নানুর ব্লক কার্যালয়ে বিক্ষোভ বাসাপাড়া-সহ লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ ঘিরে বেশ কয়েক দিন ধরে তেতে রয়েছে সন্দেশখালি। এ বার নানুরের থুপসড়া পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান মীরমাখন আলি-সহ বেশ কয়েক জন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে জমি হাতানোর অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার ব্লক অফিসে জমি ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের দাবি, কারও কাছে থেকে নামেমাত্র দামে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছিল চাষের জমি। কাউকে জমি নিয়েও টাকা দেওয়া হয়নি।
নানুরের এক সময়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের প্রাক্তন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খানের বিরুদ্ধে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে সামনে রেখে বাসাপাড়া এলাকায় প্রায় ৩৫ বিঘে জমি ‘জলের দামে’ ও ‘গায়ের জোরে’ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে একাধিকবার সরব হয়েছেন বাসাপাড়া-সহ থুপসড়া পঞ্চায়েতের আরও কিছু এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন তাঁরা। আদালতেও মামলা করেছেন তাঁরা। কেরিম খান ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক। সভাপতি পদে রয়েছেন মীরমাখন আলি।
গত বছর নবজোয়ার কর্মসূচিতে বীরভূমে এসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও কেরিমের বিরুদ্ধে জমি হাতানোর অভিযোগ পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। কেরিমকে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিটও দেননি দলের নেতৃত্ব। কেরিম অবশ্য বারবার দাবি করেছেন, বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করায় তারা মানুষকে ভুল বুঝিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছে।
কেরিম এ কথা বললেও এ দিন জমি হাতানোর অভিযোগকে সামনে রেখেই নানুর ব্লক অফিসে বিক্ষোভ দেখান নিজেদের জমিহারা বলে দাবি করা গ্রামবাসীদের একাংশ। বিক্ষোভের সামনের সারিতে ছিলেন। তাঁদের অনেকের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা ‘চোর চোর’, ‘ছিঃ ছিঃ’ কিংবা ‘কেরিম খানকে ধিক্কার’। কেরিমের পাশাপাশি মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের ছবির নীচেও ‘চোর’ লেখা ছিল। বিক্ষোভকারীদের অন্যতম সইদা বিবি, নাজমিরা বিবিরা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘‘ওই সব জমির উপরে নির্ভর করেই আমাদের সংসার চলত। জমি বেহাত হয়ে যাওয়ায় আমরা বিপন্ন হয়ে পড়েছি।’’ গত বছরও তাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন।
তাঁদের অভিযোগ অস্বীকার করে এ দিন কেরিম ও মীরমাখন বলেন, ‘‘কারও জমি জোর করে দখল কিংবা রেজিস্ট্রি করিয়ে নেওয়া হয়নি। মেলা এবং খেলার মাঠের জন্য জমি চাওয়া হয়েছিল। জমি মালিকেরা স্বেচ্ছায় ন্যায্য দামে জমি বিক্রি করেছেন। এখন কারও ইন্ধনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কারণে উল্টো কথা বলছেন।’’ চন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘ওই ব্যাপারে (জমি বিতর্ক) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেরিম খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। আদালতে মামলা চলছে। তার পরেও কেন বিক্ষোভ হচ্ছে, বলতে পারব না। তবে, যাঁরা ওই সব করছেন, তাঁরা তৃণমূলের কেউ নন।’’ বিডিও (নানুর) সন্দীপ সিংহরায় বলেন, ‘‘বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। তাই কোনও মন্তব্য করব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy