পূর্বপল্লির এই মাঠে ২০১৯-এর পরে ফের বিশ্বভারতীর আয়োজনে হবে পৌষমেলা। নিজস্ব চিত্র।
আবার পূর্বপল্লির মাঠে পৌষমেলার আয়োজন করতে চলেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। বুধবার বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে দীর্ঘ বৈঠকের পরে এমন সিদ্ধান্তে নিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। ২০১৯ সালের পরে বিশ্বভারতীর মেলা করার সিদ্ধান্তে খুশি স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বোলপুর, শান্তিনিকেতনের বাসিন্দারা।
বৈঠকের পরে এ দিন বিশ্বভারতী ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ বলেন, “বৈঠকে সর্ব-সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এ বার বিশ্বভারতী ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট পৌষমেলার আয়োজন করবে।’’ জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, “এটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে পৌষমেলা তার নিজের জায়গায় হচ্ছে। আমরা সবরকম ভাবে বিশ্বভারতীকে সহযোগিতা করব। আমরাও চাই সকলে এক সঙ্গে মিলে এই মেলা হোক।”
২০১৯ সালে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট এবং বিশ্বভারতীর আয়োজনে পূর্বপল্লির মাঠে শেষ বার হয়েছিল পৌষমেলা। ২০২০ সালে করোনা অতিমারি ও ২০২১, ২০২২-এ নানা কারণ দেখিয়ে মেলা করেনি বিশ্বভারতী। তার পরিবর্তে দু’বারই বোলপুর ডাকবাংলো ও স্টেডিয়াম মাঠ জুড়ে হয়েছিল বিকল্প পৌষমেলা। গত বছর বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী মেয়াদ শেষ হয়। তার পরে পূর্বপল্লির মেলার মাঠে ফিরে আসে পৌষমেলা। তবে গত বারও সেই মেলার আয়োজন করেনি বিশ্বভারতী। শর্তসাপেক্ষে জেলা প্রশাসনকে মেলা করার জন্য পূর্বপল্লির মাঠ দিয়েছিল বিশ্বভারতী। ভার্চুয়ালি সে মেলার উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, এ বছরও মেলার আয়োজন নিয়ে সংশয় ছিল। কারণ, আয়োজনের জন্য বেশি দিন সময়ও সেই। এ দিন বিশ্বভারতীর কর্মী পরিষদের তরফে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সভাকক্ষে পৌষমেলা নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকে ছিলেন বিশ্বভারতী ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিনয়কুমার সরেন, ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো, শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার, সমস্ত ভবনের অধ্যক্ষ, ডিরেক্টর, আধিকারিক, কর্মী মণ্ডলী ও কর্মী পরিষদের সদস্যেরা।
দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ঘণ্টা তিনেক চলে বৈঠক। বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এ বছর পৌষ উৎসবের পাশাপাশি পৌষমেলারও আয়োজন করবে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী। তবে তাতে রাজ্য প্রশাসনকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করতে হবে। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ বলেন, “রাজ্য ও জেলা প্রশাসন যদি আমাদের সহযোগিতা করে তবেই এই মেলা আয়োজন করা সম্ভব হবে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ক’দিনের মেলা করা হবে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। ২০১৯ সালে শেষ বার যে পৌষমেলা হয়েছে, সেই একই আঙ্গিকে এ বারও পৌষমেলা করা হবে।’’
শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, “চার বছর পর বিশ্বভারতী আবারও শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে নিয়ে মেলা করায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। দীর্ঘদিন ধরে এই ঐতিহ্যই চলে আসছে। আমরা চাই সে ধারা বজায় থাকুক।” বিশ্বভারতীর এমন সিদ্ধান্তে খুশি ব্যবসায়ীরাও। বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিংহ, কবিগুরু হস্তশিল্প সমিতির সম্পাদক আমিনুল হুদারা জানান, পূর্বপল্লির মেলার মাঠে আবারও পৌষমেলার আয়োজন হওয়ায় আমরা খুশি।
পর পর তিন বছর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত পৌষমেলার সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। এ দিন তিনি বলেন, “বিশ্বভারতীর এই সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমরাও চাই মেলা হোক, সকলে আনন্দ করুক। বিশ্বভারতীই মেলার আয়োজন করুক। এতে জেলা প্রশাসন সব রকম ভাবে সাহায্য করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy