বরিস জনসন।
—‘‘ও কিছু হবে না।’’
—‘‘আরে, পুলিশ দেখতে পেলেই মাস্ক পরে নেব।’’
—‘‘এ সব করোনা, টিকা আসলে সরকারি ভাওতাবাজি।’’
সর্বগ্রাসী অতিমারিতেও পৃথিবীর সব দেশে বাসিন্দাদের একাংশের এ হেন ‘জীবনদর্শন’ শোনা যাচ্ছে অহরহ। টিকা নেওয়া, মাস্ক পরা, দূরত্ববিধি বজায় রাখার নিয়ম বারবার মনে করাতে গিয়ে ক্লান্ত রাষ্ট্রনেতারাও। মেজাজ হারিয়ে দু’দিন আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ বলে ফেলেন, ‘‘যাঁরা টিকা নিচ্ছেন না, তাঁদের জীবন দুর্বিসহ করে দেব।’’ আজ ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ভ্যাকসিন-বিরোধী প্রচারকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘সব ক’জনের মাথাখারাপ, নির্বোধ, মাম্বো-জাম্বো।’’
নতুন বছরের শুরুতে প্রতিদিন গড়ে ২ লক্ষ সংক্রমণ ধরা পড়েছে ব্রিটেনে। এর মধ্যেও সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে একদলের টিকা-বিরোধী প্রচার। বরিস আজ সে প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এ সব মাম্বো-জাম্বো করছেন, তাঁরা নির্বোধ। ওরা মারাত্মক ভুল করছেন। আগে আমার মুখে আপনারা হয়তো এ ধরনের কথা শোনেননি। কারণ আমি ভেবেছিলাম, সকলের সঙ্গে সহযোগিতার পথে টিকাকরণ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।’’
ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ব্রিটেনের। সরকারি হিসেব অনুযায়ী দেড় লক্ষের কাছাকাছি মৃত্যু। ওমিক্রন-সংক্রমণে মৃত্যুহার ডেল্টার থেকে কম। কিন্তু এত বেশি সংক্রমণ ঘটছে, যে শতাংশের হিসেবে কম হলেও মৃতের সংখ্যা ভালই বাড়ছে।
টিকা-বিরোধীদের সামলাতে ইটালি আজ ৫০-এর উপরে সকলের ভ্যাকসিন নেওয়া বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে বরিস বলেন, ‘‘খুবই দুঃখজনক ব্যাপার, টিকাবিরোধীদের জন্য দেশের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা (এনএইচএস)-র উপরে মারাত্মক চাপ পড়ছে। চিকিৎসক-নার্সদের ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে কাজ করে যেতে হচ্ছে। আর কিছু লোক টিকাকরণের বিরুদ্ধে নির্বোধের মতো প্রচার করে যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পাগলের মতো কথা বলছে।’’
বরিস জানিয়েছেন, হাসপাতালের আইসিইউ-এ ভর্তি থাকা সকলেই প্রায় টিকা না-নেওয়া ব্যক্তি। এঁদের জন্য এনএইচএস-এর কাঁধে বাড়তি বোঝা পড়ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশে ২০ লক্ষ টিকাকরণের স্লট ফাঁকা রয়েছে। যাঁরা টিকা নেননি এখনও, তাঁদের ভালর জন্য বলছি, দ্রুত নিয়ে নিন।’’
ব্রিটেন, ফ্রান্সের সরকার টিকাকরণে জোর দিলেও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো এখনও টিকা নিয়ে নানা রকম আপত্তি তুলছেন। এ দেশের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ৫ থেকে ১১ বছর বয়সিদের টিকাকরণে ছাড়পত্র দিয়েছেন। কিন্তু তাতে ঘোর আপত্তি বোলসোনারোর। তিনি বলেন, ‘‘আমার ১১ বছরের মেয়েকে কিছুতেই কোভিডের ভ্যাকসিন দেব না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মৃত্যুর আশঙ্কা যখন শূন্য, তখন খামোকা টিকা দিতে যাব কেন! এ সবের আড়ালে কী চলছে! কতগুলো টিকা-পাগল, এদের এত আগ্রহ কিসের?’’ করোনা-সংক্রমণ তালিকায় বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। সংক্রমিত ২ কোটি ২৩ লক্ষ ৯৫ হাজার ৩২২ জন। মৃত্যুর তালিকায় আরও এগিয়ে ব্রাজিল। আমেরিকার পরেই দ্বিতীয় স্থানে। ৬ লক্ষ ১৯ হাজার ৭৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর পরেও ‘ভ্যাকসিন-পাগলদের’ টিকাকরণের দাবি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রেসিডেন্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy