তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক প্রবীর ঘোষ। — নিজস্ব চিত্র।
দলের টিকিট না পেয়ে পঞ্চায়েত সমিতিতে নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়ে পড়লেন বাঁকুড়ায় তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক প্রবীর ঘোষ। একই সঙ্গে দলের স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। এলাকার তৃণমূল নেতাদের অবশ্য দাবি, প্রার্থী নির্বাচন করেছেন রাজ্য নেতৃত্ব।
বাঁকুড়ার ওন্দার তৃণমূল নেতা প্রবীর ১৯৯৮ সালে ওন্দা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের টিকিটে জিতে সদস্য হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে তাঁকে ওন্দা পঞ্চায়েত সমিতিতে টিকিট দেয় দল। সে বারও তিনি জিতেছিলেন। সম্প্রতি বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক হন তিনি। প্রবীরের বক্তব্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার বহু আগেই প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে দলীয় নেতৃত্বের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশ এমনকি এলাকার ভোটারদের একটা বড় অংশ তাঁকে প্রার্থী হিসাবে চেয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে আবেদন জানায় বলেও প্রবীরের দাবি। তাঁর কথায়, বাঁকুড়ার ওন্দা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে তাঁকে পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে দলীয় প্রার্থী করার আশ্বাসও দিয়েছিল দল। সেই মোতাবেক তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে নিজের মনোনয়নপত্রও জমা করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘মঙ্গলবার দলীয় প্রতীক জমা দেওয়ার শেষ দিনে, একেবারে শেষ সময়ে তাঁকে জানানো হয়, দল অন্য প্রার্থীকে প্রতীক দিচ্ছে। এর পর মনোনয়ন প্রত্যাহার না করে নির্দল প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। দলের জেলা বা রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আমার কোনও ক্ষোভ নেই। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে ছিলাম, আছি এবং থাকব। কিন্তু ওন্দা ব্লকে শুধুমাত্র সিন্ডিকেট রাজ চালানোর উদ্দেশ্যে ব্লক এবং স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশ আমাকে প্রার্থী করতে চায়নি। এটা আমি মন থেকে মেনে নিতে পারিনি। মানুষ চাইলে আমি নির্দল প্রার্থী হিসাবেই জয়ী হব।’’
এ নিয়ে তৃণমূলের ওন্দা ব্লকের সভাপতি উত্তম বিট বলেন, ‘‘দলীয় প্রার্থী বাছাই করেছে রাজ্য নেতৃত্ব। এতে স্থানীয়, ব্লক বা জেলা নেতৃত্বের কোনও হাত নেই। প্রবীর ঘোষ ২০১৬ সালের পর এলাকায় দলীয় কাজে তেমন সক্রিয় ছিলেন না। মানুষ তৃণমূলের প্রতীককে ভালোবাসে। তাই নির্দল প্রার্থী থাকলেও, তাঁর কোনও গুরুত্ব নেই। এখন দল তাঁর বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানাবে তা কার্যকর করা হবে।’’
বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। গেরুয়াশিবিরের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিল্বেশ্বর সিংহ বলেন, ‘‘চুরি, জোচ্চুরি, সিন্ডিকেট, তোলাবাজিতে যুক্ত না থাকলে তৃণমূল কাউকেই টিকিট দেয় না। এটা তার বড় প্রমাণ। চোর-জোচ্চোরদের হারাতে প্রবীর ঘোষের মতো প্রতিবাদী তৃণমূল নেতাদের আমরা স্বাগত জানাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy