Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
flood

West Bengal Flood Situation: গভীর রাতে রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছাড়াতেই এই বন্যা, সটান জানিয়ে দিল নবান্ন

দু’মাসের ব্যবধানে দু’টি বড় বন্যা সঙ্কট। পরিস্থিতি সামলাতে এক একটি জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এক একজন মন্ত্রীকে। বৈঠকে জানালেন মুখ্যসচিব।

বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন হয়েছে বহু এলাকা

বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন হয়েছে বহু এলাকা

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২১ ১৯:৩৭
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী আগেই অভিযোগ করেছিলেন। এ বার নবান্নর তরফেও জানিয়ে দেওয়া হল রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছাড়াতেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজ্যে। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন। বৈঠকের শুরুতেই তিনি জানিয়ে দেন, ঝাড়খণ্ড থেকে রাত ৩টে নাগাদ ৮০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। সেই জল শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টায় আরও বাড়িয়ে এক লক্ষ ৪৫ হাজার কিউসেক করা হয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন হয়েছে বহু এলাকা।

পরিস্থিতি সামাল দিতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাও নামাতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। একইসঙ্গে তিনি এও জানিয়েছেন যে, দু’মাসের মধ্যে দু’টি বড় বড় বন্যা পরিস্থিতির মুখে পড়েছে রাজ্য। এই অবস্থায় রাজ্য বন্যা সামলাতে সবরকম পদক্ষেপ করছে। এমনকি এক একটি জেলার পরিস্থিতির দায়িত্ব এক একজন মন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যসচিব।

শুক্রবার সকালে রাজ্যকে না জানিয়ে ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে মমতাও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘‘না জানিয়ে ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া অপরাধ। এ জন্যই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’’ এমনকি এই বন্যা পরিস্থিতিকে ‘ম্যানমেড’ বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা বলেন, ‘‘কত বার বলেছি না বলে জল ছাড়বেন না। বলতে বলতে হতাশ হয়ে যাচ্ছি। না জানিয়ে রাত ৩টের সময় যদি জল ছেড়ে দেয়, তা হলে তো মানুষ ঘুমন্ত অবস্থাতেই ভেসে যাবে। এটা পাপ। এটা অপরাধ। আগে থেকে জানলে তো আমরা মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যেতে পারি।’’ এর পরই তাঁর তোপ, ‘‘জল ছেড়ে কেন বন্যা ঘটাবে? ঝাড়খণ্ডের বোঝা আমরা কেন নেব?’’

একটানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ার পাশাপাশি বেড়েছে নদীগুলির জলের স্তর। এর মধ্যেই মাইথন, পাঞ্চেত, ডিভিসি-র জলাধার থেকে জল ছাড়ার নদীগুলি ফুলে ফেঁপে উঠেছে। প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের পাঁচ জেলা হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম এবং বাঁকুড়াতে। শুক্রবার সন্ধ্যায় বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যসচিব জানান, বন্যায় রাজ্যের ২২ লক্ষের বেশি মানুষ প্রভাবিত হয়েছেন। দামোদর, দ্বারকেশ্বর, রূপনারায়নের জল বিপদ সীমার অনেক উপর দিয়ে বইছে। আসানসোলের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। নানুরও পুরোপুরি জলমগ্ন। তবে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার মূল্যায়ন জল নামার পরই করা যাবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব।

হরিকৃষ্ণ বলেন, চার লক্ষ মানুষকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দেড় হাজারের বেশি ত্রাণ শিবিরে আড়াই লক্ষ মানুষ রয়েছেন। এছাড়া ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে জেলায় জেলায়। রাজ্যের ২৫টি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি ভিন রাজ্য থেকেও আনা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলার আটটি দল। এ ছা়ড়া আট কলম সেনা এবং ২০০টি নৌকায় মোতায়েন করা হয়েছে।

তবে মুখ্যসচিব সতর্ক করে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই হাওড়া-হুগলি জেলা থেকে জল নামতে শুরু করেছে। জল নামলে ঘাটালের প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। ইতিমধ্যে বন্যা পরিস্থিতিতে ঘাটালে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়ে মুখ্যসচিব বলেন,‘‘বা়ড়ি ভেঙে পড়ে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। মৃতদের মধ্যে একজন শিশুও রয়েছে।’’

এর আগে ডিভিসি জল ছাড়ার পর অজয় নদীতে জল বেড়েছিল বলে জানিয়েছিল নবান্ন। বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে ২০ থেকে ৩০টি গ্রাম জলমগ্ন হয়। জলের তলায় কয়েকশো বিঘা চাষের জমিও ছিল। শনিবার বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আকাশপথে বাঁকুড়া, হাওড়া পুরুলিয়া এবং হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকা পরিদর্শন করবেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন:

অন্য বিষয়গুলি:

flood bengal flood west bengal flood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE