Advertisement
E-Paper

পাত সাজাতে রেস্তরাঁ-নিভর্রতা বাড়ছে

বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা কলেজ পড়ুয়া অনন্যা রায়ের কথায়, ‘‘দশ রকমের রান্নার অনেক ঝামেলা। বেশির ভাগ ভাই-বোন বাইরে কর্পোরেট চাকরির সঙ্গে যুক্ত। ছুটি কম।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

প্রশান্ত পাল  , তারাশঙ্কর গুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৪:৩৬
Share
Save

পঞ্চব্যঞ্জন-সহযোগে ভাইদের থালা সাজিয়ে দেওয়ার চলে কি পরিবর্তন আসছে? বর্তমান প্রজন্মের দিদি-বোনেরা অবশ্য জানাচ্ছেন, রেস্তরাঁ থেকে খাবার আনিয়ে পাত সাজাতেই তাঁরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। এতে শ্রম এবং সময় দু-ই বাঁচছে। অন্য দিকে, অনেকে এখনও বছরের একটা দিন ভাইদের জন্য ঘেমেনেয়ে রান্নাবান্না করাতেই আনন্দ পান।

বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর শহরের হোটেল ও রেস্তরাঁ মালিকদের বড় অংশ জানাচ্ছেন, এমনিতেই উৎসবের দিনে হোম ডেলিভারিতে খাবার নেওয়ার চাহিদা আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। ভাইফোঁটা উপলক্ষেও অনেকে আগে থেকেইনানা পদের খাবারের অর্ডার দিয়ে রেখেছেন।

বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা কলেজ পড়ুয়া অনন্যা রায়ের কথায়, ‘‘দশ রকমের রান্নার অনেক ঝামেলা। বেশির ভাগ ভাই-বোন বাইরে কর্পোরেট চাকরির সঙ্গে যুক্ত। ছুটি কম। তাই যেটুকু সময় পাব ভাই-বোনেরা মিলে আড্ডা হবে। ভাইদের পছন্দের খাবার অনলাইনে আনাচ্ছি।’’

প্রায়ই একই বক্তব্য সোনামুখীর বধূ তনুশ্রী মণ্ডলের। তিনি বলেন, ‘‘এখন কেউ আর দশ রকমের পদ খেতে চায় না। তাছাড়া রান্না নিয়ে ব্যস্ত থাকলে ভাইদের সঙ্গে মজা করব কখন? তাই হোটেল থেকেই খাবার আনতে ডেলিভারি ম্যানকে বলে রেখেছি।’’

পুরুলিয়া শহরের রথতলার বাসিন্দা সিগ্ধা সরকার ও ঐশী সরকার বাড়িতে রান্নার আয়োজন করছেন। পাশাপাশি রেস্তরাঁতেও কিছু খাবার অর্ডার করেছেন। হুচুকপাড়ার বাসিন্দা ত্রিজিতা দাস বলেন, ‘‘দুপুরে বাড়িতেই রান্না হবে। কিন্তু রাতে রেস্তরাঁয় খেতে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’’

এতে লক্ষ্মীর মুখ দেখছেন রেস্তরাঁ মালিকেরা। পুরুলিয়ার রাঁচী রোডের এক বাঙালি রেস্তরাঁ মালিক শঙ্করীপ্রসাদ ত্রিপাঠি বলেন, ‘‘ভাইফোঁটার ভুরিভোজ থালা নামে বিশেষ থালির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বাসমতি চালের ভাত, ঝুরঝুরে আলুভাজা, মটরশুঁটি দিয়ে সোনামুগের ডাল, শুক্তো, আলুপোস্ত, কচুপাতা চিংড়ি, বাসন্তী পোলাও, ইলিশ সর্ষে ভাপা, খাসির কষা মাংস, বোনলেস লেবু-লঙ্কা মুরগি, খেজুর-আমসত্ত্বের চাটনি, নলেন গুড়ের পায়েস ও গোলাপজাম দেওয়া হবে। অনেক অর্ডার পেয়েছি।’’

পুরুলিয়ার ডিয়ার পার্ক এলাকার একটি রিসর্ট-রেস্তরাঁর ম্যানেজার দেবাশিস পাত্র জানালেন, তাঁরাও ভাইফোঁটার দিনে ও রাতে মূলত বাঙালি খাবারের নানা পদের অর্ডার পেয়েছেন। যা গতবারের চেয়ে বেশি।

তবে শুধু সময় বা পরিশ্রম বাঁচাতেই নয়, কাঁচা আনাজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিও রেস্তরাঁ-মুখী হওয়ার অন্যতম কারণ বলে অনেক গৃহস্থ জানাচ্ছেন।

বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারি কর্মী সাধন মণ্ডল বলেন, ‘‘খাসির মাংস ৭০০ টাকা কেজি, টোম্যাটো ৮০ টাকা কেজি, ফুলকপি ১০০ টাকা কেজি। পেঁয়াজ, আদা, আলু, তেল-মশলার খরচও কম নয়। তার থেকে রেস্তরাঁয়া ১০০-১৫০ টাকায় এক প্লেটের বিরিয়ানি, চিকেনচাপ নিয়ে আসা ভাল।’’

তবে উল্টো পথে হেঁটে বড়জোড়ার মধ্যবয়স্ক এক বধূ পায়েল রায় বলেন, ‘‘দাম যাই হোক।বছরে একটা দিন ভাইকে নিজের হাতে রেঁধে খাওয়াব। সেই ঐতিহ্য বন্ধ করতে পারব না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

purulia bankura

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}