বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে চাকরিপ্রার্থীরা। ছবি: সারমিন বেগম।
মঙ্গলের পর বুধবারও কলকাতা হাই কোর্টে যাননি তিনি। এই পরিস্থিতিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতেই চলে গেলেন চাকরিপ্রার্থীরা। বিচারপতিও নীচে নেমে এসে কথা বললেন তাঁদের সঙ্গে। দিলেন পরামর্শও।
২০১৬ সালের এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের কয়েক জন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সল্টলেকের বাড়িতে চলে যান। চাকরিপ্রার্থীরা তাঁর বাড়ির নীচে এসেছেন শুনে বিচারপতিও নেমে এসে কথা বললেন তাঁদের সঙ্গে। চাকরিপ্রার্থীদের মূল অভিযোগ ছিল, দিনের পর দিন কেটে যাচ্ছে, কিন্তু যোগ্যপ্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা চাকরি পাচ্ছেন না! চাকরিপ্রার্থীদের মুখে তাঁদের সমস্যার কথা শুনে কাউকে ফোন করতে দেখা যায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে। ফোনে কথা বলা শেষ করে চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশে বিচারপতির বক্তব্য, তাঁদের চাকরিতে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাটি হাই কোর্টের আর এক বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে বিচারাধীন। ওই মামলায় বিচারপতি বসুর একটি নির্দেশের কারণেই বিষয়টির এখনও ফয়সালা হয়নি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁদের জানান, আদালতে তাঁদের হয়ে যে সব আইনজীবী লড়ছেন, এই বিষয়টি নিয়ে তাঁদের সঙ্গেই কথা বলা উচিত।
বুধবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে যাঁরা গিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকের হাতেই পোস্টার ছিল। কয়েকটি পোস্টারে লেখা, ‘‘আমরা ভগবান দর্শনে এসেছি। ভগবান আমাদের উদ্ধার করুন।’’ এক চাকরিপ্রার্থীকে রাস্তায় বসে পড়ে কান্নাকাটিও করতে দেখা যায়। চাকরিপ্রার্থীরা বিচারপতিকে জানান, অনেক দিন ধরেই তাঁদের মামলা চলছে আদালতে। তার পরেও চাকরি পাওয়ার কোনও আশা দেখছেন না তাঁরা! এ দিকে মামলার খরচ জোগানোর মতো সামর্থ্যও আর তাঁদের নেই। এ কথা শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁদের ‘লিগ্যাল এইড সেল’-এ যাওয়ার পরামর্শ দেন। জানান, চাকরিপ্রার্থীরা আবেদন করলে ওই সেল থেকে তাঁদের যাবতীয় সাহায্য করা হবে।
শেষে চাকরিপ্রার্থীদের কাছে বিচারপতি জানতে চেয়েছিলেন, তাঁদের কে পাঠিয়েছে? জবাবে চাকরিপ্রার্থীরা জানান, কারও কথায় আসেননি তাঁরা। নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে এসেছেন। না জানিয়ে এ ভাবে তাঁর বাড়ির নীচে চলে আসার জন্য বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমাও চান চাকরিপ্রার্থীদের কেউ কেউ। তাঁদের উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ‘‘না না, ক্ষমা চাওয়ার কিছু নেই। আপনারা সমস্যায় পড়ে এসেছেন। আমি এক নাগরিকের মতো আপনাদের সাহায্য করার চেষ্টা করলাম। নিজের সাধ্য মতো পরামর্শ দিলাম।’’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার পর এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের কয়েক জন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বাড়িতেও যান। বাড়ির মূল ফটকের সামনে বসে পড়েন তাঁরা। চাকরিপ্রার্থীদের এক জন জানান, কুণালের সঙ্গে তাঁদের ফোনে কথা হয়েছে। তিনি বাড়িতে নেই। তবে আগামী ২২ ডিসেম্বর অর্থাৎ, শুক্রবার তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন।
এক চাকরিপ্রার্থীর কথায়, ‘‘শুধু আইনি প্রক্রিয়ায় সমস্যার সমাধান হবে না। সরকারের সদিচ্ছা থাকতে হবে। সরকারকেও সক্রিয় হতে হবে। সরকার চাইলে তবেই হবে। নয়তো মামলা চলতেই থাকবে দিনের পর দিন।’’ কিন্তু কুণালের বাড়িতে কেন? এর জবাবে চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘যে হেতু উনি আগে মধ্যস্থতা করেছিলেন। তাই ওঁর সঙ্গেই দেখা করতে চাই আমরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy