সুইৎজ়ারল্যান্ডে নিলাম হবে ৬ কোটি ৭০ লক্ষ বছর পুরনো ‘টিরানোসরাস-রেক্স’ বা টি-রেক্সের কঙ্কাল। প্রতীকী ছবি।
ডাইনোসরের নিলাম!
ইউরোপে এমন ঘটনা এই প্রথম। সামনের মাসে সুইৎজ়ারল্যান্ডে নিলাম হবে ৬ কোটি ৭০ লক্ষ বছর পুরনো ‘টিরানোসরাস-রেক্স’ বা টি-রেক্সের কঙ্কাল। কোলার নামক নিলাম সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ১৮ এপ্রিল জ়ুরিখে নিলামের আয়োজন করা হচ্ছে। কঙ্কালটির নাম রাখা হয়েছে ‘ট্রিনিটি’। নিলাম সংস্থার অনুমান, উচ্চতায় ১২.৮ ফুট ট্রিনিটির দাম উঠবে ৬৫ লক্ষ থেকে ৮৭ লক্ষ ডলার। সংস্থার কর্তা ক্রিশ্চিয়ান লিঙ্ক যদিও জানিয়েছেন, তাঁরা কম করে দাম ধরেছেন। দাম আরও উঠতে পারে। নিলাম সংস্থার মতে, ‘‘বর্তমানে যে ক’টি টি-রেক্স-এর কঙ্কালের অস্তিত্ব জানা রয়েছে, তার মধ্যে ট্রিনিটি দর্শনীয়। অসাধারণ ভাবে উদ্ধার করা হয়েছিল জীবাশ্মটিকে। চমৎকার সংরক্ষণও করা হয়েছে।’’
একটা গোটা টি-রেক্স ডাইনোসরের কঙ্কাল নিলামে ওঠার ঘটনা ইউরোপে প্রথম। বিশ্বে তৃতীয়। ২০২১ সালে নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র উল্লেখ করে কোলার জানিয়েছেন, পৃথিবীতে যে সব প্রাণী বিচরণ করেছে, তার মধ্যে অন্যতম বৃহৎ খাদক শ্রেণির প্রাণী টি-রেক্স। গোটা বিশ্বে মাত্র ৩২টি পূর্ণবয়স্ক টি-রেক্সের কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে।’’
ট্রিনিটি অবশ্য একটি টি-রেক্সের কঙ্কাল নয়। তিনটি কঙ্কালের অংশ থেকে একে তৈরি করা হয়েছে। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে আমেরিকার মন্টানা ও উইমিংয়ের হেল ক্রিক ও ল্যান্স ক্রিকে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হয়েছিল কঙ্কালগুলি। আমেরিকার এই দুই অঞ্চল থেকে আরও দু’টি টি-রেক্সের কঙ্কাল পাওয়া গিয়েছিল অতীতে। এর মধ্যে ১৯৯৭ সালে ‘সু’ নামক একটি কঙ্কালের নিলাম হয়। তখন তার দাম উঠেছিল ৮৪ লক্ষ ডলার। এর পরে ২০২০ সালে নিলাম সংস্থা ক্রিস্টি নিলামে তোলে ‘স্টান’-কে। তার দাম এখন পর্যন্ত রেকর্ড— ৩ কোটি ১৮ লক্ষ ডলার।
গত বছর ক্রিস্ট্রি হংকংয়ে একটি টি-রেক্সের কঙ্কাল নিলামে তুলেছিল। কিন্তু সেই কঙ্কালটির বিভিন্ন অংশের উৎস নিয়ে বিতর্ক বেঁধেছিল। কোলারের কর্তা লিঙ্ক জানিয়েছেন, ট্রিনিটিকে নিয়ে তাঁরা তা-ই পরিষ্কার থাকতে চাইছেন। কোনও বিতর্ক তাঁরা চান না। ট্রিনিটির বিষয়ে তাই সমস্ত তথ্য আগেভাগেই প্রকাশ করা হয়েছে। যেমন, তিনটি টি-রেক্স কঙ্কাল থেকে একে তৈরি করা হয়েছে। মাথার খুলির অংশটি প্রায় অক্ষত রয়েছে। এটি গোটাটাই একটি টি-রেক্সের।
ট্রিনিটিকে সুইৎজ়ারল্যান্ডে আনাও এক কাহিনি। এত বড় কঙ্কাল এক দেশ থেকে অন্য দেশে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব। তাই কঙ্কালটিকে ভাগ করে তার বিভিন্ন অংশ ৯টি বিশালাকার বাক্সে পুরে জ়ুরিখে আনা হয়েছে। তার পর সেগুলিকে ফের জোড়া লাগানো হয়েছে। সাম্প্রতিক কালে ডাইনোসরের কঙ্কাল নিলাম বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। লক্ষ লক্ষ ডলারের ব্যবসাও চলছে। তবে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এই ধরনের ব্যবসা বিজ্ঞানের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy