Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

চোরাশিকারি ও খড়্গের খোঁজে তদন্ত, নেপাল-ভুটান থেকেও সাহায্য চায় বন দফতর

চোরাশিকারীদের দলটি নেপাল বা ভুটানের রুট ব্যবহার করে খড়্গটি পাচারের চেষ্টা করতে পারে বলে সন্দেহ বন দফতরের কর্তাদের একাংশের।

—ফাইল ছবি

—ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৩১
Share: Save:

গন্ডার খুনের ঘটনায় চোরাশিকারিদের ধরতে ও কেটে নেওয়া খড়্গটি উদ্ধারে এ বার প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল ও ভুটানেরও সাহায্য চাইল রাজ্য বন দফতর।

চোরাশিকারীদের দলটি নেপাল বা ভুটানের রুট ব্যবহার করে খড়্গটি পাচারের চেষ্টা করতে পারে বলে সন্দেহ বন দফতরের কর্তাদের একাংশের। সেজন্যই ওই দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

ডুয়ার্সের জঙ্গলে চোরাশিকারিদের আনাগোনার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। গত কয়েক বছরে বারবারই গরুমারা ও জলদাপাড়ার জঙ্গলে একাধিকবার গন্ডার খুন করে খড়্গ লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। তবে গত কুড়ি মাস ধরে সব কিছু ঠিক থাকার পর বুধবার বিকেলে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের পঞ্চাশ ফুট বিটের জঙ্গলে চোরাশিকারিদের হাতে খুন হয় পূর্ণবয়স্ক একটি স্ত্রী গন্ডার। চোরাশিকারিদের দলটি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে গন্ডারের খড়্গ কেটে নিয়ে পালিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার ভোরে খড়্গহীন গন্ডারের দেহটি উদ্ধার করেন বনকর্মীরা। ঘটনার তদন্তে নেমে বনকর্তারা সন্দেহ প্রকাশ করেন, যেভাবে দু’টি গুলি ছুড়ে গন্ডারটিকে হত্যা করে তার খড়্গটি কেটে নেওয়া হয়েছে, তাতে করে এর পিছনে অরুণাচলপ্রদেশ, মণিপুর বা নাগাল্যান্ডের চোরাশিকারীদের হাত থাকতে পারে। তবে স্থানীয়দের সাহায্য ছাড়া যে বাইরের কারও পক্ষে গন্ডার শিকার সম্ভব নয়, তাও জানিয়ে দেন তাঁরা। সেই সূত্রেই দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়।

সূত্রের খবর, পুলিশ ছাড়াও ঘটনার তদন্তে বন দফতরকে ইতিমধ্যেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সিআইডি। সেইসঙ্গে ধৃত দু’জনকে টানা জেরা করে তাদের থেকে পাওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন জায়গায় অভিযানও চালাচ্ছেন বন আধিকারিক ও কর্মীরা। বিভিন্ন জায়গায় তাদের অভিযানে সঙ্গে থাকছে পুলিশও। কিন্তু প্রতিটি ক্ষেত্রেই বন আধিকারিকদের খালি হাতে ফিরে আসতে হচ্ছে বলে খবর। খড়্গ যে রাজ্যের বাইরে চলে গিয়েছে, ঘটনার পরই সে ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বন কর্তারা। এই অবস্থায় চোরাশিকারীরা যাতে কোনও অবস্থাতে নেপাল বা ভুটান দিয়ে খড়্গটি পাচার করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের তদন্তকারী সংস্থাগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ শুরু করল বন দফতর।

রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিংহ বলেন, “খুনের পর গন্ডারের খড়্গ সহ চোরাশিকারিদের নেপাল ভুটানে ঢুকে যাওয়া বা ওই দুই দেশের রুট ব্যবহার করে যাতে তারা খড়্গটি পাচার করতে না পারে সেজন্যই দুই দেশের প্রশাসনের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি।” সেইসঙ্গে চোরাশিকারিদের ধরতে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বনকর্তাদের সঙ্গেও রাজ্যের বন কর্তারা যোগাযোগ রাখছে বলে সূত্রের খবর।

বন দফতর সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে বন কর্তারা জানতে পেরেছেন জলদাপাড়া লাগোয়া খাঁউচাঁদপাড়া বনবস্তিতে গন্ডার খুনের যাবতীয় পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। এই অবস্থায় ওই এলাকার কে বা কারা এই ঘটনায় জড়িত তদন্তে তা খুঁজে বের করার মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বনকর্তারা। ইতিমধ্যেই ওই এলাকা থেকে একজনকে বন দফতর গ্রেফতারও করেছেন। তারপরও অবশ্য গোটা ঘটনার কিনারা বা খড়্গ উদ্ধরে এখনও অন্ধকারে বন দফতর।

অন্য বিষয়গুলি:

Jaldapara National Park Rhino Bhutan Nepal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE