ফাইল চিত্র।
স্ত্রী রেণু খাতুনের কব্জি কেটে দেওয়ার ঘটনায় পূর্ব বর্ধমান থেকে গ্রেফতার হলেন মূল অভিযুক্ত তথা তাঁর স্বামী শের মহম্মদ। মঙ্গলবার তাঁকে পূর্ব বর্ধমান-মুর্শিদাবাদ সীমানা থেকে গ্রেফতার করেছে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বিকেলে পূর্ব বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদ জেলার সীমানায় হলদি গ্রামের কাছ থেকে শের মহম্মদকে গ্রেফতার করা হয়। স্ত্রীর হাত কাটার সময় শনিবার রাতে কেতুগ্রামের বাড়িতে শের মহম্মদ ছাড়াও আরও দু’জন ছিলেন বলে অভিযোগ। কব্জি কাটার ঘটনায় শের মহম্মদকে ওই দু’জন সাহায্য করেছিলেন। তবে ওই দু’জন অভিযুক্তের পরিচয় এখনও জানতে পারেনি পুলিশ।
ধৃত শের মহম্মদকে বুধবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে হাজির করা হবে বলে জানান কাটোয়ার এসডিপিও কৌশিক বসাক। তিনি আরও জানিয়েছেন, ধৃত শের মহম্মদের খোঁজে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূম জেলার সীমানা এলাকায় নজরদারি চালায়। এসডিপিও বলেন, ‘‘যে তিন জনের নাম এফআইআরে ছিল, তাদের প্রত্যেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনার পিছনে কী উদ্দেশ্য ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’
রেণুর শ্বশুর সিরাজ শেখ এবং শাশুড়ি মেহেরনিকা বিবিকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, মঙ্গলবার ভোরে তাঁরা পালানোর চেষ্টা করছিলেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই শের মহম্মদের হদিস জানার চেষ্টা চালাচ্ছিল পুলিশ। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন এই কাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে কেতুগ্রামের বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে ধারালো অস্ত্রের কোপে রেণুর ডান হাতের কব্জি কেটে নেওয়া হয় বলে তাঁর স্বামী শের মহম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগ। প্রথমে হাতুড়ি দিয়ে রেণুর ডান হাত থেঁতলে ফেলা হয়। তার পরে টিন কাটার কাঁচি দিয়ে তাঁর ডান হাতের কব্জি কেটে নেওয়া হয় বলে শের মহম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার সময় শের মহম্মদের দু’তিন জন বন্ধুবান্ধবও উপস্থিত ছিলেন বলেও দাবি রেণুর পরিবারের। রেণুর মা-বাবার দাবি, সরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরি পাওয়ার পর তাঁকে ছেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় এই কাণ্ড করেছেন শের মহম্মদ।
রেণুর পরিবারের আরও দাবি, অচৈতন্য অবস্থায় রেণুকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁদের জামাই। সে সময় রেণুর শ্বশুর তাঁদের ফোন করে কাটা হাতটি বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে বলেন। কেতুগ্রামে পৌঁছে রেণুর শ্বশুরবাড়ি থেকে ওই হাতটি নিয়ে কাটোয়া হাসপাতালে পৌঁছলে তাঁদের জামাই সেখান থেকে পালিয়ে যান বলেও অভিযোগ। এর পর রেণুকে প্রথমে বর্ধমান এবং পরে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। রবিবার দুর্গাপুরের ওই হাসপাতালেই রেণুর ডান হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, আপাতত সুস্থ রয়েছেন রেণু। ওই অবস্থায় স্বামীর গ্রেফতারির পাশাপাশি এই ঘটনায় চক্রান্তকারীদের কঠোর শাস্তির দাবিও করেন। মঙ্গলবার দেখা যায়, হাসপাতালে বিছানায় বসেই বাঁ-হাতে লেখার চেষ্টা করছেন রেণু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy