জোড়া দেহ: এই ভাবেই পড়ে ছিল দুই হাতির দেহ। নিজস্ব চিত্র
বিশ্ব হাতি দিবসে মৃত্যু হল দুই মাদী হাতির। বুধবার সকালে বক্সার ভুতরির জঙ্গল থেকে পাঁচ বছর ও তিন বছর বয়সের হাতি দুটোর দেহ উদ্ধার হয়। বন দফতরের অভিযোগ, ওই এলাকার উপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের এগারো হাজার ভোল্টের তার থেকে শর্ট সার্কিটের কারণে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতি দু’টির মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর-ও দায়ের দায়ের করেছেন বনকর্তারা। বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা অবশ্য শর্ট সার্কিটের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
বন দফতর সূত্রের খবর, ভুতরির জঙ্গলটি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের হ্যামিল্টনগঞ্জ রেঞ্জের অধীনে পড়ে। প্রতিদিনই ওই জঙ্গলে নিয়ম করে টহল দেন ভুতরি বিটের বনকর্মীরা। বুধবার সকালে সেই টহলদারির সময়ই ভুতরি-১ কম্পার্টমেন্টে হাতি দু’টির দেহ পড়ে থাকতে দেখেন বনকর্মীরা। ওই এলাকার খুব কাছাকাছি কোনও জনবসতি নেই। কিন্তু ওই এলাকার উপর দিয়ে জঙ্গল হয়ে হ্যামিল্টনগঞ্জ থেকে সেন্ট্রাল ডুয়ার্স পর্যন্ত বিদ্যুতের এগারো হাজার ভোল্টের তার গিয়েছে। বনকর্তারা জানিয়েছেন, বয়সে বড় হাতিটির শরীর লোহার বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে লেগে ছিল। আর ছোট হাতিটি বড় হাতির সঙ্গে স্পর্শ করে ছিল।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা শুভঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘হাতি দু’টিকে ওভাবে পড়ে থাকতে দেখেই বনকর্মীরা নিশ্চিত হন ওরা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই মারা গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ দফতরকে খবর দেওয়া হয়। দফতরের কর্মীরা এসে সেখান দিয়ে যাওয়া লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার পর হাতি দু’টির কাছে যাওয়া হয়।
ক্ষেত্র অধিকর্তা বলেন, ‘‘বৃষ্টির জন্য ওই এলাকার মাটি ভেজা ছিল। সে জন্যই হয়তো এগারো হাজার ভোল্টের তার থেকে শর্ট সার্কিটের ফলে ওই লোহার খুঁটি ও আশপাশের জায়গাটিতেও বিদ্যুৎ সংযোগ হয়ে যায়।’’
তবে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার আলিপুরদুয়ারের ডিভিশনাল ম্যানেজার দীপেন খাওয়াস বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট কিংবা বিদ্যুতের খুঁটি ও আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ হয়ে যাওয়ার কোনও তথ্যপ্রমাণ তাঁরা পাননি। শুভঙ্করবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতি দু’টির মৃত্যু হয়েছে ঠিকই, তবে এটা একটা দুর্ঘটনা। সে জন্য বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে এফআইআর-ও করা হয়েছে।’’
গত ১৬ জুন বক্সার মারাখাতা জঙ্গলের কাছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একটি হাতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল হয়েছিল। পরে জলদাপাড়া ও জলপাইগুড়ি বন বিভাগের দলগাঁও রেঞ্জের অধীনে একই ভাবে আরও দু’টি হাতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। আর এ বার ভুতরির জঙ্গলে দু’টি হাতির মৃত্যু হল। পরিবেশ প্রেমী সংগঠন ন্যাফের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, “বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পরপর হাতির মৃত্যুর ঘটনা সত্যিই বেদনাদায়ক। এ ধরনের ঘটনা রুখতে উত্তরবঙ্গে বন ও বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে সেল তৈরি করা হয়েছে। সেই সেলের আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy