বরফ গলার পর উপগ্রহ থেকে এই দৃশ্যই ধরা পড়েছে। ছবি: রয়টার্স।
মেরু বলয়ের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখা দিয়েছে আগেই। তার মধ্যে গ্রিনল্যান্ডে ২২ গিগাটন (১০০ কোটি মেট্রিক টন) বরফের চাদর গলে জল হয়ে গেল। বুধবার তাপমাত্রা অনেকটা উপরে চলে যাওয়াতেই এই বিপত্তি বলে জানিয়েছেন ডেনমার্কের জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। ক্ষয়ক্ষতির দিক থেকে ১৯৫০ সালের পর এটাই তৃতীয় সর্বোচ্চ বরফের ক্ষয় বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তাপমাত্রা না কমলে আগামী দিনে এর চেয়েও বড় ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
ডেনমার্কের মেরুবলয় নিয়ে গবেষণাকারী সংস্থা বৃহস্পতিবার বরফের চাদর গলে যাওয়ার বিষয়টি সামনে আনে। তারা জানায়, পরিমাণের দিক থেকে ২০১৯-এর মতো না হলেও, গ্রিনল্যান্ডে এত ভয়ঙ্কর ভাবে বরফ গলেছে, যাতে আমেরিকার ফ্লোরিডা জুড়ে ২ ইঞ্চি পর্যন্ত জল জমে যেতে পারে। ২০১৯ সালে এর চেয়ে বেশি পরিমাণ বরফ গললেও বুধবার যে পরিমাণ বরফ গলেছে তা তৃতীয় দৈনিক সর্বোচ্চ এবং এর ফলে অনেক দূর পর্যন্ত এলাকায় প্রভাব পড়েছে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।
বরফ গলে যাওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপারনিকাস সেন্টিনেল-২ উপগ্রহের তোলা যে ছবি সামনে এসেছে তাতে দেখা গিয়েছে, মেরু সাগরের তীরের বিস্তৃত এলাকার মাটি বরফের চাদরের নীচ থেকে উন্মুক্ত হয়ে উঠে এসেছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বুধবার যে ২২ গিগাটন বরফের চাদর গলেছে তার মধ্যে ১২ গিগাটন বরফ গলে সাগরের জলে মিশে গিয়েছে। তুষারপাতের ফলে বাকি ১০ গিগাটন শুষে নিয়েছে মাটির উপরের বরফের পুরু স্তর। ধীরে ধীরে ফের জল জমে বরফ হয়ে যাবে। তবে তাপমাত্রা লাগাতার বৃদ্ধি পাওয়ায় যে ভাবে উষ্ণ বাতাস মেরুবলয়ে অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে তাতে আগামী দিনে আরও বড় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা।
Massive melting event in Greenland. While not as extreme as in 2019 in terms of gigatons (left image - but still would be enough to cover Florida with two inches of water), the area over which melting takes place (right image) is even a bit larger than two years ago. pic.twitter.com/rEeDIlYTA7
— Polar Portal (@PolarPortal) July 29, 2021
১৯৯০ থেকেই মেরুবলয়ে বরফ গলতে শুরু করে। শুরুতে তা চোখে পড়ার মতো না হলেও যত সময় এগিয়েছে ততই দ্রুত গতিতে বরফ গলতে শুরু করেছে। ২০০০ সালে যে গতিতে বরফ গলছিল বর্তমানে তার চয়ে চার গুণ বেশি দ্রুত গতিতে বরফ গলছে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। অ্যান্টার্কটিকাকে বাদ দিলে গ্রিনল্যান্ডেই স্থায়ী বরফের চাদর রয়েছে। যে কারণে গ্রিনল্যান্ডই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিষ্টি জলের আধার। আন্টার্কটিকা এবং গ্রিনল্যান্ডেই বিশ্বের ৭০ শতাংশ মিষ্টি জল সঞ্চিত রয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে গ্রিনল্যান্ডের বরফের চাদল গলে গেল গোটা বিশ্বে সমুদ্রের জলস্তর ২০ থেকে ২৩ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy