বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরই বড় দায়িত্ব পেলেন হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। বুধবার তাঁকে রাজ্যের নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজকল্যাণ দফতর চেয়ারপার্সন পদে নিয়োগ করা হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, এই দায়িত্ব তৃণমূলে যোগদানের ‘পুরস্কার’।
তাপসী ২০২১ সালে বিজেপির টিকিটে হলদিয়া বিধানসভা আসন থেকে জয়ী হয়েছিলেন। তবে বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিজেপির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব ক্রমশ বাড়তে থাকে। গত ১০ মার্চ তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দেন। এর পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার তাঁকে এই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাল।
অন্য দিকে, তাপসীর তৃণমূলে যোগদানের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার হলদিয়াতে জনসভা করবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
আরও পড়ুন:
তাপসীর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়ার অন্য ‘রাজনৈতিক তাৎপর্য’ও রয়েছে। প্রথমত, তাপসী শুভেন্দুর নেতৃত্বাধীন পরিষদীয় দলের সদস্য। দ্বিতীয়ত, তিনি শুভেন্দুর নিজের জেলার নেত্রী এবং বিধায়ক। তাপসী একটা সময়ে ছিলেন সিপিএমে। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে যখন গোটা রাজ্যে তৃণমূলের জয়জয়কার, সেই নির্বাচনে তাপসী কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী হিসেবে হলদিয়া আসনটিতে জেতেন। প্রসঙ্গত, তৃণমূলের তরফে শুভেন্দু নিজে তখন হলদিয়া ‘দেখভাল’ করতেন। কিন্তু তৎসত্ত্বেও সিপিএমের হয়ে জিতেছিলেন তাপসী। তার পরে তিনি সেই শুভেন্দুর হাত ধরেই দলবদল করেন। শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যান। তাপসী বিজেপিতে যান সিপিএম ছেড়ে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তাপসী হলদিয়া থেকে বিজেপির টিকিটে লড়েন। আবার জয়ী হন। এত দিন শুভেন্দুর ‘ঘনিষ্ঠ’ বৃত্তেই তাঁকে দেখা গিয়েছে। কিন্তু শুভেন্দু ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে যখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর ক্রমশ চড়াচ্ছেন, তখন তাঁর ‘আস্থাভাজন’ তাপসীই দল ছেড়ে তৃণমূলে চলে গেলেন। বিরোধী দলনেতার জন্য এই ভাঙন ‘অস্বস্তিজনক’ বলেই মনে করা হচ্ছে।