শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের নিয়োগ বাতিলের রায় সাময়িক ভাবে শিথিল হবে কি না, সেই আর্জি আজ, বুধবার শুনবে সুুপ্রিম কোর্ট। সোমবারই শীর্ষ আদালতে এই আর্জি দাখিল করেছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। মঙ্গলবার বিষয়টি ফের দেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার এজলাসে উত্থাপন করেন পর্ষদের আইনজীবী। আদালত জানিয়েছে, আজ, বুধবার মামলাটির শুনানি হতে পারে। প্রসঙ্গত, এই মামলায় পর্ষদের বক্তব্য, রাজ্যের স্কুলগুলিতে পড়ুয়া এবং শিক্ষকের অনুপাত রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযান নির্ধারিত অনুপাতের তুলনায় বহু কম। এই অবস্থায় এত শিক্ষকের চাকরি বাতিল হলে পঠনপাঠন কার্যত শিকেয় উঠতে পারে। শিক্ষাকর্মীদের চাকরি বাতিল হলেও স্কুলে সাফাই এবং অন্যান্য কাজকর্ম ব্যাহত হবে।
সুপ্রিম কোর্টের কাছে পর্ষদের আর্জি, চলতি শিক্ষাবর্ষের শেষ পর্যন্ত অথবা যত দিন না নতুন করে নিয়োগ হচ্ছে তত দিন যাতে এই শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা চাকরি করতে পারেন, সেই অনুমতি দিক আদালত। তবে এসএসসি যে হাজার পাঁচেক শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীকে ‘দাগি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে তাঁদের পর্ষদ নিজের আর্জির অন্তর্ভুক্ত করেনি। পর্ষদ নিজের আর্জিপত্রে জানিয়েছে যে ‘দাগি’ হিসেবে চিহ্নিত নন, এমন প্রার্থীদেরই সাময়িক ভাবে চাকরি করার অনুমতি দিক শীর্ষ আদালত।
এই আর্জি নিয়ে এ দিন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের প্রধান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘দ্রুত নিয়োগ করার কথা বলে আর্জি জানানো হলে এই আর্জির সদর্থক দিক বুঝতাম। কিন্তু অবৈধ প্রক্রিয়ায় নিযুক্তদের রেখে দেওয়ার জন্য এই সওয়াল করা হচ্ছে!’’ আইনজীবীদের একাংশ এ-ও বলছেন যে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দায়িত্বে থাকে না। সেই দায়িত্ব এসএসসি-র। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে কবে নিয়োগ করা হবে, সে ব্যাপারে কোনও কথা এসএসসি বলছে না। তা হলে পরবর্তী নিয়োগ কবে হবে, সে ব্যাপারে কোর্টে দায়িত্ব নেবে কে? প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি পর্ষদ এই আর্জি জানিয়ে কোনও ভাবে সময় নিতে চাইছে?
স্কুলশিক্ষকদের অনেকে অবশ্য বলছেন, নিয়োগ বাতিলের পর থেকে বহু স্কুলই শিক্ষকের অভাবে রীতিমতো ধুঁকছে। কোথাও অর্ধেক, কোথাও বা এক-তৃতীয়াংশ পদ খালি হয়ে গিয়েছে। কোনও কোনও স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষকও নেই। এই পরিস্থিতিতে কোনও ভাবে এ বছর সামলে দেওয়ার উপায় বাছতেই পর্ষদ রায়ে সাময়িক শৈথিল্যের আর্জি জানিয়েছে বলে মনে করছে শিক্ষকদের একাংশ।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)