Advertisement
০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
New Delhi-Dhaka

সংখ্যালঘু সুরক্ষা: ঢাকার সক্রিয়তা চায় দিল্লি

অগস্ট মাস থেকে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সে দেশে, তাকে সংশোধন করে আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে তৎপর হোক বাংলাদেশের সরকার।

(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী ও মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী ও মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৫:৪৯
Share: Save:

ভারতের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা প্রশমিত করে শান্তি ফেরানোর বার্তা দিয়েছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকূল আলমের বার্তার পরে সাউথ ব্লক সূত্রের বক্তব্য, শুধু ‘মুখের কথায়’ তো কাজ হয় না। অগস্ট মাস থেকে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সে দেশে, তাকে সংশোধন করে আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে তৎপর হোক বাংলাদেশের সরকার। সে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় নিজের দায়িত্ব পালন করুক।

এই পরিপ্রেক্ষিতে সাউথ ব্লক সূত্রের বক্তব্য, ৫ অগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যে সব হিংসার ঘটনা ঘটেছে তার কোনও সরকারি তদন্ত এখনও হয়নি। অবিলম্বে সেই তদন্তের কাজ শুরু করা হোক। সেটা না করে মুহাম্মদ ইউনূস এবং তাঁর উপদেষ্টারা বরং এটা প্রমাণ করতেই ব্যস্ত যে এই ধরনের কোনও ঘটনা আদৌ ঘটেইনি, সবটাই ভারতীয় গণমাধ্যমের বানানো বিষয়। অর্থাৎ তাঁরা সম্পূর্ণ অস্বীকারের অবস্থান নিয়েছেন।

ইউনূস সরকারের বক্তব্য, বিচ্ছিন্ন ভাবে হিংসার ঘটনা ঘটেছে কিন্তু তা ধর্মীয় বিদ্বেষ বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে আক্রমণ নয় বরং অনেকটাই ‘রাজনৈতিক’। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের ‘অপশাসন এবং অত্যাচারে’ জর্জরিত মানুষ বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উপরে হামলা করেছেন। আক্রান্তদের কেউ কেউ ঘটনাচক্রে হিন্দু, কারণ আওয়ামী লীগের হিন্দু সমর্থনভিত্তি রয়েছে। সাউথ ব্লক সূত্র এই যুক্তির পাল্টা জানাচ্ছে, এই ধরনের হামলার ঘটনাগুলিকে রাজনৈতিক বলে দেগে দেওয়ার অর্থ, চরমপন্থীদের বার বার একই কাণ্ড ঘটিয়ে চলার বিষয়টিকে আড়াল করার চেষ্টা।

শুধুমাত্র আক্রমণ বা হামলার বিষয়ই নয়, নয়াদিল্লি মনে করেছে আলোচনার পরিসরেও এমন ভাষ্য তৈরি করা হচ্ছে যাতে সে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। সংবিধান থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটি বাদ দিয়ে দেওয়া সংক্রান্ত আলোচনার ফলে হিন্দু-সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে যুগপৎ দ্বিধা এবং ত্রাস সৃষ্টি হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে। একই ভাবে ইসকনকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে আলোচনাও এই মানসিকতাকেই তুলে ধরছে। ভারতের বক্তব্য, এই আপৎকালীন বিষয়গুলি নিয়ে সুনির্দিষ্ট বিবৃতি না দিয়ে শুধু মুখে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।

আপাতত বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহের দিকে সতর্ক নজর রাখছে ভারত। এ রকমটাও ভাবা হচ্ছে যে ট্রাম্প আসার আগে ভারত সম্পর্কে যতটা সম্ভব কট্টর অবস্থান নিয়ে নিতে চাইছে ইউনূস সরকার, কারণ জানুয়ারির পর ঢাকার প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থন শুকিয়েআসতে পারে।

নজর রাখার পাশাপাশি নানা ভাবে বাংলাদেশের উপর চাপ বাড়ানোর চিন্তাও রয়েছে নয়াদিল্লির। ভিসা ব্যবস্থা শিথিল না করা যার অন্যতম অংশ। ভিসা দেওয়া নিয়ে এই কড়াকড়ি অদূর ভবিষ্যতে কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। চিকিৎসার জন্য ভিসার ক্ষেত্রেও বিচার বিবেচনা করে তবেই দেওয়া হচ্ছে। একাংশের বক্তব্য, চিকিৎসার জন্য ভিসা দিতেই হবে এমনটা নয়, কারণ এটা সর্বদা জরুরি পরিষেবার মধ্যে পড়ে না। অন্য দেশেও গিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব।

কলকাতায় ভারতীয় পতাকাকে অবমাননার দাবিতে বেসরকারি হাসপাতাল ও একাধিক চিকিৎসক ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসা না করার ঘোষণা করেছে। ভারত থেকে যে সব অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য বাংলাদেশ যায়, তাতে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি না করে যেগুলি অত্যাবশ্যকীয় নয়, এমন কিছু রফতানি পণ্য স্থগিত রাখা যায় কিনা তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh dhaka Delhi Minority Muhammad Yunus awami league
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy