আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি লিজ়া কুক নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ মহিলাকে ফেডারেল রিজ়ার্ভের বোর্ড অফ গভর্নর পদ থেকে অপসারণ করেছেন। উল্লেখ্য, লিজ়া গভর্নর বোর্ডের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা। ওই ঘটনার পরের দিনই হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে একটি ছবি প্রকাশ করা হয়। ওই ছবিতে দেখা গিয়েছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সকল সদস্য বৃদ্ধাঙ্গুলি (থাম্বস আপ) উত্তোলন করে আছেন। কিন্তু সেখানে ২৪ জনের মধ্যে ছিলেন মাত্র এক জন কৃষ্ণাঙ্গ। এর পরেই অভিযোগ উঠছে বর্ণবিদ্বেষের। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প।
কৃষ্ণাঙ্গ মহিলাকে অপসারণের পর ‘ব্ল্যাক ভোটারস ম্যাটার’ সংস্থার সহপ্রতিষ্ঠাতা লাটোসা ব্রাউন বলেন, “এটি পরমানবিক বোমার মতো মারাত্মক।” ট্রাম্পকে নিশানা করে তাঁর দাবি, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফেডারেল রিজ়ার্ভকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে চান। তা যদি হয় তবে সংস্থা আর স্বশাসিত থাকবে না।”
ট্রাম্পের দাবি, কুককে বরখাস্ত করার পিছনে কারণ, তিনি বন্ধক নিয়ে জালিয়াতি করেছেন। যদিও ওই মহিলা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করেছে। তিনি ফেডারেল রিজ়ার্ভের পদ থেকে ইস্তফা দিতে অসম্মতি জানান। তাঁর দাবি, ওই পদ থেকে অপসারণের ক্ষমতা ট্রাম্পের নেই।
আরও পড়ুন:
আমেরিকায় সরকারি কর্মক্ষেত্রে মোট কর্মীর ১২ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ নারী। নিউ ইয়র্ক টাইম্স-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে আমেরিকায় কৃষ্ণ বর্ণের নাগরিকেরা ব্যাপক বৈষম্যের সম্মুখীন হচ্ছেন।
১৯৬৪ সালে আমেরিকায় নাগরিক অধিকার আইন পাশ হয়। সেই আইন অনুযায়ী, সকলেই সমান অধিকার পাবেন। কর্মক্ষেত্রে জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও লিঙ্গে কোনও বৈষম্য থাকবে না। সমান এবং ন্যায্য বেতন পাবেন এবং পদোন্নতির সুযোগ থাকবে। তবুও, ২০২৫ সালে সেই আইন লঙ্ঘন হচ্ছে বলে অভিযোগ একাংশের।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই মাসের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি কর্মক্ষেত্র থেকে কাজ হারিয়েছেন ৩ লক্ষ ১৯ হাজার কৃষ্ণ বর্ণের মহিলা, এমনটাই দাবি করেছেন গবেষক ক্যাটিকা রয়। উল্টো দিকে, ওই একই সময়ে চাকরি পেয়েছেন ১ লক্ষ ৪২ হাজার শ্বেতাঙ্গ মহিলা। পাশাপাশি, ১ লক্ষ ৭৬ হাজার হিসপ্যানিক (স্পেনীয় বংশোদ্ভূত) নারীরা কাজ পেয়েছেন। কর্মক্ষেত্রে শ্বেতাঙ্গ পুরুষের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার।