—প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যে অন্তত ১৫টি জেলায় শাসক দলের জেলা কমিটি পুনর্বিন্যাসের সম্ভাবনা জোরদার হয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের আলোচনায়। সেই তালিকায় কি পুরুলিয়াও আছে? জেলা কমিটির মধ্যে কি সভাপতি বদলের সম্ভাবনাও রয়েছে? দিন যত গড়াচ্ছে তা নিয়ে জোর জল্পনা চলছে পুরুলিয়ায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
তৃণমূলের অন্দরের খবর, লোকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া কেন্দ্রে দলের পরাজয়ের পর থেকেই জেলা সভাপতি বদলের দাবি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তুলতে শুরু করেছেন জেলা নেতৃত্বের একাংশ। লোকসভায় পুরুলিয়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতো বিজেপির জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর কাছে ১৭ হাজার ভোটে পরাজিত হন। সেই হারের দায়িত্ব জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার উপরেই বর্তায়, এই দাবি করে সভাপতি বদলের দাবি জানিয়েছিলেন জেলার ওই নেতারা। সূত্রের দাবি, জেলার শীর্ষ নেতৃত্বের বড় অংশ ও কিছু শাখা সংগঠনের জেলা সভাপতি, দুই বিধায়ক একত্রিত হয়ে আগেই জেলা সভাপতি পদে বদলের দাবি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে জানিয়ে এসেছেন।
সৌমেনের ঘনিষ্ঠ মহলের পাল্টা দাবি ছিল, পাঁচ বছর আগে লোকসভা নির্বাচনে দুই লক্ষাধিক ভোটে বিজেপির কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। সেই আসনে এ বার সৌমেনের দক্ষ নেতৃত্বেই বিজেপির জয়ের ব্যবধান অনেক কমে এসেছে। তার আগে পুরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুরুলিয়ায় তৃণমূলের বিশাল জয় সৌমেনের নেতৃত্বেই এসেছিল। সেই বার্তা সৌমেন ঘনিষ্ঠ মহলও রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে দিয়েছিল।
তবে ‘পারফর্ম্যান্স’ সন্তোষজনক না হলে পদ থাকবে না— দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই বার্তা দেওয়ার পরেই জেলা সভাপতি বদল ও জেলা কমিটির পুনর্বিন্যাসের জল্পনা আরও জল-হাওয়া পেয়েছে।
জেলা তৃণমূলের অন্দরের চর্চা, সভাপতি যদি পরিবর্তন করা হয়, তাহলে ওই পদের দৌড়ে রয়েছেন জেলার জঙ্গলমহলের এক বিধায়ক। ওই বিধায়কের শিবিরের দাবি, অভিষেক নেতৃত্বে তরুণ প্রজন্মকে আনার বিশেষ পক্ষপাতী। সেই প্রেক্ষিতেই জেলা সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন তরুণ প্রজন্মের নেতা সৌমেন। তাই যদি সৌমেনের হাত থেকে দলের সংগঠনের ব্যাটন কাউকে দিতে হয়, তাহলে তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি ওই বিধায়কই উপযুক্ত।
দলের অন্য শিবিরের যুক্তি, লোকসভা নির্বাচনে ওই বিধায়ক নিজের বিধানসভা এলাকাতেই দলীয় প্রার্থীকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাহলে দল তাঁকে সারা জেলার দায়িত্ব কোন যুক্তিতে দেবে?
সূত্রের খবর, জেলা সভাপতির দৌড়ে আছেন জেলা পরিষদের সদস্য এক বর্ষীয়ান নেতাও। দলের অন্য এক অংশ প্রবীণ একা নেতাকেই ফের জেলা সভাপতির দায়িত্বে ফেরানোর পক্ষে সওয়াল করছেন। ওই তালিকায় আছেন জেলার আর এক বিধায়ক, হুড়া ব্লক এলাকার এক নেতাও।
তবে সৌমেনকে সরিয়ে অন্য কাউকে জেলা সভাপতি করা হলে, তিনি সর্বজনগ্রাহ্য হবেন কি না, তা নিয়েও সন্দেহ আছে দলের নেতা-কর্মীদের একাংশের মধ্যে। সৌমেন ঘনিষ্ঠদের যুক্তি, পঞ্চায়েতে নির্বাচনে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই তিনি প্রার্থী হননি। বরং সারা জেলা চষে নির্বাচনী রণকৌশল তৈরি করে দলীয় প্রার্থীদের তিনি জিতিয়ে এনেছেন। জেলায় পিছিয়ে থাকা চার বিধানসভা কেন্দ্রেও লোকসভা ভোটে তৃণমূল এগিয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি একসময়ে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে জীর্ণ এই জেলায় সবাইকে নিয়ে চলার চেষ্টা করে গিয়েছেন সৌমেন। তাই সৌমেনেই এ বারও ভরসা রাখবে শীর্ষ নেতৃত্ব।
তবে জেলা সভাপতি সৌমেন বলছেন, ‘‘দলের জেলা সভাপতি পদে বদল হচ্ছে কি না তা নিয়ে আমি ভাবিত নই। আমরা দলের অনুগত সৈনিক। দল যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy