যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
বছর পাল্টালেও নানা প্রশাসনিক জটে কার্যত কিছুই পাল্টায়নি যাদবপুরে। তবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মেন হস্টেলে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় কর্তৃপক্ষের গুরুতর ত্রুটির দিকেই রাজ্য মানবাধিকার কমিশন নির্দেশ করেছে।
গত অগস্টে বাংলা প্রথম বর্ষের নবাগত পড়ুয়ার মৃত্যু বিশ্ববিদ্যালয় তথা রাজ্য প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবেই ঘটেছে বলে কমিশনের পর্যবেক্ষণ। এই অপূরণীয় ক্ষতির জন্য মৃতের পরিজনকে তারা দশ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের সুপারিশ করেছে।
বিগত ডিসেম্বরেই কমিশনের চেয়ারপার্সন, প্রাক্তন বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য এবং সদস্যা বিচারপতি মধুমতী মিত্র এই সুপারিশ করেন। তবে ক্ষতিপূরণের সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারেরই নেওয়ার কথা। মানবাধিকার কমিশনের ক্ষতিপূরণের সুপারিশের কথা তাঁদের জানানো হয়েছে বলেই মৃত ছাত্রের বাবা জানান। কমিশনের রিপোর্টে ইউজিসি তথা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিয়ম মেনে যাদবপুরের হস্টেল ব্যবস্থা সংস্কার করতে বলা হয়েছে। কমিশনের চেয়ারপার্সন সোমবার বলেন, “আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে যাদবপুর কর্তৃপক্ষকে দরকারি পদক্ষেপগুলির বিষয়ে জানাতে হবে।”
কমিশনের সুপারিশের মধ্যে যাদবপুরের নবাগত পড়ুয়াদের হস্টেলে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে বেআইনি দখলদার তথা প্রাক্তনীদের হস্টেল থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। কমিশনের পর্যবেক্ষণ, হস্টেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ছিটেফোঁটা নিয়ন্ত্রণ ছিল না। হস্টেলে জায়গা আঁকড়ে থাকা কিছু প্রাক্তনী বা বেআইনি দখলদারের মৌরসিপাট্টা চলত। ১৭ বছরের
মৃত ছাত্রটিই ন্যায্য দাবি সত্ত্বেও হস্টেলে খাতায়-কলমে ঠাঁই পায়নি। জনৈক প্রাক্তনীকে ধরাধরি করে সে মেন হস্টেলের তেতলায় এ টু ব্লকের ৬৮ নম্বর ঘরে ঢোকে। সেই সঙ্গে হস্টেলে কোথাও সিসি ক্যামেরা না-থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কমিশন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াডের তালিকায় সদস্যদের মধ্যে পুলিশ আধিকারিকদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য থাকার কথা। তা না-থাকা নিয়েও মানবাধিকার কমিশন অসন্তোষ প্রকাশ করে।
গত অগস্টের থেকে এখন পরিস্থিতি কিছুটা ভাল হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং সচেতনতা প্রচার কিংবা ইউজিসি-র নিয়ম মেনে হস্টেল ব্যবস্থা এখনও অনেক বাকি রয়েছে বলেই যাদবপুরের অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াডের অন্যতম সদস্য তথা বাংলার অধ্যাপক রাজ্যেশ্বর সিংহ জানাচ্ছেন। জুটা-র সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ও বলছেন, “পুলিশের খাতায় অভিযুক্তদের বাইরে মেন হস্টেলের ওই র্যাগিং-কাণ্ডে জড়িত কয়েক জন ছাত্র এখনও বহাল তবিয়তে ঘুরছেন। র্যাগিং বিরোধী স্কোয়াড, কমিটি তাঁদের শাস্তির সুপারিশ করলেও তা কার্যকর হয়নি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এ দিন বলেন, “ভিসি নিয়ে জটে কয়েক জন দোষীর শাস্তির প্রক্রিয়াটি থমকে আছে। একই ভাবে ইউজিসি-র সব নিয়মও মানা যাচ্ছে না। যেমন, শিক্ষকদের হস্টেলের ওয়ার্ডেন হিসেবে নিয়োগও করা যাচ্ছে না। তবে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের বেশির ভাগকেই মেন হস্টেল থেকে অন্যত্র সরানো সম্ভব হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy