উদ্যাপন: জাতীয় স্মৃতিসৌধের চত্বরে বিজয় দিবসের উচ্ছ্বাস। নিজস্ব চিত্র।
স্বাধীনতার ৪৯ বছর অতিক্রম করে ৫০-এ পা দিল বাংলাদেশ। করোনা-পরিস্থিতিতে বর্ষব্যাপী অনুষ্ঠান ঘোষণা করতে পারেনি সরকার। সকলেই তাকিয়ে রয়েছেন কবে ভ্যাকসিন এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, সে দিকে। কিন্তু বিজয়ের দিনেও বাংলাদেশের সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ যে পরাজিত শক্তির একাংশ, আগের রাতে জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় তা স্পষ্ট করে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এই শক্তি বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেশে ধর্মের নামে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
স্বাধীনতা যুদ্ধের নায়ক শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ চলছে এখন। তার মধ্যেই শুরু হচ্ছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব। কিন্তু যে ভাবে ধুমধাম করে তা উদ্যাপন করার কথা ভেবেছিল মুজিব-কন্যা শেখ হাসিনার সরকার, করোনার প্রকোপে সবই থমকে যায়। ২০২০-র ১৭ মার্চ মুজিবের জন্মদিন থেকে এক বছর, ২০২১-এর ১৬ মার্চ পর্যন্ত ‘মুজিব বর্ষ’ পালনের পরিকল্পনা করেছিল সরকার। কিন্তু অতিমারিতে কিছুই সে ভাবে করা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার আজ গেজেট নোটিফিকেশন করে ‘মুজিব বর্ষ’-এর মেয়াদ আরও ৯ মাস বাড়িয়েছে। অর্থাৎ আগামী বছরের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকবে এই স্মারক বর্ষ।
শেখ মুজিবের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে দেশের প্রধান প্রধান শহরে তাঁর মূর্তি স্থাপনের পরিকল্পনা করেছিল সরকার, যার বিরোধিতায় রাস্তায় নেমেছে কট্টরপন্থী হেফাজতে ইসলামির নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি ইসলামি দল ও সংগঠন। কুষ্টিয়া শহরে মুজিব মূর্তিতে ভাঙচুর করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক মধু’র ক্যান্টিনের প্রতিষ্ঠাতা মধুসূদন দের মূর্তিরও ক্ষতি করা হয়। বিভিন্ন সংগঠন এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামলেও এর বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান দেখা যাচ্ছিল না বলে অনেকে অভিযোগ করছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী হাসিনা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার করবেন না। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মান্ধ নন।”
শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান— সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। যার যার ধর্ম পালনের অধিকার এ দেশের প্রত্যেক নাগরিকের আছে। এ দেশ সকলের।” হাসিনা এ দিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “এ দেশে ধর্মের নামে বিভেদ-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেব না।”
আরও পড়ুন: কূটনৈতিক পথেই এলএসি-তে বিরোধ মেটাক চিন, প্রস্তাব আমেরিকার কংগ্রেসে
মৌলবাদ-বিরোধীদের দাবি, পরাজয়ের গ্লানি ভুলতে না-পারা পাকিস্তান ও তাদের গুপ্তচর সংস্থা বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টির জন্য সদা তৎপর। মূর্তি বা ভাস্কর্য-বিরোধী আন্দোলনের পিছনেও তাদের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানের কথা ঘোষণা করার পরে এ দিন অনেকেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: কৃষক আন্দোলনে ‘খালিস্তানি যোগ’, উদ্বিগ্ন ব্রিটেন
আজ সকাল থেকেই সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ চত্বর ছিল ফুলে ঢাকা। বিভিন্ন সংগঠন যেমন ফুলের স্তবক দিয়ে শহিদদের স্মরণ করেছে, সাধারণ মানুষও গিয়েছেন অনেকে। মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের স্লোগানও উঠেছে বারে বারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy