Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Sunlight on Demand

রাতে রোদ বেচবে আমেরিকার সংস্থা

আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার এক ‘স্টার্টআপ’ সংস্থার কর্ণধার বেন রোদ ‘বিক্রি’র অভিনব এক প্রকল্পের কথা শুনিয়েছেন। অনলাইন কেনাকাটির যুগে আলপিন থেকে মায় রকেট পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে দুয়ারে।

‘সানলাইট অন ডিমান্ড’।

‘সানলাইট অন ডিমান্ড’। —প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:৫৫
Share: Save:

শীতের নিশুতি রাত। লেপ-কম্বলেও ঠান্ডা কাটছে না। ভাবলেন, একটু রোদ পোহালে কেমন হয়! মোবাইলে রোদের ‘অর্ডার’ দিয়ে উঠে গেলেন ছাদে। কিছু পরেই আকাশ চিরে নেমে এল এক ফালি রোদ।

কী ভাবছেন? কল্পবিজ্ঞানের গল্প! বেন নোয়াকের কথা যদি মানেন, অচিরে বাস্তব হতে চলেছে এই ঘটনা। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার এক ‘স্টার্টআপ’ সংস্থার কর্ণধার বেন রোদ ‘বিক্রি’র অভিনব এক প্রকল্পের কথা শুনিয়েছেন। অনলাইন কেনাকাটির যুগে আলপিন থেকে মায় রকেট পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে দুয়ারে। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন, ‘সানলাইট অন ডিমান্ড’।

সম্প্রতি লন্ডনে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন এনার্জি ফ্রম স্পেস’ সম্মেলনে তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্প সম্পর্কে জানান বেন। কী ভাবে রাতে সূর্যের আলো মিলবে? তা-ও আবার নির্দিষ্ট কোনও জায়গায়? বেন জানিয়েছেন, গোটা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত হবে ৫৭টি কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৭০ মাইল উপরে কক্ষপথে সেগুলি স্থাপন করা হবে। প্রতিটিতে থাকবে উচ্চ প্রতিফলক ক্ষমতার ৩৩ বর্গফুটের পলিয়েস্টার ফিল্মের ‘মাইলার’ দর্পণ। সেগুলি সূর্যাস্তের পরেও সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে পৃথিবীতে পাঠাতে পারবে। সঙ্গে, উপগ্রহই অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ মেপে ঠিক করে দেবে প্রতিফলিত সূর্যরশ্মি পাঠানোর নির্দিষ্ট স্থান।

ব্যক্তিগত প্রয়োজনে যতটা না, প্রকল্পটির মাধ্যমে বিশ্বে সৌরশক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিপ্লব আনার স্বপ্ন দেখছেন বেন। সংস্থার ওয়েবসাইটেও লেখা— যা সৌরশক্তি এখন ব্যবহার হয়, সূর্য তার ২৪ ট্রিলিয়ন গুণ দিতে সক্ষম। সেই শক্তিকেই ধরতে চায় তারা। দূষণহীন ভাবে পৃথিবীর শক্তি-সমস্যা মেটানোর ক্ষমতা রাখে সৌরশক্তি। তাই এখন সর্বত্র সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে জোর দেওয়া হচ্ছে। তবে মূল সমস্যা হল, রাতে সূর্যরশ্মি না থাকায় সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি নিষ্ক্রিয় থাকে। “সূর্য ডোবার পরেও যদি কোনও ভাবে সূর্যের আলো ওই সব কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া যায়, সৌরশক্তির উৎপাদন অনেকটা বাড়বে। প্রাথমিক ভাবে সূর্যাস্তের পরে আরও ৩০ মিনিট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে আলো পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে আমাদের”, বলছেন বেন।

কতটা এগিয়েছে কাজ? সংস্থাটি জানাচ্ছে, পরীক্ষামূলক ভাবে একটি গ্যাসবেলুনে আট ফুট বাই আট ফুটের একটি ‘মাইলার’ দর্পণ আটকে সেখান থেকে সূর্যরশ্মি প্রতিফলিত করে প্রায় ৮০০ ফুট দূরের সৌরপ্যানেলে ফেলা হয়েছে। ফলাফলও আশাব্যঞ্জক। দেখা গিয়েছে, প্রতি বর্গমিটার প্যানেল থেকে ৫০০ ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে।

সব পরিকল্পনা মতো চললে আগামী বছরেই প্রকল্প চালু করতে চান বেন। ইতিমধ্যে ৩০ হাজারের বেশি আবেদনপত্রও জমা পড়েছে। তবে কক্ষপথে উপগ্রহ স্থাপন তো বেশ ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। বেন আশাবাদী, অদূর ভবিষ্যতে সেই খরচ অনেকটা কমে আসবে। আর, রোদ বেচে আখেরে লাভের মুখই দেখবে সংস্থা।

অন্য বিষয়গুলি:

Sun Science solar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy