র ছ’দিনের আটা মজুত রয়েছে তাঁদের কাছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)