বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নিলেন অধীর চৌধুরী। বৃহস্পতিবার কলকাতায়। ছবি: পিটিআই
এমনিতেই তাঁর ঘোষিত পরিচয় ‘তৃণমূলবিরোধী’। বৃহস্পতিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে প্রথম সাংবাদিক বৈঠকেই অধীর চৌধুরী জোরের সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, করোনা-পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে আন্দোলনে নামবেন তাঁরা। অধীরের কথায়, ‘করোনা পার হলেই স্বৈরাচারী তৃণমূলের বিরুদ্ধে জবরদস্ত আন্দোলনে নামবে রাজ্য কংগ্রেস!’
অধীর আরও জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২১ সালে রাজ্যের বিধানসভা ভোটে সিপিএম তথা বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের নির্বাচনী সমঝোতা বা জোট অটুট থাকবে। পাশাপাশিই, বিভিন্ন সময়ে অভিমান করে দল ছেড়ে যাওয়া নেতা-কর্মীদের কংগ্রেসে ফিরে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। এ দিন অধীর জানান, বুধবার রাতে সনিয়া গাঁধী সরাসরি তাঁকে ফোন করে প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্য কংগ্রেস যে পরিস্থিতিতে আপাতত রয়েছে, তাতে এই দায়িত্ব একটা বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু দলের অনুগত সৈনিক হিসেবে তিনি সেই চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সোমেন মিত্রের মৃত্যুর পর কাউকে না কাউকে শূন্যস্থান পূরণ করাটা জরুরি হয়ে পড়েছিল। সেই সুবাদে আমাকে এই দায়িত্ব নিতে হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, অধীর এই নিয়ে দ্বিতীয় বার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হলেন। এর আগে তিনি সভাপতি থাকার সময় কংগ্রেসে বেশ কিছু দলত্যাগের ঘটনা ঘটেছিল। ফলে এ দিন অধীরের কংগ্রেসে ফেরার উদাত্ত আহ্বানও যথেষ্ট ‘তাত্পর্যপূর্ণ’। সিপিএমের সঙ্গে যৌথ আন্দোলন এবং জোট যে থাকবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। বুধবার রাতে অধীরের নাম প্রদেশ সভাপতি হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পর কালক্ষেপ না করে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন মহম্মদ সেলিম-সহ সিপিএম নেতারা। আবার এ দিন প্রদেশ দফতরে অধীরের পাশে হাজির ছিলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। যিনি কংগ্রেসের তরফে পরিষদীয় রাজনীতিতে সিপিএমের সমন্বয় রক্ষা করেন। অধীর বলে দেন, ‘‘সিপিএমের সঙ্গে আমরা কখনও সমঝোতা হারাতে চাইনি। গত বিধানসভা ভোটের পর সিপিএমের মনে হয়েছিল, কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলতে গিয়ে তাদের ফল খারাপ হয়েছিল। তাই তাদের একলা চলতে হবে। কিন্তু কংগ্রেসের অবস্থান একই ছিল। সিপিএম আবার কংগ্রেসের সঙ্গে নতুন করে রাজনৈতিক আন্দোলন করেছে। তাতে সমঝোতা আরও দৃঢ় হয়েছে। আমরা চাইব, এই রাজনৈতিক সমঝোতাকে নির্বাচনী সমঝোতায় নিয়ে যেতে। যাতে বাংলায় স্বৈরাচারী তৃণমূলের বিরুদ্ধে জবরদস্ত আন্দোলনে নামা যায়।’’ মান্নান এবং প্রদীপ ভট্টাচার্য-সহ কয়েকজন নেতাকে সিপিএমের সঙ্গে মিলে যৌথ আন্দোলনের দায়িত্ব দিয়েছেন নতুন প্রদেশ সভাপতি। তিনি জানান, বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের আলোচনা শুরু হবে।
আরও পড়ুন: ভোটের আগে বাংলায় দায়িত্ব ফের অধীরকেই দিল কংগ্রেস
আরও পড়ুন: পরের দিন নিট, ১২ সেপ্টেম্বর লকডাউন প্রত্যাহার, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
কংগ্রেসে পরিচিত হইহল্লা এবং হাল্কা মাইক্রোফোন বিভ্রাট দিয়ে অধীরের সাংবাদিক বৈঠক শুরু হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন নতুন প্রদেশ সভাপতি। হাতে দস্তানা এবং মুখে মাস্ক পরিহিত অধীর শুরুতেই জানিয়ে দেন, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস তার সর্বস্ব পণ করে দলকে সক্রিয়, সতেজ ও প্রাণবন্ত করে তুলবে। আন্দোলনের জন্য পথে নামবে। তাঁর কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের বহু কর্মী ও নেতা তৃণমূল বা বিজেপি-তে যোগদান করেছেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর তাঁদের বলতে চাই, তাঁরা পুরনো দলে ফিরে আসুন। আপনাদের যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদা আমরা দিতে বাধ্য থাকব।’’ তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে আমরা এক ইঞ্চি জমিও তৃণমূল বা বিজেপি-কে ছেড়ে দেব না। সর্বভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আমরা স্বীয় লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy