প্রতীকী ছবি।
তিন বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর গ্রেফতার হয়েছে তৃণমূল নেতার ছেলে তথা ঘটনায় অভিযুক্ত নাবালক। তবে তার পর থেকেই ধর্ষণের মামলা প্রত্যাহার করার হুমকি পাচ্ছে শিশুর পরিবার। ওই পরিবারের কর্তাকে প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকি, তাদের পানীয় জল বন্ধ করে দেওয়া থেকে শুরু করে এলাকায় কার্যত ঘরবন্দি করে রাখা হয়েছে। মালদহের গাজোল থানার ভক্তিপুরের স্থানীয় তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছে শিশুর পরিবার। এই ঘটনা নিয়ে অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দোষীর শাস্তির দাবিতে সরব হলেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে জঙ্গলরাজের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভক্তিপুরের বাসিন্দা ওই শিশুকে ২৩ অক্টোবর ধর্ষণ করে বলে গ্রামেরই এক নাবালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ। এ নিয়ে শিশুর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই নাবালককে আটক করে গাজোল থানায় পুলিশ। আপাতত তাকে জুভেনাইল হোমে পাঠানো হয়েছে। তবে ওই শিশুর পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর থেকেই ধর্ষণের মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন ওই নাবালকের বাবা তথা এলাকার তৃণমূল নেতা বল্টু রায় ও তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। এমনকি, গ্রামের কল থেকে পানীয় জলও নিতে দিচ্ছেন না তাঁরা। বাড়ি থেকে বেরোলেই খুনের হুমকি পাচ্ছে ওই শিশুর পরিবার। কার্যত গৃহবন্দি হয়ে দিন কাটছে তাদের। বাধ্য হয়ে নিরাপত্তা চেয়ে জেলার পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। শিশুটির মা’র দাবি, ‘‘ধর্ষণের কেস তুলে নেওয়ার জন্য আমাদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। আমার স্বামীকে খুনের হুমকিও দিচ্ছে। ওরা তৃণমূল করে বলেই এত সাহস পাচ্ছে। খুব ভয়ে ভয়ে রয়েছি।’’
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ-প্রশাসন। মালদহ জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ওই শিশুর পরিবারের অভিযোগ পেয়েছি। গুরুতর অভিযোগ। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হবে। গাজোল থানার পুলিশ আধিকারিককে এ নিয়ে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।’’
তবে গোটা ঘটনাটি ঘিরে তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। মালদহ জেলা বিজেপি-র সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘ঘটনার পর দোষীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভাল কথা! কিন্তু গ্রেফতারির পরের ঘটনা আরও বেদনাদায়ক। ৩৪ বছরে বিরোধী পক্ষকে চাপে রাখার জন্য বিরোধীদের ধোপা-নাপিত, দোকান-হাটবাজার বন্ধ করে দিয়েছিল সিপিএম। তার যোগ্য উত্তরসূরি হয়েছে তৃণমূল। যে ছেলেটি এত বড় অপরাধ করেছে, সে তৃণমূলআশ্রিত। শাসকদলের আশ্রয়ে থেকে নির্যাতিতার পরিবারকে বয়কট করতে বাধ্য করেছে দোষীর বাড়ির লোকজন। জল পর্যন্ত নিতে দিচ্ছেন না। ঘরবন্দি হয়ে রয়েছে নির্যাতিতার পরিবার। যেন সিপিএমের যুগ ফিরে এসেছে। মানুষ এদের ক্ষমা করবে না।’’
এই ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। নির্যাতিতার পরিবারের পাশে থাকবে দল ও প্রশাসন। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘শিশুর উপর নির্যাতন। মামলা তোলার জন্য পরিবারকে মানসিক চাপ দেওয়া। একঘরে করে রাখার চেষ্টা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনে এমন হতে পারে না। তৃণমূলের হোক বা অন্য দলের নেতা— প্রশাসনকে আবেদন করেছি অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy