Advertisement
০৬ অক্টোবর ২০২৪
Durga Puja 2024

নারী নির্যাতন মুক্ত সমাজের ডাক মণ্ডপে

দশেরবাঁধ সর্বজনীনের মণ্ডপ থেকে প্রতিমা নির্মাণে রয়েছে খুন, ধর্ষণ, অ্যাসিড হামলা, যৌন হেনস্থার মতো নারী নির্যাতনের ঘটনার ছোঁয়া। অন্য দিকে, কাটজুড়িডাঙা ইলেকট্রিক সাবস্টেশন মোড়ের পুজোর থিম ‘উমা হতে চাই না আমি’।

মণ্ডপ ভাবনায় নারী সুরক্ষা। বাঁকুড়ার দশেরবাঁধ সর্বজনীন।

মণ্ডপ ভাবনায় নারী সুরক্ষা। বাঁকুড়ার দশেরবাঁধ সর্বজনীন। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:০৭
Share: Save:

আর জি কর কাণ্ডের আবহে পুজোর মণ্ডপেও উঠে এল নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ। ১৪ অগস্টের রাত দখল থেকে বার বার বিচারের দাবিতে পথে নেমেছে বাঁকুড়া। সেই শহরে দু’টি পুজোর ভাবনায় এ বার নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ। যদিও আর জি করের ঘটনার সঙ্গে তাঁদের ভাবনার যোগ নেই বলেই দাবি উদ্যোক্তাদের।

দশেরবাঁধ সর্বজনীনের মণ্ডপ থেকে প্রতিমা নির্মাণে রয়েছে খুন, ধর্ষণ, অ্যাসিড হামলা, যৌন হেনস্থার মতো নারী নির্যাতনের ঘটনার ছোঁয়া। অন্য দিকে, কাটজুড়িডাঙা ইলেকট্রিক সাবস্টেশন মোড়ের পুজোর থিম ‘উমা হতে চাই না আমি’। সেখানে কম বয়সে ভুল লোকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার পরে পাচার হয়ে যৌনপল্লিতে গিয়ে পড়া মেয়েদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। দু’টি পুজো কমিটিই রাজ্য সরকারের পুজোর অনুদান প্রাপ্ত।

দশেরবাঁধ পুজো কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য অরুণ রজক জানান, গত বছর পুজোর পরেই নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে পুজোর ভাবনা নেন তাঁরা। তখনই মণ্ডপশিল্পী পিন্টু দাসকে বরাত দেওয়া হয়। পিন্টু বলেন, “এই ভাবনা ভাল করে ফুটিয়ে তোলার জন্য এ বার অন্য কোথাও আর কাজ ধরিনি। আমারও একটি ছোট্ট মেয়ে রয়েছে। ওর জন্য সুরক্ষিত সমাজ গড়তে বার্তা দিতেই সময় নিয়ে এখানে কাজ করেছি।’’

পুজো মণ্ডপে ঢোকার মূল দরজাতেই নারী নির্যাতনের নৃশংসতার নানা দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে। সেখানেই জ্বলন্ত এক নারীকে কোলে তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছেন দেবী। মণ্ডপের চারপাশে কোথাও অ্যাসিড হামলার প্রতিবাদে, কোথাও যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে চার লাইনের ছবি-সহ স্লোগান। পুজো কমিটির সভাপতি তথা স্থানীয় ১ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল পুর-প্রতিনিধি দেবাশিস লাহা বলেন, “রামায়ণে রাবন সীতাকে হরণ করে নিয়ে গিয়েছিল। জটায়ু সীতাকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু মুখে পতিত হয়। সে দৃশ্যও তুলে ধরা হয়েছে। নারী নির্যাতন সমাজ থেকে নির্মূল করতে হবে, সেই লক্ষ্যেই আমাদের এই পুজো ভাবনা।’’

কাটজুড়িডাঙা ইলেকট্রিক সাবস্টেশন পুজো কমিটির সভাপতি মধুসূদন রায়, সম্পাদক মিলনকুমার আচার্য জানান, কয়েক বছর আগে কলকাতার একটি পুজোয় ‘উমা
হতে চাই না আমি’ পুজো-ভাবনা তাঁদের নজর কেড়েছিল। দরিদ্র পরিবারের বাবা-মা তাঁদের মেয়েকে অল্প বয়সে টাকার বিনিময়ে বিয়ে দিয়ে দেন। পরে অনেকেরই আর খোঁজ মেলে না। ওই মেয়েগুলি পাচারকারীদের হাত ধরে যৌনপল্লিতে পৌঁছন। সেখান থেকে খোলা আকাশের নীচে ফিরতে চান তারা। মডেলের মাধ্যমে সেটিই তাঁরা তুলে ধরেছেন। তাঁরা বলেন, “আমাদের এই ভাবনা সমাজকে সচেতন করবে বলেই আমরা বিশ্বাসী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE