পছন্দ: খোয়াইয়ের হাটে বিকিকিনি। শনিবার শান্তিনিকেতনে। নিজস্ব চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে আয়োজিত হচ্ছে না পৌষমেলা। কিন্তু ট্রেন পরিষেবা চালু হতেই পর্যটকদের চেনা ভিড় শান্তিনিকেতনে।
গত কয়েক সপ্তাহে করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে শান্তিনিকেতনের পর্যটন শিল্প। কিন্তু পরিবহণের সমস্যা থাকায় পর্যটকের সংখ্যা খুব একটা বেশি ছিল না। শুক্রবার থেকে হাওড়া ও বোলপুরের মধ্যে চারটি বিশেষ ট্রেন চালু হয়েছে, আর তার পরেই পর্যটকের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে শান্তিনিকেতনে।
শনিবার খোয়াইয়ের সোনাঝুরির হাট ও সপ্তাহান্তের ছুটির সুযোগে বিপুল সংখ্যক পর্যটক এসেছেন শান্তিনিকেতনে। তারই সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মুখে ফিরেছে চেনা হাসি। এ দিন সোনাঝুরি হাটে পর্যটকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রায় মাস দু’য়েক আগে থেকেই হাট বসার ছাড়পত্র মিললেও এতদিন আশানুরূপ লাভের মুখ দেখেননি ব্যবসায়ীরা। এ দিন পর্যটকদের ভিড় মুখে হাসি ফুটিয়েছে তাঁদেরও। হাটের হস্তশিল্প ব্যবসায়ী উমা ঘোষ বলেন, “বছরের এই সময়টায় আমাদের ব্যবসা সবথেকে জমজমাট থাকে। কিন্তু এ বার প্রথমে করোনার জেরে মন্দা এবং তারপর পৌষমেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে উদ্বেগে ছিলাম। তবে আজকের ভিড় দেখে মনে হচ্ছে ট্রেন চালু হওয়ায় আমরা কিছুটা সুফল পাব।’’
ট্রেন চালু হওয়ায় খুশি পর্যটকরাও। এ দিন সকালে বোলপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি ট্রেন থেকে নামা যাত্রী সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ায় এতদিন পর ঘুরতে আসতে পেরে তাঁরা খুশি বলে জানান পর্যটকেরা। কলকাতা থেকে দশ জনের একটি দল এ দিনই বিশেষ ট্রেনে এসে পৌঁছন শান্তিনিকেতনে।
তাঁদের একজন, দমদমের অরিজিৎ মৈত্র বলেন, “প্রতি বছরই শীতের শুরুতেই আমরা শান্তিনিকেতনে ঘুরতে আসি। তবে এ বার যোগাযোগের অসুবিধেয় তা হয়ে ওঠেনি। তাই ট্রেন চলাচল শুরু হতেই আমরা আর দেরি করিনি।’’ কলকাতা থেকে আসা সৌমেন বসু, অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়, পারমিতা ভট্টাচার্যরা বলেন, “প্রতি বছর শীত পড়তেই আমরা শান্তিনিকেতন বেড়াতে চলে আসি। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক না হওয়ায় আসতে পারছিলাম না। শুক্রবার বেশ কিছু স্পেশাল ট্রেন চালু হওয়ায় আর দেরি না করে শান্তিনিকেতন ঘুরতে চলে এলাম।”
দীর্ঘদিন পর বোলপুর শান্তিনিকেতনে অন্যদিনের তুলনায় এ দিন পর্যটক সংখ্যাও বেশি হওয়ায় খুশি টোটো-অটোচালক থেকে শুরু করে সমস্ত ব্যবসায়ীরাও। রতনপল্লি মাঠেও এ দিন বাস দাঁড় করিয়ে একদল পর্যটকের রান্না করার চেনা ছবিও ফিরে এসেছে। তবে, বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাস এবং মিউজিয়াম বন্ধ থাকায় অনেক পর্যটকই বাড়ি ফিরছেন কিছুটা অপূর্ণতাকে সঙ্গী করেই।
পর্যটকদের ভিড় বাড়ায় খুশি টোটোচালক ও হোটেল মালিকরাও। বোলপুর বাইপাসের টোটোচালক শ্রীকান্ত সাহা বলেন, “আমাদের আয়ের মূল উৎস পর্যটকরাই। তবে ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকায় পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম ছিল। আশা করি এ বার আমরাও লাভের মুখ দেখব।” হোটেল মালিকরাও জানিয়েছেন, গত কয়েক মাসে স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে, সেই তুলনায় লাভ হয়নি। এ বার ধীরে ধীরে সুদিন ফিরবে বলেই তাঁদের আশা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy