স্বাস্থ্য ভবন। —ফাইল চিত্র।
হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরবর্তী এক ঘণ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ব্লক, মহকুমা বা জেলা স্তরের হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে শহরের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসতেই অনেকটা সময় কেটে যায়। ফলে, অনেক ক্ষেত্রেই ওই এক ঘণ্টার (গোল্ডেন আওয়ার) মধ্যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর প্রাণের ঝুঁকি তৈরি হয়। সেই সমস্যা কাটাতে ইতিমধ্যেই হৃদ্রোগের চিকিৎসায় টেলি-কার্ডিয়োলজি পরিষেবা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
এই ব্যবস্থায় রাজ্যের আটটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ পৌঁছে যাবে জেলার ছোট মাপের হাসপাতালগুলিতে। কিন্তু সেই পরামর্শ পাওয়ার আগে ওই হাসপাতালে আসা, হৃদ্রোগে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা শুরু হতে যাতে কোনও রকম বিলম্ব না হয় তার জন্য আদর্শ চিকিৎসা বিধি সম্বলিত ‘এসওপি’ তৈরি করল স্বাস্থ্য দফতর। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘এমনিতেই শীতকালে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। সেই জন্য চিকিৎসার প্রাথমিক প্রস্তুতিতে যাতে কোনও খামতি না থাকে, সে দিকে জোর দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে জেলার হাসপাতালেই প্রথমে চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া হবে। তার পরে তা দেখে বিশেষজ্ঞেরা পরবর্তী পরামর্শ দেবেন।’’
মঙ্গলবার ওই ‘এসওপি’ সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের পাশাপাশি সব সরকারি হাসপাতাল এবং জেলা ও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (এমআই) হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত ৪০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে ‘স্টেমি’ দেখা যায়। যাতে মৃত্যুর হার প্রায় ১৫ শতাংশ। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, রোগীর ইসিজির ধরনের উপরে ভিত্তি করে হার্ট অ্যাটাককে দু’টি ভাগে (স্টেমি ও নন-স্টেমি) ভাগ করা হয়। ইসিজি-র গ্রাফে পি, কিউ, আর, এস, টি বিন্দুগুলির মধ্যে এস এবং টি একটু বেশি উঁচু হয়ে থাকলে তাকে এসটি এলিভেশন মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন বা স্টেমি বলা হয়। আবার কারও ক্ষেত্রে ইসিজিতে এস এবং টি বিন্দু দু’টি উঁচু হয় না। তাকে বলা হয় নন-স্টেমি।
এসওপি-তে বিশদে জানানো হয়েছে, বুকে ব্যথা নিয়ে কোনও রোগী এলে প্রথমেই তাঁর ইসিজি ও ট্রোপোনিন-টি পরীক্ষার পাশাপাশি বুকের এক্স রে করে নিতে হবে। তার পরে স্টেমি ও নন-স্টেমি চিহ্নিত করে, সেই মতো নির্দিষ্ট চিকিৎসা শুরু করতে হবে। রোগীর যদি আগে কখনও ব্রেন স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে কিংবা রোগী যদি কোনও কারণে রক্ত পাতলা করার ওষুধ খান, তা হলে কোন ডোজ়ে, কোন ওষুধ প্রথমে দিতে হবে, তা-ও এসওপি-তে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, ওই চিকিৎসা শুরুর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট হাসপাতালটি যে মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে যুক্ত, সেখানে বিশদে জানাতে হবে। যাতে সেখান থেকে টেলি-মেডিসিন পরিষেবার মাধ্যমে হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞরা পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy