ভাষণ দিচ্ছেন বড়ঞা থানার ওসি সন্দীপ সেন। ফাইল চিত্র
ঠিকাদারির কাজে পুলিশ ও প্রশাসন কাটমানি নেয় কি না, তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিয়ে শেষ পর্যন্ত বিপাকে পড়লেন মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার ওসি সন্দীপ সেন। বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্য পুলিশ সূত্রে খবর, এই নিয়ে তাঁকে শো-কজ় করা হয়েছে। তবে ঠিক কী বিষয়ে তাঁকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে, তা রাত পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার কিছু বলতে চাননি। এর আগে তিনি শুধু বলেছিলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ সন্দীপও মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
সন্দীপের বিরুদ্ধে যে কঠোর পদক্ষেপ করা হতে পারে, তেমন ইঙ্গিত এ দিন আগেই মিলেছিল প্রশাসনিক মহল থেকে। এর মধ্যে তৃণমূলের কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার পাল্টা দাবি করেছেন , ‘‘ওসি যে কাটমানি নেওয়ার কথা বলেছেন, তার প্রমাণ তাঁকে দিতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এক জন ওসি তাঁর সহকর্মীর বিরুদ্ধে ওই মন্তব্য করতে পারেন না। ওসি ব্লক প্রশাসনকেও হেয় করেছেন। হেয় করেছেন আমাদের সরকারকে।’’
কী বলেছিলেন সন্দীপ? বুধবার সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, সন্দীপ বলছেন, “৪০ শতাংশ কম দিয়ে রাস্তা তৈরি করবে, নিজের জন্য ২০ শতাংশ টাকা রাখবে। হল কত? ৬০ টাকা। ব্লকে ৪ টাকা। হল কত? ৬৪ টাকা। আগের ওসিরা নিত ৫ টাকা। হল ৬৯ টাকা। আর খেঁকশেয়ালের বাচ্চারা ৫ টাকা। সব মিলিয়ে ওই ৭৫ টাকা ধরুন। ২৫ টাকায় সাহোড়া কে কোন রাস্তা হবে ভাই!” এই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি। তবে ভিডিয়োটি সামনে আসতেই বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়েছেন। তাঁরা নিশানা করেছেন রাজ্য সরকার এবং শাসকদলকে।
প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি তথা সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘জ্ঞানে হোক বা অজ্ঞানে, বড়ঞার দারোগাবাবু সত্যিটা বলে দিয়েছেন। দিদির নির্দেশ আছে ৭৫ টাকা তোরা নিস, ২৫ টাকা দিস।’’ ওই কংগ্রেস সাংসদ বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে তৃণমূলের ভোটের সভাতে দারোগাবাবু বক্তৃতা করলেও আশ্চর্যের কিছু নেই। কারণ এই ওসি লালগোলার ওসি থাকাকালীন তৃণমূল নেতার মতোই কাজ করেছেন।’’
বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে ওই ভিডিয়োয় ওসির পাশে বসে থাকতে দেখা যায়। তিনি অবশ্য বক্তব্য, ‘‘সাহোড়া অঞ্চলে উন্নয়ন তুলনামূলক ভাবে কম হয়েছে। ওসি এলাকার উন্নয়নের কথা ভেবেই হয়তো এমন কথা বলেছেন।” ওই ভিডিয়োতে জীবনকৃষ্ণকে ওসির পাশেই বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। জীবনকৃষ্ণের দাবি, “ঠিকাদার আর দল কোনও ভাবেই এক নয়।’’ জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সাংসদ আবু তাহের খান আবার বলেন, ‘‘দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যের কোনও মানে হয় না। অভিযোগ উঠলে প্রশাসনের পাশাপাশি দল থেকেও খতিয়ে দেখা হয়।’’
ইতিমধ্যে তৃণমূলের ‘দিদিকে বলো’-র ধরনে ‘সিপিআইএম ওয়েস্টবেঙ্গল’ নামের ফেসবুক পেজ-এ একটি ফোন নম্বর দিয়ে সাধারণ মানুষকে সেখানে অভিযোগ জানাতে আহ্বান জানিয়েছে সিপিএম। সিপিএমের জেলা সম্পাদকজামির মোল্লা বলেন, “সেখানে জেলার ২৬টি ব্লক থেকেই অভিযোগ মিলেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy