‘উত্তম স্মরণ সন্ধ্যা’
বাংলার রুপোলি পর্দার রাজাকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন তাঁর ৯৮ তম জন্মবার্ষিকীতে। উত্তমকুমারের স্মৃতিতে গত ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতার উত্তম মঞ্চে এক বর্ণময় সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। উত্তমকুমার মেমোরিয়াল কালচারাল কমিটির তরফে প্রতি বছরই মহানায়ককে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে তাঁর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে মহা সমারোহে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ বারও তাঁর অন্যথা হয়নি। মহানায়কের স্মৃতির প্রতিই উৎসর্গীকৃত এই সংগঠন, ‘উত্তম কুমার মেমোরিয়াল কালচারাল কমিটি’। উত্তম কুমারের সামাজিক দায়বদ্ধতার যে দর্শন, তাকেই বৃহত্তর মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে প্রতি বছর ২৪ জুলাই এবং ৩ সেপ্টেম্বর দিনটি পরম মর্যাদায় পালন করা হয়।
বাংলার সঙ্গীত, চলচ্চিত্র ও নৃত্য জগতের শিল্পীরা তাঁদের সৃজনমাধ্যমে মহানায়ককে সম্মান জানাতে এই মঞ্চে উপস্থিত হন। উত্তম কুমার মেমোরিয়াল কালচারাল কমিটির তরফে জীবিত কিংবদন্তী শিল্পীদের তাঁদের কীর্তির জন্যে ‘উত্তম কুমার স্মারক সম্মান’ প্রদান করা হয়। যে সব দুঃস্থ নেপথ্য শিল্পী উত্তম কুমারের সঙ্গে কর্মসূত্রে যুক্ত ছিলেন, যথাসাধ্য আর্থিক সাহায্য এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে তাঁদের পাশে থাকারও চেষ্টা করা হয়। এ বছর উত্তম কুমারের জন্মবার্ষিকীতে সাহায্য পেয়েছেন শঙ্কর দাস।
তিনি অসুস্থ থাকায় তাঁর স্ত্রী মায়া দাস এই পুরস্কার গ্রহণ করেন। ‘পিয়ারলেস হসপিটাল’-এর পক্ষ থেকে এই ‘হেলথ কেয়ার সাপোর্ট’ দেওয়া হয়। মহানায়কের বহু ছবিতে শঙ্কর দাস প্রোডাকশন অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেছিলেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি উত্তম কুমারের অভিনয় ধারা নিয়েও একটি বিশ্লেষণাত্মক আলোচনার আয়োজন করা হয়েছিল। ভিন্নধর্মী এই আলোচনার মাধ্যমে মহানায়কের সিনেমাটিক ভাষার উপর দখল এবং তার সফল প্রয়োগ বিশ্লেষণ করে কিছু অজানা দিককেও তুলে ধরা হয়। এই মনোজ্ঞ আলোচনাটির সঞ্চালনায় ছিলেন অভিনেতা কুশল চক্রবর্তী। “আদরে সমাদরে স্মৃতিচারণায় মহানায়ক” শীর্ষক এই আলোচনায় শামিল হন স্বনামধন্য অভিনেতা সুমন্ত মুখোপাধ্যায়, পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী এবং অভিনেতা খরাজ মুখোপাধ্যায়।
অভিনেতা সুমন্ত মুখোপাধ্যায় মহানায়ক সম্পর্কে বলেন, “একজন সফল অভিনেতা হতে গেলে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এ কথা আমাদের কারওরই অজানা নয়। কিন্তু উত্তম কুমারের প্রতিভা ছিল একদম অন্য রকম। যতই পরিশ্রম করি না কেন, কোনও দিন ওই উচ্চতায় পৌঁছতে পারব না। সে চেষ্টা করাও বৃথা। আমরা যখন অভিনয় করি, তখন সেই চরিত্র হয়ে ওঠার চেষ্টা করি। উত্তম কুমার সেই চরিত্রটিই হয়ে উঠতে পারতেন।”
এ ছাড়াও এই সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় মহানায়ককে নৃত্যের মাধ্যমে শ্রদ্ধার্পন করেছেন কলকাতার বিশিষ্ট নৃত্য গুরুরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পলি গুহ, মালবিকা সেন, ঊর্মিলা ভৌমিক, কোহিনুর সেন বরাট, দ্রাবিন চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে।
জীবন কৃতি সম্মানে সম্মানিত করা হয় স্বনামধন্যা অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়কে। যদিও কিছু বিশেষ কারণবশত সশরীরে উপস্থিত হতে পারেননি। এ ছাড়াও গানে গানে মহানায়ককে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এই প্রজন্মের অন্যতম সেরা সঙ্গীতশিল্পী গৌরব সরকার ও অরিত্র দাশগুপ্ত। মহানায়কের গানে অরিত্র, চন্দন এবং গৌরবের ‘আনপ্লাগড জ্যামিং’ দর্শককে মাতিয়ে দিয়েছিল।
এ বছরেও দারুণ ভাবে সাফল্যমণ্ডিত হল ‘উত্তম স্মরণ সন্ধ্যা’।
অনুষ্ঠানের ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার আনন্দবাজার অনলাইন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy