Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

করোনা-আঁধারে আফ্রিকা, তবু খুলে গেল পিরামিড

মিশরের পুরাতত্ত্ব বিষয়ক সুপ্রিম কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল মুস্তাফা ওয়াজিরি জানান, অন্তত ১২টি মিউজ়িয়াম ও পর্যটনস্থলে ইতিমধ্যেই পর্যটকেরা আসতে শুরু করেছেন।

গিজ়ার পিরামিডের সামনে পর্যটকেরা। ছবি: এএফপি 

গিজ়ার পিরামিডের সামনে পর্যটকেরা। ছবি: এএফপি 

সংবাদ সংস্থা
কায়রো শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২০ ০৬:১৭
Share: Save:

ভয়াল ভাইরাস ধীরে ধীরে গিলতে শুরু করেছে আফ্রিকাকেও। করোনার সর্বশেষ হানা এই মহাদেশে। ইতিমধ্যেই সেখানে ৪ লক্ষ ছাড়িয়েছে সংক্রমণ। মৃত্যু ১০ হাজারেরও বেশি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা, অতিমারি ক্রমশ তার মারণরূপ নিতে শুরু করেছে।

কিন্তু তার থেকেও বেশি আশঙ্কা জাগিয়ে তুলছে, সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র বলা একটি কথা। তারা বলেছিল, দীর্ঘদিন মানুষ ‘গৃহবন্দি’ থাকতে থাকতে মানসিক ও অর্থনৈতিক ভাবে হতাশ। এ বার তাঁরা ঘর ছেড়ে বেরোতে চান। অথচ নোভেল করোনাভাইরাস এখন সংক্রমণের শীর্ষে। আফ্রিকার ক্ষেত্রেও একই ছবি। তিন মাস পরে খুলে দেওয়া হল মিশরের বিমানবন্দরগুলি। দ্বার খুলেছে ইতিহাস সমৃদ্ধ দেশটির সমস্ত মিউজ়িয়াম। গোটা বিশ্বের পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে গিজ়ার পিরামিড। দেশের জাতীয় উড়ান সংস্থা ইজিপ্টএয়ার জানিয়েছে, ১৪টি আন্তর্জাতিক উড়ানে কমপক্ষে ২ হাজার যাত্রী আজ কায়রো বিমানবন্দর থেকে সফর করেছেন। সাড়ে তিনশোরও বেশি ইউক্রেনীয় পর্যটককে নিয়ে দু’টি বিমান নেমেছে রেড সি-র হারগাদায়। লোহিত সাগরের উপকূলে মিশরের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র এটি।

মিশরের পুরাতত্ত্ব বিষয়ক সুপ্রিম কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল মুস্তাফা ওয়াজিরি জানান, অন্তত ১২টি মিউজ়িয়াম ও পর্যটনস্থলে ইতিমধ্যেই পর্যটকেরা আসতে শুরু করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে গিজ়ার পিরামিড, কায়রোর ‘দ্য সিটাডেল অব সালাডিন’, কারনাকের প্রাচীন মন্দির, লাক্সরের ‘মরচুয়ারি টেম্পল অব হ্যাটশেপসুট’। মুস্তাফা জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে যাবতীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সরকার চায় পর্যটনের হাত ধরেই দেশের ভেঙে পড়া অর্থনীতিকে ফের চাঙ্গা করতে।

আরও পড়ুন: ‘যত দিন যাচ্ছে আমার রাগ বাড়ছে’, করোনা নিয়ে ফের চিনকেই তোপ ট্রাম্পের

এ দিকে, আফ্রিকার পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞেরা। ‘দ্য আফ্রিকা সেন্টারস ফর ডিজ়িস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ জানিয়েছে, আফ্রিকা মহাদেশের ৫৪টি দেশে ৪ লাখ ৪০ হাজারের বেশি আক্রান্ত। যদিও করোনা-পরীক্ষা হচ্ছে খুব কম। পরীক্ষার সংখ্যা বাড়লে সংক্রমিতের সংখ্যাও বাড়বে। সব চেয়ে খারাপ অবস্থা দক্ষিণ আফ্রিকার। দেড় লাখের বেশি সংক্রমিত এ দেশেই। তার মধ্যে ২৮ শতাংশ সংক্রমণ জোহানেসবার্গে।

ইউরোপের অধিকাংশ দেশে লকডাউন শিথিল হলেও পর্যটন পুরনো চেহারায় ফেরেনি। কিছু দেশ আন্তর্জাতিক সফর নিষিদ্ধ করছে। কিছু দেশ অনুমতি দিলেও পরামর্শ দিচ্ছে, খুব প্রয়োজন না-থাকলে বিদেশ সফর না-করতে। ফলে পর্যটনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা হোটেল-রেস্তরাঁগুলির হাল খারাপ। ব্রিটেনের একটি কফি শপ চেন জানিয়েছে, গ্রাহক না-আসায় তাদের অন্তত ৫ হাজার কর্মী কাজ হারাবেন। কিন্তু অর্থনীতির রাশ ধরতে গিয়ে করোনা-পরিস্থিতির কথা ভুলে গেলে বিপদ আরও বাড়বে— আজ ফের এ কথা মনে করিয়ে দিয়েছে হু। সংস্থার ওয়েস্টার্ন প্যাসিফিক অঞ্চলের ডিরেক্টর তাকেশি কাসাই বলেন, ‘‘কোনও দেশ এখন নিরাপদ নয়।’’

বিপদ-তালিকার শীর্ষে রয়েছে আমেরিকা। তাদের করোনা প্রতিরোধ দলের প্রধান অ্যান্টনি ফাউচি আজ বলেন, ‘‘এখন দিনে ৪০ হাজার জন নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছেন। আমি খুব অবাক হব না, এর পরে যদি দিনে ১ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হন। অবশ্যই এখনও যদি আমরা সাবধান না-হই তবে...।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Pyramid Egypt
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy