Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

চালু হোক বালির ব্যবসা, আর্জি ডিএমকে

বর্ষাকালে বালি মজুতের ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশিকা মানেননি বালি কারবারিরা— সেই অভিযোগে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে অধিকাংশ লিজহোল্ডার বা লেসিদের বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা করে প্রশাসন।

জমায়েত: বালি ব্যবসা চালুর আর্জি নিয়ে জেলাশাসকের দফতরের সামনে অবস্থান। বুধবার সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

জমায়েত: বালি ব্যবসা চালুর আর্জি নিয়ে জেলাশাসকের দফতরের সামনে অবস্থান। বুধবার সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫০
Share: Save:

জটিলতা কাটল না। তবে বালি কারবারে অচলাবস্থা কাটাতে ইতিবাচক পদক্ষেপ করার আশা দিল প্রশাসন।

বর্ষাকালে বালি মজুতের ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশিকা মানেননি বালি কারবারিরা— সেই অভিযোগে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে অধিকাংশ লিজহোল্ডার বা লেসিদের বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা করে প্রশাসন। সেই থেকে জেলায় বালি কারবার পুরোপুরি বন্ধ। অচলাবস্থা কাটাতে বুধবার একগুচ্ছ দাবি নিয়ে জেলাশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন ওই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত লোকজনেরা। জেলাশাসককে স্মারকলিপি দেয় বীরভূম স্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।

এ দিন বিকেলে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু ও অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) পূর্ণেন্দু মাজির সঙ্গে বালি কারবারিদের বৈঠক হয়। তার পরে জেলাশাসক বলেন, ‘‘বেশ কিছু দাবি ওঁরা জানিয়েছেন। সেগুলি খতিয়ে দেখছি। তবে বিচারাধীন বিষয় হওয়ায়, আদালত যেমন নির্দেশ দেবেন সেই মোতাবেক আমরা কাজ করব।’’ জেলাশাসক আরও জানিয়েছেন, জেলায় মোট ১৩২ জন লেসির মধ্যে মামলা নেই এমন ১৫ জন লিজপ্রাপ্তের মজুত রাখা বালি বিক্রির জন্য

চালান দেওয়া ইতিমধ্যেই শুরু করেছে বীরভূম জেলা প্রশাসন।

সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, বর্ষাকালে (১৫ জুন থেকে ১৫ অক্টোবর) নদী থেকে বালি তোলা নিষিদ্ধ। এই সময় প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে এবং সরকারি নির্দেশ মেনে বালি মজুত করে রাখতে পারেন কারবারিরা। বালি মজুতের সরকারি নির্দেশ মানা হচ্ছে কিনা, তা দেখতে ২৫ জুলাই জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে অভিযান চালায় প্রশাসন। অভিযোগ ছিল, প্রশাসনিক নির্দেশ অগ্রাহ্য করে বালি কারবারিরা পাহাড়-প্রমাণ উঁচু করে বালি মজুত করা হয়েছে। এমন বিচ্যুতি ধরা পড়ার পরেই সংশ্লিষ্ট লেসিদের বিরুদ্ধে বালি চুরির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেফতারি এড়াতে ঘরছাড়া হন অনেক লেসি। আগাম জামিনের জন্যে অনেকে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

জেলা স্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য, সরকারকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে নদী থেকে বালি তোলার অনুমতি মেলে। বর্ষায় বালি মজুতের জন্যও অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। কোটি কোটি টাকার চালানও কাটা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে বিচ্যুতি হয়েছে ঠিক। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিতেই পরে। প্রয়োজনে স্যান্ড ব্লকের লিজ বাতিল করতে পারে। কিন্তু সময় না দিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার প্রায় সব লেসিকে ‘চোর’ তকমা সেঁটে মামলা করে বালি কারবার বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। সামনে পুজো, ৪০ দিন ব্যবসা মার খাওয়ায় বিপাকে পড়েছে বালি কারবারের সঙ্গে যুক্ত হাজার হাজার মানুষ। তাই বাধ্য হয়েই পথে নামতে হয়েছে।

ওই সংগঠনের পক্ষে অরিন্দম সেন এ দিন অভিযোগ করেন, মজুত বালি বিক্রির জন্য আগে ছিল ‘ম্যানুয়াল চালান’। বর্তমানে ই-চালান করা হয়েছে। টাকা জমা করেই বালি কারবারিরা দু’ধরনের চালান কিনেছেন। প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিল, মধ্যবর্তী সময়ে দু’ধরনের চালানের বৈধতা থাকবে। কিন্তু বালি মজুত নিয়ে মামলা করার সময় শুধু মাত্র ই-চালান দেখা হয়েছে। সে জন্যই অতিরিক্ত বালি মজুত দেখানো হয়েছে।

জেলাশাসক জানান, কোথায় বিচ্যুতি ছিল তা দেখানো হয়েছে। তবে ওঁদের দাবি মেনে আগামী দু’দিন প্রত্যেকের ফাইল খুলে মজুতের পরিমাণ ও বিচ্যুতি খতিয়ে দেখা হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE