E-Paper

দাদা নেই, ঠাকুর দেখতে যাবে না মৃত ছাত্রের ভাই

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালেয়ে পড়তে গিয়ে রহস্যজনক ভাবে মারা গিয়েছেন নদিয়ার এই তরুণ। পড়াশোনায় বরাবরই ভাল ছিলেন। তাঁর মৃত্যু কার্যত নাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য রাজনীতিকে।

jadavpur university hostel.

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেল। —ফাইল চিত্র।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:১২
Share
Save

খুব ফুচকা খেতে ভালবাসত দাদাটা। ষষ্ঠীর সকালে ভাইকে সাইকেলে চাপিয়ে মণ্ডপ থেকে মণ্ডপে ঘুরে ঘুরে প্রতিমা দেখত। তারই ফাঁকে দাঁড়িয়ে যেত ফুচকার দোকানে। একটা, দুটো, তিনটে— একের পর এক ফুচকা মুখে পুরে দিতে সে। এই পর্যন্ত বলে একটু চুপ করে থাকে যাদবপুরে মৃত ছাত্রের ভাই। তার পরে বোধহয় কান্নাটাকে সামলে সে বলে, “খুব ভালবাসত ফুচকা খেতে।”

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালেয়ে পড়তে গিয়ে রহস্যজনক ভাবে মারা গিয়েছেন নদিয়ার এই তরুণ। পড়াশোনায় বরাবরই ভাল ছিলেন। তাঁর মৃত্যু কার্যত নাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য রাজনীতিকে।

মিছিল, প্রতিবাদ সভা, বাড়িতে নিত্য লোকজনের ভিড়। তার মধ্যেও কিন্তু ভাইকে বিশেষ দেখা যেত না। এক কোণে নিজেকে সরিয়ে রেখেছিল সে। দাদার মৃত্যুর ধাক্কা যেন মুখচোরা কিশোরকে আরও একা করে দিয়েছিল। একাই চোখের জল ফেলেছে মৃত ছাত্রের থেকে তার বছর দুয়েকের ছোট ভাই।

তাদের দু’জনেরই তেমন বন্ধু ছিল না। প্রয়োজনও হয়নি। কারণ বরাবরই তারা একে অন্যের বন্ধু। পুজোর দিনগুলিতে দুই ভাই একসঙ্গেই বার হত ঠাকুর দেখতে। ষষ্ঠীর দিন সকালে বগুলার ঠাকুর দেখে ফুচকা-এগরোল খেয়ে বিকেলে রানাঘাটে মামার বাড়িতে চলে আসত তারা। সঙ্গে বাবা-মা। সেখানেও একসঙ্গে মামাতো দাদা-বোনদের সঙ্গে ঠাকুর দেখা। তার মাঝেও দুই ভাই পাশাপাশি হাত ধরাধরি করে চলত। দাদা ছেড়ে গিয়েছে সেই হাত। ভাই এখনও হাত মুঠো করে আছে।

পুজোর বাদ্যি শুনতে শুনতে ভাই এখন বলে, “এক বার আমরা সবাই মিলে ঠাকুর দেখতে বের হয়েছি। একটা মণ্ডপের সামনে খিচুরি দিচ্ছিল। হঠাৎ দাদা দাঁড়িয়ে গেল খেতে। দাদাটা এমন ছিল, জানেন। বড্ড ভাল, নরম মনের মানুষ।” কিছু ক্ষণ চুপ। ফের বলতে শুরু করে কিশোর, “দাদা-ই আমার জামা-প্যান্ট পছন্দ করে দিত। ওর পছন্দ খুব ভাল ছিল।”

আবার একটা পুজো এসে গেল। মণ্ডপে মাইক বাজতে শুরু করেছে, রাস্তায় নেমেছে মানুষের ঢল। তার মধ্যে তাদের মতো কত ভাই একে অন্যের হাতে হাত রেখে ঘুরছে।
তার মামা এর মধ্যেও তাকে জোর করে একটা জামা-প্যান্ট কিনে দিয়েছে। মামাতো ভাই-বোনেরা বলছে, ঠাকুর দেখতে বার হওয়ার জন্য। কিন্তু কিশোর বার হবে না। প্রসঙ্গটা উঠতেই ঢোক গিলে নিয়ে সে বলে, “দাদা নেই। আমি কি ঠাকুর দেখতে যেতে পারি!”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jadavpur University Student Death Jadavpur University Death Durga Puja 2023

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।