জো বাইডেন। —ফাইল ছবি।
আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব হয়তো গ্রহণ করতে চলেছে ইজ়রায়েল, তবে শর্তসাপেক্ষে। এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু ঘোষণা করেনি তারা। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর এক সহযোগী সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁদের ভাবনাচিন্তার কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘নেতানিয়াহুর মতে, বাইডেনের প্রস্তাবে ‘খামতি’ রয়েছে। ওতে সংশোধন প্রয়োজন।’’
একটি ব্রিটিশ সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহুর মুখ্য বিদেশনীতি উপদেষ্টা ওফির ফক বলেছেন, ‘‘বাইডেন যে প্রস্তাব দিয়েছেন, সেই চুক্তিতে আমরা রাজি— তবে এটা ভাল চুক্তি নয়। কিন্তু আমরা বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে চাই। সবাইকে।’’ ফক বলেছেন, ‘‘আরও অনেক বিষয় নিয়ে ভাবার দরকার রয়েছে। বন্দিদের মুক্তি ও হামাস নামক গণহত্যাকারী সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে ধ্বংস করার লক্ষ্য থেকে আমরা সরব না।’’ তবে এ সবের পাশাপাশি বাইডেনকে খোঁচা দিতেও ভোলেননি ফক। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও কারণ ছাড়াই একটা রাজনৈতিক বক্তৃতা দিয়ে ফেলেছেন বাইডেন।’’
আমেরিকান প্রেসিডেন্ট গত ৩১ মে গাজ়ায় যুদ্ধ বন্ধের আবেদন জানিয়ে তিন দফা প্রস্তাব দেন ইজ়রায়েলকে। তাতে বলা হয়, প্রথম দফায় অবিলম্বে ৬ সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হোক। এই সময়ে দু’পক্ষই যথেষ্ট সংখ্যক বন্দি বিনিময় করবে। পরবর্তী দুই ধাপে, ধীরে ধীরে যুদ্ধবিরতি দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করা হবে। ক্রমে পাকাপাকি যুদ্ধ বন্ধ, গাজ়ার পুনর্নির্মাণ ও সেখান থেকে সম্পূর্ণ ভাবে ইজ়রায়েলি সেনা প্রত্যাহার। বাইডেনের প্রস্তাবকে সঙ্গে সঙ্গেই স্বাগত জানিয়েছে হামাস। কিন্তু ইজ়রায়েল গোড়ায় কোনও সাড়াশব্দ করেনি। আজ তাদের দিক থেকে সদর্থক ইঙ্গিত মিললেও তারা ওই প্রস্তাবনায় ঠিক কী ‘সংশোধন’ চায়, সেটা স্পষ্ট করেনি ইজ়রায়েল। শোনা গিয়েছে নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও পুরোপুরি যুদ্ধ বন্ধে রাজি নন। তবে এটা পরিষ্কার, প্রবল চাপের মুখে বাইডেনের প্রস্তাব কার্যত হজম করতে হচ্ছে ইজ়রায়েল সরকারকে। যদিও এ বিষয়ে তাদের মন্ত্রিসভায় দ্বন্দ্ব রয়েছে। ইজ়রায়েলি জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির রীতিমতো হুমকির সুরে বলেছেন, নেতানিয়াহু যদি বাইডেনের দেওয়া প্রস্তাব মেনে নেন ও গাজ়ার সঙ্গে চুক্তি করেন, তা হলে জোট-সরকার ভেঙে যাবে। তাঁর বক্তব্য, হামাসকে নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত যুদ্ধ থামানো যাবে না। ‘জুইশ পাওয়ার পার্টি’-র কট্টরপন্থী নেতা বেন-গভিরের কথায়, ‘‘এই প্রস্তাব বেপরোয়া। এতে সন্ত্রাসেরই জিত হয়ে যাবে। ইজ়রায়েলের নিরাপত্তার জন্যেও বিপজ্জনক।’’
আমেরিকা অবশ্য আশাবাদী, ইজ়রায়েল তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করবে। তাদের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কার্বি জানিয়েছেন, হামাস মৌখিক ভাবে রাজি হলেও চূড়ান্ত জবাব দেয়নি। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের আশা দু’পক্ষই সহমত হবে। যত
দ্রুত সম্ভব প্রথম দফার যুদ্ধবিরতি শুরু করা যাবে।’’
গাজ়ার পরিস্থিতি আজও ভাল নয়। বিশেষ করে রাফার অবস্থা সঙ্গীন। রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে জানানো হয়েছে, গত কয়েক দিন ধরে টানা বিধ্বংসী হামলার জেরে লোকজন রাফা ছেড়ে যে যে-দিকে পারছেন পালাচ্ছেন। রাফার ৩৬টি শরণার্থী শিবির এখন সম্পূর্ণ ফাঁকা। উত্তর গাজ়া থেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে মানুষ দক্ষিণে রাফায় এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ফের তাঁরা খোলা আকাশের নীচে। কমপক্ষে ১৭ লক্ষ মানুষ এখন খান ইউনিস ও সেন্ট্রাল গাজ়ায় পথে ঠাঁই নিয়েছেন।
সংবাদ সংস্থা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy