হুগলির প্রোমাটার অয়নের বিরুদ্ধে পুরসভার চাকরি বিক্রির অভিযোগ এনেছে ইডি। তার জন্য তিনি ওএমআর শিট বিকৃত করেছেন বলেও ইডি সূত্রে খবর। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
চাকরি ‘বিক্রি’র ‘রেট চার্ট’ ছিল অয়ন শীলের। ‘রেট’ অনুযায়ী টাকা দিলে চাকরি ছিল বাঁধা। টাকা নিলে কাজ হতই— সে চাকরিপ্রার্থী উত্তরের খাতায় যা-ই লিখে আসুন না কেন। যথাসময়ে ঠিক বদলে যেত খাতা। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সূত্রে জানা গিয়েছে এমনই তথ্য। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, অয়নের তৈরি করা চাকরি ‘বিক্রি’র ‘রেট চার্ট’ও।
হুগলির প্রোমোটার অয়নের বিরুদ্ধে পুরসভার চাকরি ‘বিক্রি’র অভিযোগ এনেছে ইডি। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, অয়নের কাছ থেকে পাওয়া বেশ কিছু নথিতে বরাহনগর, কামারহাটি, পানিহাটি, উত্তর এবং দক্ষিণ দমদম-সহ বহু পুরসভার নাম উল্লেখ রয়েছে তা থেকে তাঁদের অনুমান, ওই সব পুরসভায় চাকরি ‘বিক্রি’ করে তাকতে পারেন অয়ন। তাঁদের ধারণা, অন্তত ৬০টি পুরসভার চাকরি ‘বিক্রি’ করছেন অয়ন। মনে করা হচ্ছে, এই চাকরি ‘বিক্রি’র কারবার শুরু হয়েছে ২০১৪-২০১৫ সাল থেকে। কত দিন পর্যন্ত ওই ‘বিক্রি’র কারবার চলেছে, না কি এখনও চলছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
সোমবার ইডির ওই সূত্রে জানা গিয়েছে, অয়ন ওই পুরসভাগুলিতে বিভিন্ন পদে চাকরি বিক্রি করতেন। শ্রমিক, কেরানি, গাড়িচালক, গ্রুপ-সি— এক একটি পদের চাকরির ‘মূল্য’ এক এক রকম। তবে ন্যূনতম ৪ লক্ষ টাকা। আর সর্বোচ্চ ৭-৮ লক্ষ টাকা। অবশ্য প্রার্থীর চাহিদা, আর্থিক অবস্থা দেখে মাঝে মধ্যে বদলেও যেত দর। তবে ৪ লক্ষের নীচে নামত না। এমনই দাবি ইডির ওই সূত্রের।
শ্রমিকের চাকরির জন্য ৪ লক্ষ টাকা নিতেন অয়ন। কেরানি হলে ৫ লক্ষ, গাড়িচালকের পদের জন্য ৪ লক্ষ টাকা আর গ্রুপ-সি-র জন্য নেওয়া হত ৭-৮ লক্ষ টাকা। ইডির ওই সূত্রে জানা গিয়েছে, ওএমআর শিট বিকৃত করা ছিল অয়নের ‘বাঁ হাতের খেলা’! এ জন্য বিভিন্ন পদ্ধতিও ব্যবহার করতেন তিনি। চাকরিপ্রার্থীদের শুধু টাকা দিয়ে দিতে হত। আর বসতে হত পরীক্ষায়। ইডির ওই সূত্রের দাবি, এর পর পরীক্ষার খাতা চাকরি পাওয়ার যোগ্য করে তুলতেন অয়ন। কখনও নকল ওএমআর শিট বানিয়ে, কখনও বা উত্তরপত্র সম্পূর্ণ বদলে দিয়ে।
উল্লেখ্য, অয়নের বাড়িতে প্রায় ৩৭ ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়ে রবিবার তাকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। অয়নের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৫০ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে চাকরির পরীক্ষার একাধিক উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট এবং তার প্রতিলিপি। সেই সঙ্গে বেশ কিছু অ্যাডমিট কার্ডও পেয়েছেন তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে দাবি, অয়নের কাছ থেকে যে সমস্ত ওএমআর শিটের প্রতিলিপি মিলেছে, সেগুলি পুরসভা সংক্রান্ত পরীক্ষার। এ ছাড়া, ২০১২ এবং ২০১৪ সালের চাকরির পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড অয়নের বাড়িতে খুঁজে পেয়েছেন ইডি আধিকারিকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy