Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Mohammad Bazar

ধর্ষিত নাবালিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার

সোমবার মহম্মদবাজারে, নিজের বাড়িতেই তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২০ ০০:১২
Share: Save:

অস্বাভাবিক মৃত্যু হল গণধর্ষণের শিকার এক আদিবাসী নাবালিকার। সোমবার মহম্মদবাজারে, নিজের বাড়িতেই তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তার পরিবারের দাবি, জামিনে মুক্ত দুই নাবালক অভিযুক্তের হুমকি ফোন পেয়েই ওই নির্যাতিতা আত্মঘাতী হয়েছে। যদিও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ এখনও হয়নি পরিবারের তরফে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে মায়ের শাড়ি জড়ানো অবস্থায় বছর পনেরোর ওই নির্যাতিতার দেহ মিলেছে।

গত ১৭ ডিসেম্বর ওই আদিবাসী নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল তারই প্রেমিক ও সঙ্গীসাথীদের বিরুদ্ধে। ঘটনার তিন দিনের মাথায় নাবালিকার পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগের পরে পরেই অভিযুক্ত প্রেমিক ও তার চার সঙ্গী-সহ মোট পাঁচ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। প্রোটেকশন অব চিলন্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস বা পকসো আইনে মামলা করা হয় ধৃতদের বিরুদ্ধে। সোমবার বিকেলে সিউড়ি জেলা হাসপাতালে মেয়ের দেহের ময়নাতদন্ত করাতে এসে শোকার্ত বাবা অভিযোগ করেন, ‘‘ধৃতদের মধ্যে দু’জন জামিনে ছাড়া পয়েছে। তারাই মেয়ের ফোনে বারবার অভিযোগ তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছিল। সেটা এ দিন সকালেই জেনেছি। ওই কারণেই মেয়েটা মরে গেল! আমরা আবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করব।’’ নাবালিকার বাবা আরও জানান, সোমবারই তাঁর সিউড়ি আদালতে আসার কথা ছিল মেয়েকে নিয়ে। তাই ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। সেখানেই শোনেন, দরজা বন্ধ করে মেয়ে ঝুলে পড়েছে। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, মেয়েটিকে নামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে এলেও বাঁচানো যায়নি।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত নাবালিকার বাবা ও মা মহম্মদবাজারের পাথর শিল্পাঞ্চলের শ্রমিক। গণধর্ষণের ঘটনার দিন বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। নাবালিকা তার তিন ছোট ভাইবোনের সঙ্গে বাড়িতেই ছিল। পরিবারের অভিযোগ ছিল, সেদিন রাতে ভাইবোনেরা ঘুমিয়ে পড়লে ফোন করে নাবালিকাকে ডেকে নিয়ে যায় তার প্রেমিক। তার পরে বাড়ি থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে একটি নির্জন জায়গায় গিয়ে তার উপর চরম যৌন নির্যাতন চালায় প্রেমিক-সহ পাঁচ জন। সেই সময় বাবাকে একবার ফোন করে নাবালিকা জানায় ৫-৬ জন মিল তাকে মারছে। তার পরেই ফোন বন্ধ হয়ে যায়। নির্যাতিতাতে গ্রামের একটি নলকূপের সমানে ফেলে দিয়ে ওই পাঁচ জন চলে যায় বলে অভিযোগ।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, পকসো মামলায় ধৃত কেউ কী ভাবে আদালতে জামিন পেল। সিউড়ি পকসো আদালতে এই মামলার সরকারি আইনজাবী রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ধৃত পাঁচ জনের মধ্যে তিন জন সাবালক, দু’জন নাবালক। সাবালক সকলেই জেলে আছে। সোমবারও তাদের জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে। দুই নাবালক ১৫ জানুয়ারি জামিন পেয়েছে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড থেকে।

পুলিশ জানিয়েছে, নাবালক হলে জামিন হবে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু তারা যদি হুমকি-ফোন করে থাকে নির্যাতিতাকে, সেটা অবশ্যই পুলিশকে জানানো উচিত ছিল। নির্যাতিতার পরিবারের তরফে তা করা হয়নি। জেলার এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘ঘটনার গুরুত্ব বুঝে শুরু থেকেই পুলিশ যথেষ্ট তৎপর ছিল। ঘটনার এক মাসের মধ্যে পুলিশ চার্জশিট জমা গিয়েছে। নিয়মিত কাউন্সেলিং চলেছে ওই মেয়েটির। অভিযুক্তেরা যাতে কঠোর সাজা পায়, সে ব্যাপারেও সক্রিয় ছিল পুলিশ। ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তাও করা হচ্ছিল।’’ তার পরেও কী ভাবে ঘটনাটি ঘটল, সেটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Mohammad Bazar Tribal Minor Girl Rape Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy