Advertisement
০৫ জানুয়ারি ২০২৫
China- Bangladesh

বাংলাদেশে প্রভাব বাড়াতে সক্রিয় চিন

নীরব থেকেই চিন ‘দুই দেশের মানুষের মধ্যে আদানপ্রদান’-এর নামে বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারে সচেষ্ট বলে ভারতের কূটনীতিক ও গোয়েন্দারা মনে করছেন।

বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারে চিন সচেষ্ট বলে ভারতের কূটনীতিক ও গোয়েন্দারা মনে করছেন।

বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারে চিন সচেষ্ট বলে ভারতের কূটনীতিক ও গোয়েন্দারা মনে করছেন। —প্রতীকী চিত্র।

প্রেমাংশু চৌধুরী
শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:২৮
Share: Save:

নিঃশব্দে এগোচ্ছে ড্রাগন!

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে চিন কার্যত নিশ্চুপ। অথচ নীরব থেকেই চিন ‘দুই দেশের মানুষের মধ্যে আদানপ্রদান’-এর নামে বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারে সচেষ্ট বলে ভারতের কূটনীতিক ও গোয়েন্দারা মনে করছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য ইসলামিক সংগঠনের সঙ্গে চিনের ‘দৌত্য’ ও বিএনপি-র কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতার চিন সফরে সতর্ক নয়াদিল্লিকে।

বড়দিনের আগে চিনে বাংলাদেশের নয়া রাষ্ট্রদূত নাজমুল ইসলাম চিনের বিদেশ মন্ত্রকের এশীয় বিষয়ক বিভাগের প্রধান নিউ জিনসংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। ২০২৫-এ চিন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী। তাই চিন ২০২৫-কে ‘চিন-বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে আদানপ্রদানের বছর’ বলে উদ্‌যাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চিনের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ঢাকার সঙ্গে শীর্ষ স্তরে আদানপ্রদানে বেজিং তৈরি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে চিন প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা ভাগ করতে চায়। যা দেখে ভারতের গোয়েন্দা কর্তা ও কূটনীতিকরা মনে করছেন, শেখ হাসিনার পতনের পরে বাংলাদেশে ‘ভারত বিরোধী’ মনোভাব তৈরি হলেও সে দেশের মানুষের মধ্যে ‘চিন বিরোধিতা’ দেখা-শোনা যায়নি। তাকে কাজে লাগাতে সক্রিয় বেজিং।

এক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কর্তা বলেন, ‘‘সাধারণত মনে করা হয়, পাকিস্তান বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণ বাড়াচ্ছে। বাস্তবে পাকিস্তানের সেই আর্থিক সামর্থ্য নেই। আড়ালে চিন বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। চিন এখন সংস্কৃতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া জগৎ ও তরুণদের মধ্যে আদানপ্রদান বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে। তৎপর ঢাকায় চিনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।’’

কূটনীতিকদের মতে, গত মাসে ঢাকায় চিনের দূতাবাসে এক অনুষ্ঠানে জামায়তে ইসলামী, হেফাজত-ই-ইসলাম, খিলাফত মজলিস, নিজাম-ই-ইসলাম পার্টির মতো প্রতিনিধিরা হাজির হয়েছিলেন। জামায়াতের প্রধান শফিকুর রহমান সেখানে হাজির ছিলেন। এই সংগঠনগুলির একটি দল চিন সফরে যাচ্ছে। তার আগে বিএনপি-র চার শীর্ষ নেতা চিন ঘুরে এসেছেন। বিদেশ মন্ত্রকের এক কূটনীতিক বলেন, ‘‘অগস্টে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে চিন চুপ। তারা নিজেকে নিরপেক্ষ দেখাতে চাইছে। কিন্তু চিন নিঃশব্দে শিকড় ছড়ানোর চেষ্টা করছে। মুহাম্মদ ইউনূস সরকারে বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টা বড় দেশগুলির মধ্যে ভারসাম্যের সম্পর্কের কথা বলেছেন।’’

বাংলাদেশের উপর চাপ তৈরি করতে চিনের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হল, ৬০০ কোটি ডলারের ঋণ। অগস্টে সরকার পতনের ঠিক আগেই হাসিনা চিন সফরে যান। তিনি এই ঋণের একাংশ আর্থিক অনুদান হিসেবে চেয়েছিলেন। চিন প্রাথমিক ভাবে মাত্র ১৩ কোটি ডলারের মতো আর্থিক অনুদানে রাজি হয়। কিন্তু হাসিনা সরকার পতনের তা আটকে গিয়েছে। নয়াদিল্লি মনে করছে, এই ঋণের বোঝাকেও চিন হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাবে। ‘সামগ্রিক কৌশলগত সহযোগিতার সম্পর্ক’ তৈরির পরে বাংলাদেশ চিন থেকে বিপুল যুদ্ধাস্ত্রও আমদানি করেছে। বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে চিনা বিদেশ মন্ত্রকের কর্তার বৈঠকের পরে চিন বিবৃতিতে জানায়, তারা এ বার ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পে সহযোগিতা বাড়াতে চায়। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, চিন যে ভাবে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কায় নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েছে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও একই কৌশল নিচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh China India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy