ভিডিয়ো থেকে নেওয়া ছবি।
কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে সুজাপুরে পুলিশ এবং অবরোধকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ, পুলিশের গাড়িতে আগুনের পর প্রকাশ্যে এল অন্য একটি ভিডিয়ো। সেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে উর্দিতে থাকা পুলিশ কর্মীরা সুজাপুর মোড়ে মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একের পর এক গাড়িতে ইট এবং লাঠি দিয়ে ভাঙচুর চালাচ্ছে। আনন্দবাজার ডিজিটাল ওই ভিডিয়োর কোনও সত্যতা যাচাই করেনি।
ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘হ্যাঁ, আমরা ভিডিয়োটা দেখেছি। স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কিছু গাড়িতে কয়েক জন কনস্টেবল এবং সিভিক ভলান্টিয়ারকে ভাঙচুর করতে দেখা গিয়েছে। সেগুলোর কোনওটাই পুলিশের গাড়ি নয়। আমরা ওই ব্যক্তিদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি, প্রয়োজনীয় এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
প্রদেশ কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের সাধারণ সম্পাদক নঈম আলি আলবেরুনি বলেন, ‘‘ওই ভিডিয়োটি আমরাই সংগ্রহ করেছি। ভিডিয়োতে দেখুন পুলিশ পরিকল্পনা করে কী ভাবে একটা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে ভাঙার জন্য নিজেরাই অশান্তি পাকালো।”
তবে, ওই ভিডিয়ো বুধবার বিকেলেই ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিয়োটিকে কেন্দ্র করে শুরু হয় রাজনৈতিক বিতর্ক। কারণ, সুজাপুরে হিংসার ঘটনার পরে তৃণমূলের তরফ থেকে দায়ী করা হয়েছিল সিপিএম-কংগ্রেসকে। তৃণমূলের মালদহ জেলার কার্যকরী সভাপতি বাবলা সরকার অভিযোগ করেন, ‘‘কংগ্রেস এবং সিপিএমের উস্কানিতেই ওই হিংসা হয়েছে।” পাল্টা মালদহ জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মোস্তাক আলম দাবি করেন, ‘‘তৃণমূল-বিজেপি পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অশান্তি পাকিয়েছে।”
নঈম এ দিন অভিযোগ করেন, ‘‘প্রথম থেকে আমাদের অবরোধ শান্তিপূর্ণ ছিল। পুলিশ বিনা প্ররোচনায় লাঠি-কাঁদানে গ্যাস চালায়। নিজেরাই নিজেদের গাড়ি জ্বালিয়ে আমাদের দোষী করছে। এই ভিডিয়ো সবচেয়ে বড় প্রমাণ যে, পুলিশই গাড়ি ভেঙেছে।” তিনি বলেন, ‘‘ওখানে রোজই বেশ কিছু গাড়ি থাকে। ওই গাড়িগুলো সুজাপুর থেকে মালদহ যায়। সেই গাড়ির সঙ্গে এ দিন রাস্তায় আটকে যাওয়া কিছু গাড়িও ছিল। পুলিশ সব গাড়ি এ ভাবেই ভেঙেছে।”
সুজাপুরের এই ঘটনা প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করেছে সিপিএম। দলের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম এ দিন সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে যোগীর পুলিশ যা করেছে, পশ্চিমবঙ্গে আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ ঠিক সেই কাজই করল। যোগীর পুলিশ ওখানে যে ভাবে গাড়ি ভাঙচুর করেছে, দোকানপাট ভাঙচুর করেছে, আজ মালদহের সুজাপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ সে ভাবেই গাড়ি ভাঙচুর করেছে।’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি-আরএসএসের হয়ে কাজ করছেন এবং পুলিশ ভাল পোস্টিং পাওয়ার আশায় এই ভাবে ধর্মঘটকে বদনাম করার চেষ্টা করেছে বলে সেলিম এ দিন অভিযোগ করেছেন।
ধর্মঘটের বিরুদ্ধে রাজ্য প্রশাসনের সক্রিয়তার নিন্দায় সরব হয়েছে কংগ্রেসও। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘‘নিজে যখন বিরোধী আসনে ছিলেন, তখন তো কম বন্ধ-অবরোধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেননি। এখন হঠাৎ সব ছেড়েছুড়ে সাধ্বী সাজার চেষ্টা করছেন কেন?’’ অধীর আরও বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে যদি আজ অশান্তি কিছু হয়ে থাকে, তা হলে তার পুরো দায় মমতার।’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ-প্রশাসনই প্ররোচনা দিয়ে অশান্তি তৈরি করেছে বলে অধীর এ দিন অভিযোগ করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy