Advertisement
E-Paper

হোমের পরিবেশ অপছন্দ, গ্রামেই ফিরলেন সখিনা

মুর্শিদাবাদের আটপৌরে গ্রাম চোঁয়ায় সুভাষ রায়চৌধুরীর যজমানি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল ঘর-হারা এক মুসলিম মেয়েকে নিজের বাড়িতে ঠাঁই দেওয়ায়।

সখিনা বিবি। নিজস্ব চিত্র

সখিনা বিবি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:২১
Share
Save

গ্রামে বিয়ে-পৈতের অনুষ্ঠানে ব্রাত্য হয়েছিলেন তিনি। যজমানি করে সামান্য যে আয়ে টিঁকিয়ে রেখেছিলেন সংসার, দাঁড়ি পড়ে গিয়েছিল তার উপরেও। গৃহলক্ষ্মী থেকে বিপত্তারিণী— পুজো করতে গিয়ে তাঁকে শুনতে হচ্ছিল ‘না, ঠাকুরমশাই, আপনাকে আর আসতে হবে না!’

মুর্শিদাবাদের আটপৌরে গ্রাম চোঁয়ায় সুভাষ রায়চৌধুরীর যজমানি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল ঘর-হারা এক মুসলিম মেয়েকে নিজের বাড়িতে ঠাঁই দেওয়ায়। গ্রামের অনুশাসনে অবশ্য পিছিয়ে যাননি সুভাষবাবু, বলেছিলেন, ‘‘মেয়ের উপর অত্যাচার হলে কী হয় আমি জানি। তাই সখিনাকে এ বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছি। যত দিন না ওর কোনও ব্যবস্থা হয় এখানেই থাকবে ও।’’ গ্রামের সেই সংস্কার মুছতে না পারলেও সখিনার ‘ব্যবস্থা’ করতে তাই হলদিয়ার একটি সরকারি হোমে তাঁকে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিল জেলা প্রশাসন। শনিবার সেই হোমে গিয়ে অবশ্য পছন্দ হয়নি সখিনা বিবির। ঠিক ছিল, সখিনার সঙ্গেই হোমে থাকবেন কাকলিও। তবে সখিনা বলছেন, ‘‘দু’টো বাচ্চাকে নিয়ে এই পরিবেশে থাকা যায়! তাই পুরুত মশাইয়ের কাছেই আপাতত ফিরে চললাম।’’ পুজোর আগে তাঁর হোমে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন হলদিয়ার ওই হোমের আধিকারিক বিমলকুমার সাহু।

জলঙ্গির সখিনাকে প্রায় এক কাপড়ে তাড়িয়ে দিয়েছিল তাঁর স্বামী। দু’টি নাবালক পুত্র-কন্যা নিয়ে রাস্তায় বসে থাকা সেই তরুণীকে ঘরে নিয়ে এসেছিলেন সুভাষবাবুর কন্যা কাকলি। বিবাহ বিচ্ছেদের পরে কাকলিও থাকেন বাপের বাড়িতেই। কাকলি বলছেন, ‘‘আশ্রয়হীন এক মহিলা, তাঁকে দেখেও চোখ বুজে থাকব? বাবাকে এসে বললাম, ওঁকে আমাদের বাড়িতে একটু জায়গা দাও। বাবা রাজি হতেই নিয়ে এসেছি। আর তার ফলে, গ্রামে আমাদের প্রায় ধোপা নাপিত বন্ধ হওয়ার জোগাড়।’’

গ্রামীণ সংস্কার আর মাতব্বরদের অনুশাসনে ইতি টানতে চোঁয়া গ্রামের যজমান সুভাষ রায়চৌধুরীর পাশে দাঁড়িয়েছিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু তাতে যে কাজ হয়নি দিন কয়েক আগের দু’টি ঘটনা থেকে তা ফের স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সুভাযবাবু জানান, নিজের গ্রামে পসার বন্ধ হওয়ায়, দিন কয়েক আগে পড়শি গ্রাম ট্যাংরামারি গ্রামে একটি শ্রাদ্ধ বাড়িতে পুজো করতে গিয়েছিলেন সুভাষ। কিন্তু পুজোয় বসার পরে মাঝ পথেই তাঁকে তুলে দিয়ে বলা হয়েছিল, ‘দরকার নেই আপনার পুজো করার!’ গ্রামের একটি সর্বজনীন পুজো কর্তারা বায়না করেও শেষতক বাতিল করেছে তাঁকে। এই অবস্থায় সখিনা সুভাষবাবুকে জানিয়েছিলেন, ‘‘এ বার আমি গ্রাম ছাড়ি। না হলে আপনাকে ভাতে মারবে গ্রামবাসীরা!’’

তবে, সে হোমের পরিবেশ পছন্দ না-হওয়ায় ফের চোঁয়া গ্রামেই ফিরতে হল তাঁকে।

Shelter Home Murshidabad Haldia

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।